বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে কার অবদান নেই বলুন? কেউ রক্ত দিয়ে, কেউ ইজ্জত দিয়ে, কেউ আশ্রয় দিয়ে, কেউ অস্ত্র হাতে তুলে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রেখেছেন। ১৯৭১-এর ১লা মার্চ থেকে চট্টগ্রাম শহর মুক্তির অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছে। চট্টগ্রামের পাহাড়তলী অঞ্চল সেই ‘৬২ সাল থেকে শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলন, ‘৬৮-৬৯-এর গণআন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ‘৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে পাহাড়তলীর অবদান অনন্য। পাহাড়তলী প্রীতিলতার রক্তের উপর বিকশিত হয়েছে। ১৯৬২ সাল থেকে তৎকালীন তেজী ছাত্রনেতা ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীর পরশে এ অঞ্চলে আন্দোলনের জোয়ার উঠেছে। সামরিক শাসন বিরােধী শিক্ষা আন্দোলনে পাহাড়তলী অঞ্চলে যাঁরা ভূমিকা রেখেছিলেন তারা হচ্ছেন, মােঃ ইউনুছ খান, তৈয়বুর রহমান, মুস্তাফিজুর রহমান দুলাল, নানু বাহার, মােঃ শফি, সর্দার সিরাজ প্রমুখ। মেয়েদের নেতৃত্বে ছিলেন মেহেরুন্নেছা আনার, আসমা খাতুন, আবেদা সুলতানা, ফিরােজা বেগম, রুনু, শিরিন, মিনু প্রমুখ। ১৯৬৬, ৬৮, ‘৬৯, ‘৭০ সালে পাহাড়তলী অঞ্চলের ছাত্ররা চট্টগ্রামে আন্দোলনের আগুন জ্বালাতে সাহায্য করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম অবদানকারী হিসেবে বলা যায় সাবের আহমেদ আজগরী, সােহরাওয়ার্দী, ডাঃ মাহফুজুর রহমান, ফাহিম উদ্দিন আহমেদ, গােলাম মর্তুজা, সাফায়েত কাওসার, মালিক হাসান, মফিজুল হক ভূঁইয়া, মােঃ শফি, সালাহ উদ্দিন হায়দার, আব্দুর রাজ্জাক, খায়রুল ইসলাম, কামাল, মতি, হুমায়ুন, খায়রুল ইসলাম, আবুল কাশেম মঞ্জু, আনােয়ার, সফি, রওশন আরা বেগম, মমতাজ, সুফিয়া, রাফিয়া, বেবী, তােফা, লাকী, জুয়েল, লিজা, রােকেয়া, মনছুরুর রহমান, ফয়েজুর রহমান, হেলালী, জাকারিয়া মামুন, আজিজ, খুরশীদ, নাজমুল, বাহার, গাজী মেজবাহ উদ্দিন নানু, ওয়ালিউর রহমান প্রমুখ। এদের ক’জন মহান মুক্তিযুদ্ধে পালন করেন ঐতিহাসিক ভূমিকা।
ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী ভারতে প্রকাশ করেন দেশ বাংলা পত্রিকা। সাবের আহমেদ আজগরী ছিলেন মীরশরাই অঞ্চলের বিএলএফ কমান্ডার এবং তাঁর নেতৃত্বে প্রথম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের পাহাড়ে অস্ত্রের ট্রেনিং শুরু হয়। ডাঃ মাহফুজুর রহমান ছিলেন চট্টগ্রাম শহরের অন্যমত কমান্ডার। ফাহিম উদ্দিন আহমেদ ছিলেন ভারতের ভান্ডুয়া প্রশিক্ষণ শিবিরের প্রশিক্ষক। ফাহিম উদ্দিনসহ ক’জন প্রশিক্ষককে লক্ষ্য করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জেনারেল উবান বলেছিলেন ‘The next Generals of Bangladesh.’ সেই ফাহিম উদ্দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাহাড়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণের মুখ্য ট্রেনিংদাতা ছিলেন। সেদিন ছিল ২০শে রমজান। ‘৭১-এর ভয়ংকর সময়ে পাকবাহিনী শ্রদ্ধা দেখায়নি রমজানের পবিত্রতাকে। সেদিন খুব ভােরে পাঞ্জাবী লেন থেকে ক’জন মুসল্লী বের হয়ে এসেছেন মসজিদ থেকে। সবাই বাসায় ফিরছিলেন। পথেই দেখা একজন অবাঙালির সাথে। সে যেতে যেতে বলল পাহাড়ের পাশে বাঙালিরা চারজন বিহারীকে হত্যা করে ফেলে রেখেছে। এ লােকটির কথার সত্যতা যাচাই করার জন্য এগিয়ে গেলেন মুসল্লীরা। মুসল্লীদের মধ্যে ছিলেন এ কে এম আফছার উদ্দিন, আকবর হােসেন, আব্দুল গফুর, ইয়াজদানী, মােঃ মােতাহেরুর রহমান ও মসজিদের মুয়াজ্জীন। দু’পাহাড়ের খােলাজায়গায় তখন দাঁড়ান ছিল অনেক অবাঙালি। তারা চিৎকার দিয়ে বলছে খতম কর। সবার হাতে অস্ত্র।
উল্লেখিত জনদের দেখে তারা গালমন্দ করতে শুরু করল। কেউ বলছে ইহাছে ভাগাে শালা বাঙালি, লােক, কেউ বলছে, ভাগনে মাত দাও, আবার কেউ বলছে, খতম কর। ভয়ে তারা কোন রকমে পালিয়ে এল পাহাড়তলী পুলিশ ফাঁড়িতে। কিন্তু পুলিশ নানা দিকে নিয়ে গেছে। যারা যেতে চায়নি তাদের জোর করে নিয়েছে। সহজ সরল মানুষ ধোঁকায় পড়ে গিয়েছিল। প্রথম পর্বেই অবাঙালিরা আব্দুল গফুর, শেখ আকবর হােসেন, আকবর শাহ মসজিদের মুয়াজ্জিন, ইফতেখার কন্ট্রাকটর, আলী হােসেন, আলী আজমকে বধ্যভূমিতে জবাই করে হত্যা করে। এছাড়াও তাৎক্ষণিকভাবে যাদের হত্যা করেছে তারা হলেন আলী করিম, মােতাহেরুর রহমানসহ আরাে ক’জনকে। একই দিন অবাঙালিরা পাঞ্জাবী লেন, মাস্টার লেন, দোহাজারী ট্রেনকে ঝাউতলা ষ্টেশনে থামিয়ে প্রায় ৪০০ লােককে পাম্প হাউজের সামনে বধ্যভূমিতে জবাই করে হত্যা করেছে। পাহাড়তলী অঞ্চলে যাদের পাকবাহিনী হত্যা করেছে সেই ক’জন শহীদের তালিকা : নাম ঃ কিভাবে নিহত হয়েছেন তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ—
১। মােঃ ফখরুল ইসলাম, পেশা ও রেলওয়ে ড্রাইভার, ঠিকানা ও মাস্টার লেইন। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ২৬-৩-৭১। সরাসরি পাকিস্তান বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে।
২। রমনী কুমার দাস, পেশা ও জমাদার, ঠিকানা ও হাসপাতাল কলােনী। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ২৭-৪-৭১। অফিস থেকে ফিরে আসেননি।
৩। এলআরখান, পেশা ও এসিওসি পাহাড়তলী। ঠিকানা : সেগুন বাগান, শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ৫-৪-৭১। পাকবাহিনী ও বিহারীরা গুলি করে হত্যা করে পরিবারের কন্যা, ছেলেকেও।
৪। জাহিদ, পেশা ও ছাত্র, ঠিকানা ও সেগুন বাগান। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ৫-৪৭১।
৫৯ মেয়ের নাম সংগ্রহ করা যায়নি।
৬। এম এ চৌধুরী পেশা ও ডিইই কেটজ, ঠিকানা : সেগুন বাগান। শহীদ হওয়ার তারিখ : ৫-৪-৭১। বাসায় ঢুকে বিহারীরা জবাই করে হত্যা করে। | ৭। মােঃ শফি, পেশা ও রেলওয়ের চাকুরিজীবী, ঠিকানা ও সেগুন বাগান। শহীদ। হওয়ার তারিখ ঃ ২৭-৩-৭১।
৮। মােঃ ইউসুফ, পেশা ও রেলওয়ের চাকুরিজীবী। ঠিকানা ঃ টাইগারপাস। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ২৭-৩-৭১। বিহারীরা বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে, লাশ পাওয়া যায়নি।
