You dont have javascript enabled! Please enable it!
৮-৯-৭২ দৈনিক সংবাদ
হানাদার বাহিনীর দালালী ও অগ্নিসংযোেগ অভিযােগের দায়ে দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কালিগঞ্জ থানার সাবেক ওসি ইউসুফ আলী চৌধুরী ও ওখান কার শান্তি কমিটির সেক্রেটারি সামছুর রহমান ওরফে শাহাজাহান মিয়াকে অগ্নি সংযোগের কাজে ও পাক বাহিনীকে সহায়তা করার দায়ে গতকাল বৃহস্পতিবার আদালত যাবদষ্টাবন কারাদণ্ড দণ্ডিত করেছেন। ঢাকার সেশন জর্জ জনাব আব্দুল হান্নান চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত দালালদের বিচারের জন্য গঠিত এক নম্বর ট্রাইব্যুনাল উক্ত থানার নগর নরসিন্দিপুর গ্রামের জনাব এমদাদ আলী মােল্লা কর্তৃক তার বাড়ীঘর পুড়িয়ে দেবার অভিযােগের ভিত্তিতে আসামীদের উপরােক্ত দণ্ড প্রদান করেছেন। মামলায় মােট ১৬ জনে সাক্ষ্য প্রমাণ বিশ্লেষণ করে ট্রাইব্যুনাল বলিয়াছেন গত বছর ১৬ই জুন প্রায় ১০০০ পাক বাহিনী আসামীদের সহায়তায় বাদীর গ্রাম ঘিরে ফেলে এবং তার বাড়ীর মােট ১৬টি ঘরে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে ফেলে। এতে তার প্রায় তিন লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়। বাদী বলেছেন তিনি আওয়ামীলীগ কর্মী ও তার এলাকায় মুক্তি সংগ্রামের একজন সংগঠক ছিলেন বিধায় ইউসুফ আলী চৌধুরী উক্ত শান্তি কমিটির সেক্রেটারি সাক্ষাতে তাকে নানা রকম ভয় দেখায় এবং তার কাছ থেকে মুক্তির বিনিময়ে ৫০ হাজার টাকা ও আটজন যুবতী মেয়ে দাবী করে।

সাক্ষীগণ বলেছেন আসামীদের সহায়তায় পাকবাহিনী কয়েকজন লােককে হত্যা করে। অনেকের উপর নির্যাতন চালায় এবং কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যায় ও আটকে রাখে। আদালতের মতে মামলার সাক্ষ্য অত্যন্ত নির্ভরযােগ্য। পুলিশ অফিসার আসামী পাকবাহিনীর অনুকুল লাভের জন্য মুক্তি সংগ্রামকে অপেক্ষা করেছেন। এমন যে সৈন্যদের জন্য যুবতী মেয়েদের সংগ্রহের প্রচেষ্টা পর্যন্ত চালিয়েছেন। আসামীদের নিজেদের নির্দেশ বলে দাবী করে ইউসুফ আলী। চৌধুরী বলেন যে তাকে সৈন্য বাহিনী তাদের সাথে যেতে বাধ্য করেছে। শাহাজান। মিয়াকে বাদীর সাথে শক্রতার ফলে মামলায় জড়ানাে হয়েছে বলে মনে করা হয়। খন্দকার মাহবুব হােসেন সরকার পক্ষের এবং সৈয়দ শওকাত হােসেন ও জনাব আব্দুল গণি সরকার আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন।

সূত্রঃ সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ১৯৭১ -প্রত্যয় জসীম

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!