ভেটখালি ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে রাজাকারদের একটি শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। তাদের অত্যাচারে এলাকার লােকজন ত্যাক্তবিরক্ত; কয়েকবার ওদের উৎখাতের প্রচেষ্টা নেয়া হয়। কিন্তু এসব প্রচেষ্টা তেমন সুপরিকল্পিত না থাকায় কোন কাজ হয়নি বরং ওদের দৌরাত্মটা আরাে বেড়ে যায়। ৭০/৭৫ জন রাজাকার ও ৫/৬ জন পাঞ্জাবীমিলিশিয়া এই ক্যাম্পে থাকত। ধান কেবল ফুলেছে; আশ্বিন মাসের শেষ অথবা কার্তিক মাসের প্রথম সপ্তাহ হবে, কমান্ডার শামসুর রহমান কারিকরের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী মুক্তিবাহিনী। দল ভেটখালি রাজাকার ক্যাম্প দখলের অভিযান চালায়। দীপ্ত শপথে সবাই উজ্জীবিত, যে কোনভাবেই হােক ক্যাম্প দখল করে ওদেরকে চিরতরে উৎখাত করতেই হবে। শামসুর রহমান ছিল অতি শক্ত প্রকৃতির মানুষ। তার সাথে বাছাই করা ফৌজ এলএমজি এন্তাজ। ভাল এলএমজি চালাত তাই এন্তাজের নাম ছিল ‘এলএমজি এন্তাজ’ নিরাপদ বাইন, পরিতােষ, গােকুল, আশাশুনির আবুবকর, আটুলিয়ার আমজাদসহ ২৫/৩০ জন মুক্তিযােদ্ধা। সবার একই কথা, ‘জান দিব তবু মান দিব না। আজ রাজাকারদের একদিন কি মুক্তিবাহিনীর একদিন।’ বেশ ঝুঁকি নিয়ে তারা রাজাকার ক্যাম্পের কাছাকাছি পৌছায়, সবাই পজিশনে গিয়ে শুরু করে গােলাগুলি, রাজাকাররাও জবাব দেয়।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধের দু’শো রণাঙ্গন – মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি সম্পাদিত