৯। আবুল কালাম, পেশা ও ছাত্র , ঠিকানা ঃ টাইগারপাস। শহীদ হওয়ার তারিখ : ২৭-৩-৭১। সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
১০। আব্দুল আলীম (মিন্টু) পেশা ও ছাত্র, ঠিকানা ঃ ২২ নং বিল্ডিং টাইগারপাস। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ২৭-৩-৭১। বিহারীরা বাসা থেকে ডেকে নিয়ে জবাই করে, অর্ধ জবাই অবস্থায় ছুটে পালাতে চেষ্ট করে, বিহারীরা আবার ধরে জবাই করে।
১১। আব্দুস সামাদ মিয়া, পেশা ও রেলওয়ের চাকুরিজীবী, ঠিকানা ঃ ঝাউতলা কলােণী। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ২-৪-৭১। সকাল সাড়ে এগারােটার দিকে বিহারী ও পাকসেনারা বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ঝাউতলা ষ্টেশনের নিকট গুলিবিদ্ধ করে।
১২। সৈদয় মাহবুব আলী, পেশী ও রেলওয়ের চাকুরিজীবী, ঠিকানা ও ষ্টেশন কলােনী। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ১৯-৪-৭১। অফিসে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেননি।
১৩। আব্দুস সামাদ মিয়া, পেশা ও টেলিঃ ইন্সপেক্টর, ঠিকানা ও পাহাড়তলী। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ২-৪-৭১
১৪। হাসিনুর রহমান, পেশা ও ফোরম্যান, ঠিকানা ঃ টি পি পি কলােনী। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ১৫-৪-৭১। হাসিনুর এবং নুরুল আমিন ফোরম্যান ক্যাশ অফিস থকে বেতন আনতে যাওয়ার সময় টাইগারপাস নেভী অফিসে জোর করে ঢুকিয়ে বেদম প্রহারে হত্যা করে সি আর বি মােড়ে ফেলে রেখে দেয়।
১৫। নুরুল আমিন, পেশা ও ফোরম্যান, ঠিকানা ঃ সি ডি এ মার্কেট সন্নিকট। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ১৫-৪-৭১। ১৬। মােঃ আব্দুল গফুর, পেশা : রেলওয়ে চাকুরিজীবী, ঠিকানা ঃ ৭৯৬/ বি টি পি পি কলােনী, শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ১৫-১১-৭১।।
১৭। এ বড়ুয়া, পেশা ও রেলওয়ে চাকুরিজীবী, ঠিকানা ঃ মামুভাগিনা মাজার সংলগ্ন পাহাড়ের উপর বাংল। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ১-৪-৭১। বাসায় ঢুকে গুলি করে হত্যা করে। | ১৮। আহমদ শাহ (হারু), পেশা ও ব্যবসায়ী, ঠিকানা ও মাষ্টার লেইন, শহীদ হওয়ার তারিখ : ৭-৪-৭১। সার্কিট হাউজের সামনে সন্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন।
১৯। ফখরুল আলম, পেশা ও রেলওয়ে কর্মচারী, ঠিকানা ঃ ডিজেল সপ, পাহাড়তলী। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ৭-৪-৭১। ২০। মােঃ কদম আলী পেশা ও পাহাড়তলী ওয়ার্কসপ, ঠিকানা ঃ ৪২/এ, উঃ আমবাগান। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ১৭-৫-৭১। কলম্যান সেজে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ফয়েজ লেকে জবাই করে।
২১। মােঃ কাশেম, পেশা ও রেলওয়ের ড্রাইভার, ঠিকানা ঃ ৫০/ বি, উঃ আমবাগান, শহীদ হওয়ার তারিখ : ৩১-৫-৭১। বাসা থেকে নিয়ে যায়, তারপর থেকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
