চারগাছ অপারেশন
আমি মনতলা (আগরতলা) থেকে এক কোম্পানী মুক্তিযােদ্ধাকে কসবা, নবীনগর, বাঞ্ছারামপুর এই তিনটি থানা অপারেশন করার জন্য অস্ত্র দিয়ে পাঠালাম। সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে কোনীতে ১৪৫ জন সৈন্য ছিল। কোম্পানী দেড়মাস ধরে উল্লিখিত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন করে। একদিন পাকবাহিনীর একটি দল লঞ্চযােগে চারগাছ এলাকায় আসে এবং দু’দিন সেখানে থাকে। এ সংবাদ পেয়ে মুক্তিযােদ্ধারা ওৎ পেতে থাকে। পাকসেনাদের ঐ লঞ্চটি যখন চাঁদপুরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে তখন মুক্তিযােদ্ধারা লঞ্চের দিকে গুলি করতে আরম্ভ করে। পাকবাহিনী লঞ্চ দুটির গতি ঠিক করতে না পেরে এক যায়গায় আটকিয়ে ফেলে। মুক্তিযােদ্ধাদের আঘাতে পাকসেনাদের অধিকাংশই খতম হয়। কিছু পাকসেনা সাঁতরিয়ে অন্য গ্রামে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ৪/৫ জন সৈন্য এসাইল বােটে করে লঞ্চ থেকে নেমে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে কিন্তু মুক্তিযােদ্ধারা ঐ বােটটিকে গুলি করে ঘায়েল করে। পাকসেনারা প্রায় সবাই খতম হলেও একজন পাকসেনা বােটের মধ্যে লুকিয়ে ছিল। তাকে হাতেনাতে ধরার জন্য একজন মুক্তিফৌজ সাঁতরিয়ে এসাইল বােটের কাছে যেতেই পাকসেনাটি উঠে মুক্তিযােদ্ধাটিকে হত্যা করে। পরে মুক্তিযােদ্ধারা পাকসেনাটিকে হত্যা করতে সমর্থ হয়। দুটি লঞ্চের ভিতর যে সমস্ত পাকসেনা জীবিত ছিল তারা অয়ারলেসে সংবাদ পাঠায় তাদের উদ্ধার করার জন্যে। পরে পাঁচটি লঞ্চভর্তি পাকসেনা আসে তাদের উদ্ধার করার জন্য। | (অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহের ঘটনা) (সূত্র : বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র, অষ্টম খণ্ড।)
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধের দু’শো রণাঙ্গন – মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি সম্পাদিত
ছবি – ফাইল ফটো