You dont have javascript enabled! Please enable it!

১৫-৭-৭২ দৈনিক পূর্বদেশ খুলনায় দালাল মামলার রায় : পাঁচ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

খুলনা, ১৪ই জুলাই খুলনার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল হত্যা ও দালালীর অভিযােগে পাচ ব্যক্তির প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। জনাব কে, এম, আকবরের নেতৃত্বে গঠিত উক্ত ট্রাইব্যুনাল ১৯৭২ সালের রাষ্ট্র প্রধানের ৮নং নির্দেশের ১১ (এ) অনুচ্ছেদের সাথে গঠিত বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারার ১/৩৪ অনুচ্ছেদের অধীনে আবদুর রশিদ মােল্লা, আবদুল হামিদ শেখ, কায়েম উদ্দিন সরদার, রেজাউল শেখ এবং ইঞ্জিল শেখকে অপরাধী সাব্যস্ত করেন। খুলনা জেলার তোেখাদা কলেজের বি.এ. শেষ বর্ষের ছাত্র মুক্তিযােদ্ধা সরফরাজকে হত্যার দায়ে কাতাঙ্কা হাই স্কুলে অবস্থানকারী তেরােখাদা শিবিরের রাজাকার কমাণ্ডার আবদুর রশিদ মােল্লাসহ অন্যান্য আসামীদের বিচার কার্য অনুষ্ঠিত হয়। মামলার বিবরণে প্রকাশ, মুক্তিযােদ্ধা জনাব সরফরাজ সব সময় পাতলার মুক্তিবাহিনী ক্যাম্পে থাকতেন। ১৯৭১ সালের ১৩ আগস্ট তারিখে সরফরাজ তার পিতার সংগে সাক্ষাতের জন্য গােপনে তেরােখাদা গ্রামে যান। কিন্তু ঐ এলাকারই আবদুল খালেক নামে রাজাকারদের এক গুপ্তচরের কাছে খবর পেয়ে অভিযুক্ত রাজাকাররা সরফরাজকে ধরে ফেলে।

তারা সরফরাজকে বেদম প্রহার করে এবং ঐ রাতেই এক নদীর তীরে দাঁড় করিয়ে তাকে গুলি করে নদীতে ফেলে দেয়। সরফরাজ মারাত্মক আহত অবস্থায় কোন রকমে সতরে নিরাপদ স্থানে পৌঁছেন। পরে তাকে যশাের জেলার কালিয়া থানাধীন বাওয়াইসানা গ্রামে তার এক আত্মীয় বাড়ীতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তিনি ১৫ আগস্ট মারা যান। ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয় নিহত সরফরাজের বুকে অথবা মাথায় গুলি করা হয়নি। সুতরাং ঘটনাস্থলেই তাকে হত্যা করার কোন উদ্দেশ্য আসামীদের ছিল না। কিন্তু হত্যার মত অপরাধ তারা করেছে যা হত্যা বলে গণ্য করা যায় না। রায়ে আরও বলা হয় যে কারণে সরফরাজ মারা গেলেন তা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে অথবা তার যাতে মৃত্যু ঘটে সে জন্যই অনুরূপভাবে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানাে হয়েছে। খুলনার বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর জনাব আবদুল লতিফ খান সরকার পক্ষে এবং এডভােকেট মনসুর আলী আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন।

সূত্র : সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ১৯৭১ -প্রত্যয় জসীম

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!