২৩। আমানত আলী খান, পেশা : একাউন্টেন্ট, ঠিকানা ঃ টাইগারপাস কলােনী। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ৩১-৫-৭১।
২৪। দেলােয়ার হােসেন খান, পেশা ও করণীক, ঠিকানা ঃ টাইগারপাস কলােনী। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ৩১-৫-৭১।
২৫। গােফরান আলী, পেশা ও করণীক, ঠিকানা ঃ টাইগারপাস কলােনী। শহীদ হওয়ার তারিখ : ৩১-৫-৭১।
২৬। মােঃ আব্দুল হাই, পেশা : একাউন্টেন্ট, ঠিকানা ঃ ২১/বি, টাইগারপাস রেলওয়ে কলােনী। শহীদ হওয়ার তারিখ : ১০-৫-৭১। সকালে অফিস থেকে ক্যাশ অফিসে গিয়েছিলেন বেতন উত্তোলনের জন্য। সেখান থেকে ৪ জন বিহারী—১.মােঃ মইজুদ্দিন ২. মােহাম্মদ ইসহাক ৩. মােহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ ৪. এস আর আনসারী বেবী টেক্সী করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় আর ফিরে আসেননি।
২৭। শেখ মােঃ আব্দুল আজিজ, পেশা ও রেলওয়ে চাকুরিজীবী, ঠিকানা : টাইগারপাস, শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ৭-৫-৭১। ১০/১২ জন বিহারী একটি মাইক্রোবাসে করে রাত সাড়ে দশটায় বাসায় মুক্তিযােদ্ধা খোঁজার অজুহাতে জোর করে ঢুকে পড়ে মাজেদ আলী ও সৈয়দা লায়লা বেগমকে সবার সামনে জবাই করে। তারপর তারা আগেই বেঁধে রাখা শেখ মােঃ আলী রেজা মাখনকে মাইক্রোবাস যােগে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে হত্যা করে। বাড়ি লুট করার ফাকে ফাকে অন্যান্যরা পালিয়ে গিয়ে লুকাতে সক্ষম হয়।
২৮। শেখ মােঃ আলী রেজা, পেশা :. ছাত্র, ঠিকানা ঃ টাইগারপাস। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ৭-৫-৭১।
২৯। মােঃ মাজেদ আলী, পেশা ও ছাত্র, ঠিকানা ও টাইগারপাস, শহীদ হওয়ার তারিখঃ ৭-৫-৭১।
৩০। মাখন, পেশা ও চাকুরি, ঠিকানা ঃ টাইগারপাস, শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ৭-৫৭১।
৩১। সৈয়দা লায়লা বেগম, পেশা ও ছাত্রী, ঠিকানা ঃ টাইগারপাস, শহীদ হওয়ার তারিখ : ৭-৫-৭১।
৩২। আবু, পেশা ও চাকুরিজীবী, ঠিকানা ঃ আমবাগান রেল গেইট পানের দোকান। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ১৮-৫-৭১। বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
৩৩। মােঃ হাফেজ উল্লা, পেশা পিয়ন, ঠিকানা ঃ ৬৪২/৫ টি, এ ব্রাঞ্চ, আমবাগান, শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ১৮-৫-৭১। | ৩৪। মােঃ সুজা উদ্দিন, পেশা ও সি কে পি ঠিকানা ঃ ৫১৯/এ, আমবাগান। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ২৩-৫-৭১। আকবর শাহ মাজার থেকে ফজরের নামাজ পড়ে বের হলেই পাকবাহিনী আসিয়া একটি মাইক্রোবাসে করে ধরে নিয়ে যায়।
৩৫। মােঃ ইসহাক, পেশা ঃ সি কে পি ঠিকানা এল/৫৮/বি, আমবাগান, শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ১৮-৫-৭১। বাসা থেকে অজ্ঞাত স্থানের উদ্দেশ্যে ধরে নিয়ে যায় আর ফিরে আসেননি।
৩৬। ছাবেদ আলী, পেশা ও রেলওয়ে কর্মচারী, ঠিকানা ঃ এল/৫৫ আমবাগান, শহীদ হওয়ার তারিখ : ১৮-৫-৭১।
