You dont have javascript enabled! Please enable it! ভাঙ্গা থানা আক্রমণের পরিকল্পনা - সংগ্রামের নোটবুক
ভাঙ্গা থানা আক্রমণের পরিকল্পনা

মুক্তিফৌজ কমান্ডার আজিজ মােল্লা ভাঙ্গা অবস্থানরত পাকসেনাদের উপর আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ৬ই ডিসেম্বর কাইচাইল ইউনিয়নের সুতারকান্দার শুকুর মােল্লার বাড়িতে এক পরামর্শ সভা ডাকেন। মাঝিকান্দার এফএফ কমান্ডার হামিদ জমাদার, ভাঙ্গার এফএফ কমান্ডার বড় আবু ও তৎকালীন ফরিদপুর সদর মহকুমা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম নুরুন্নবী উক্ত সভায় উপস্থিত হন। সভার সিদ্ধান্ত হল ৮ই ডিসেম্বর সন্ধ্যার মধ্যে ভাঙ্গায় অবস্থানরত পাকহানাদার বাহিনীর ঘাটি আক্রমণ করা হবে। সিদ্ধান্ত ছিল নগরকান্দার অন্যান্য মুক্তিফৌজ ও এফএফ দল এবং ভাঙ্গার অন্যান্য এফএফ কমান্ডার ছােট আবু, ছালাম ও ডিপুটি কমান্ডার আবদুল জব্বার, আবদুল খালেক ও সুবেদার আবদুর রাজ্জাক সিকদারের নেতৃত্বে যত মুক্তিযােদ্ধা ছিল, সবাইকে খবর দিয়ে একযােগে ভাঙ্গা থানার চারিদিক থেকে আক্রমণ করা হবে। কিন্তু ৮ই ডিসেম্বর সম্ভবত পাকসেনা হেড কোয়ার্টারের মতে ভাঙ্গার পাকসেনাদের ঘাটি ফরিদপুর চলে যায়। সুতরাং ভাঙ্গা থানা আর আক্রমণের প্রয়ােজন হয় না। তখন বিজয় উল্লাসে চারদিক থেকে মুক্তিযােদ্ধারা ভাঙ্গা এসে উপস্থিত হয়। নগরকান্দা থানা থেকে কমান্ডার আঃ আজিজ মােল্লাও ভাঙ্গা গিয়ে উপস্থিত হন।

এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মুক্তিযােদ্ধাদের প্রথম কাজ অযথা কারাে উপর যাতে আক্রোশমূলক কোন প্রতিশােধ না নেওয়া হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা। সুতরাং কমান্ডার আজিজ মােল্লা যাকে সবাই তখন মেজর আজিজ মােল্লা বলে সম্বােধন করত, তিনি ভাঙ্গার মুক্তিযােদ্ধা কমান্ডারদের এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে ভাঙ্গা ডাকবাংলায় এক জরুরি সভায় বসেন। সভায় ফরিদপুর সদর মহকুমা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম নুরুন্নবী, এ আর ভূঁইয়া, এডভােকেট আসাদুজ্জামান, ডাঃ হাবিবুর রহমান প্রভৃতি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বড় আবুর প্রস্তাবক্রমে ও সভার সকলের সমর্থনে মহকুমা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী হিসাবে এস এম নূরুন্নবীকে ভাঙ্গার এডমিনিস্ট্রেটর করে একটি প্রশাসনিক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির অন্যান্য সদস্য ছিলেন, সর্বজনাব এ আর ভূইয়া, এডভােকেট আসাদুজ্জামান, ডাঃ হাবিবুর রহমান, আঃ রাজ্জাক সিকদার, বড় আবু, ছােট আবু এবং আঃ জব্বার প্রভৃতি। ( সূত্র ও মুক্তিযু: বৃহত্তর ফরিদপুর, মােঃ সােলায়মান আলী।)

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধের দু’শো রণাঙ্গন – মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি সম্পাদিত