৩৭। হামিদুর রহমান, পেশা ও রেলওয়ে কর্মচারী, ঠিকানা : আমবাগান। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ১৮-৫-৭১।
৩৮। বাহার, পেশা ও রেলওয়ে কর্মচারী, ঠিকানা ঃ এল/৩০০-এ, আমবাগান। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ১৮-৫-৭১।
৩৯। মওদুদুর রহমান, পেশা ও ছাত্র, ঠিকানা ঃ আমবাগান, শহীদ হওয়ার তারিখ : ১৮-৫-৭১।
৪০। মােঃ মিয়া চৌধুরী, পেশা ঃ ডি সি ও এস পাহাড়তলী, ঠিকানা ঃ ৭৮০/এ টি পি পি কলােনী। শহীদ হওয়ার তারিখ : জুন ‘৭১। অফিসার কলােনী গেইট থেকে পাকহানাদার বাহিনী ধরে নিয়ে যায়।
৪১। বজল আহমদ, স্থান ঃ আব্দুল হাকিমের বাড়ি, জোলার হাট। ৪২। মােস্তাফিজুর রহমান (লেদু), পেশা ও ফোরম্যান, ঠিকানা ঃ জোলার হাট। ৪৩। আব্দুল মিয়া, পেশা ও চাকুরিজীবী, ঠিকানা জেলার হাট।
৪৪। মােঃ এস এম কামাল উদ্দিন ,ঠিকানা সিডিএ মার্কেট, শহীদ হওয়ার তারিখ ও ৪-৪-৭১। বাসা থেকে ডেকে গুলি করে হত্যা করে।
৪৫। ছালেহ আহমেদ, ঠিকানা : সরাইপাড়া। ৪৬। ইদ্রিস মিয়া, ঠিকানা ঃ লােহার পােল।। ৪৭। হাবিবুর রহমান, ঠিকানা ঃ লােহার পােল। ৪৮। বাদশা মিয়া, ঠিকানা ও লােহার পােল ।। ৪৯। আবুল হােসেন, ঠিকানা : লােহার পােল।
৫০। মােঃ ইসহাক, পেশা ও ছাত্র, ঠিকানা ঃ টাইগারপাস। জোর করে ধরে ট্রেনের ইঞ্জিনে উঠিয়ে নেয়, পরে কুমিরা ষ্টেশনের কাছাকাছি স্থানে গুলি করে হত্যা করে। ৫১। মােঃ আলী, পেশা ও পলিটেকনিক ছাত্র, ঠিকানা : মাষ্টার লেইন। বাসায় জিনিস-পত্র ঠিক আছে কিনা দেখতে এলে বিহারীরা ধরে নিয়ে ব্লেড দিয়ে কেটে কেটে হত্যা করে।
৫২। রওশন আলী খান, পেশা ও রেলওয়ে চাকুরিজীবী, ঠিকানা ঃ টাইগারপাস। বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ট্রেনের নিকট গুলি করে হত্যা করে।
৫৩। এম এ খান, পেশা ও রেলওয়ে চাকুরিজীবী, ঠিকানা : টাইগারপাস।
৫৪। মােঃ ইউসুফ, পেশা ও রেলওয়ে চাকুরিজীবী, ঠিকানা ঃ টাইগারপাস। শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ মে ‘৭১। বাস থেকে ডেকে নিয়ে যায় আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
| ৫৫। আলী আযম (বৃটিশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সৈনিক), পেশা ও রেলওয়ে চাকুরিজীবী, ঠিকানা ঃ ১৪/২ টি টাইগারপাস কলােনী, শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ৮-৫-৭১। স্ত্রী ও দুই ছেলেকে বেঁধে রেখে ঘরের বাইরে জবাই করে হত্যা করে।
৫৬। আব্দুল গফুর, পেশা ও ইঞ্জিনিয়ার অঃ হেড ক্লার্ক, ঠিকানা ঃ টি পি পি কলােনী, শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ২০-১০-৭১। | ৫৭। নিরঞ্জন বিকাশ বড়ুয়া, পেশা ও রেলওয়ে গার্ড, ঠিকানা : এল/৫৭৮/বি, মাষ্টার লেইন, শহীদ হওয়ার তারিখঃ ৫-১২-৭১। অফিসে যাওয়ার পথে পাকহানাদার বাহিনী ধরে নিয়ে যায়। | ৫৮। বুলু, পেশা ও রেলওয়ে স্কুলের ছাত্র, ঠিকানা আমাবাগান কলােনী, শহীদ হওয়ার তারিখ ঃ ৭-৪-৭১। বিহারী ইউনুস বাসার সামনের রেল লাইনে গলা রেখে জবাই করে। ছােট ভাই বাবু কোন প্রকারে বেঁচে যায়।
৫৯। শরীফ সাহেবের কন্যা আরফিনা, ঠিকানা ও আমবাগান। ‘৭১সালে ঈদে মিলাদুন্নবীর রাত্রিতে বিহারীরা হত্যা করে।
৬০। জনাব গােলাম ইয়াজদানী, সহকারী কন্ট্রোলার অব ষ্টোরস, বাংলাদেশ রেলওয়ে, পাহাড়তলী।
৬১। জনাব গােলাম হােসেন চৌধুরী, কন্ট্রোলার অব ষ্টোরস-এর কর্মচারী। ৬২। জনাব আব্দুল খালেক। ৬৩। জনাব আহমদ আলি মােড়ল। ৬৪। জনাব আলি করিম, সি এম ই অফিস, বাংলাদেশ রেলওয়ে। ৬৫। জনাব মােসলেম আলী তালুকদার, বাংলাদেশ একাউন্ট অফিসারের কর্মচারী। ৬৬। জনাব আলী আজম মুন্সী, হেড ক্লার্ক, ডিজেল সপ রেলওয়ে। ৬৭। জনাব আনছার আলী, কর্মচারী। ৬৮। হায়দার আলী, শ্রমিক। ৬৯। জুনাব আলী। ৭০। ফজল মিয়া। ৭১। মােঃ জয়নাল আবেদীন। ৭২। সিরাজ। ৭৩। আলি নওয়াব। ৭৪। সরফত আলি। ৭৫। কাজী মাহবুব ইয়াজদ্যানী, প্রবেশিকা পরীক্ষার্থী। ৭৬। মােঃ ফসিউল আলম। ৭৭। কাজী নজরুল ইসলাম। ৭৮। আলি নওয়াব, শ্রমিক। ৭৯। নূরুল হক। ৮০। আব্দুল মান্নান। ৮১। আব্দুল হামিদ। ৮২। মমতাজ মিয়া। ৮৩। মােঃ আকবর হােসেন, কর্মচারী, বাংলাদেশ। ৮৪। ওজি উল্ল্যাহ, শ্রমিক। ৮৫। কফিল উদ্দিন। ৮৬। আব্দুল মজিদ, ব্যবসায়ী। ৮৭। মােহাম্মদ সফিকুল ইসলাম। ৮৮। মৌঃ নজীর আহমদ। ৮৯। কবির আহম্মদ, শ্রমিক। ৯০। মােঃ নুরুল হক, মােয়াজেম, আবকর শাহ মসজিদ। ৯১। সৈয়দুর রহমান, কন্ট্রাক্টর। ৯২। মাহতারুর রহমান। ৯৩। আব্দুল মান্নান, শ্রমিক। ৯৪। সৈয়দ আমির আলী, বীমা কর্মচারী। ৯৫। আলী হােসেন, শ্রমিক। ৯৬। মােঃ আব্দুল গােফরান। ৯৭। সৈয়দুর রহমান।
৯৮। আব্দুল আজিজ। ৯৯। শামসুল হক। ১০০। আব্দুল করিম। ১০২। জনাব আঃ মতিন, কন্ট্রোলার অব ষ্টোরস (শিপিং), কর্মচারী। ১০৩। জনাব মহরম আলী, শ্রমিক। ১০৪। জনাব মজিবুল হক শিশু।
১০৫। জনাব মােঃ ইছাক, শ্রমিক ১০৬। জনাব আলি হােসেন, ১০৭। জনাব গােফরান মিয়া, ১০৮। জনাব আউল মন্নান, ১০৯। জনাব সেওলাফ আলী, ১১০। জনাব আব্দুল গফুর, ১১১। জনাব আব্দুল সফিক মিয়া, ১১২। জনাব আমিনুল ইসলাম, কন্ট্রাক্টার, বাংলাদেশ রেলওয়ে, ১১৩। জনাব আবুল কাশেম, ব্যবসায়ী, ১১৪। জনাব নােয়ব আলী, পিয়ন, ১১৫। জনাব বাদশা মিয়া, কৃষক, ১১৬। জনাব ও তাঁর নাবালক পুত্র, ১১৭। জনাব সুলতান আলম, ইঞ্জিনিয়ার্স লিঃ কর্মচারী, ১১৮। জনাব মােজাম্মেল হক, ওয়ার্কসপ । (পাহাড়তলী রেলওয়ে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সমিতির প্রকাশিত স্মরণিকা ‘৯১ থেকে প্রাপ্ত)।
১০ই নভেম্বর ‘৭১, ২০শে রমজান বিহারী ও পাকবাহিনীর সদস্যবৃন্দ পাঞ্জাবী লেন ঘেরাও করে ফেলে, তারা দাবী করতে থাকে পাহাড়ের পাদদেশে (বর্তমান চক্ষু প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিপরীত পার্শ্বে) চারজন অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ কে বা কারা ফেলে গেছে। তাদেরকে হত্যা করেছে বাঙালিরা, এই মিথ্যা অজুহাতে নাজিরহাটের ট্রেনে ঝাউতলা রেলওয়ে ষ্টেশনে দাঁড় করিয়ে শত শত বাঙালিকে তারা ধরে নিয়ে ওয়ার্লেস কলােনীর উত্তর দিকে হত্যা করে। সবাইকে তারা হাত চোখ বেঁধে বধ্যভূমিতে নিয়ে যায়। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা যে ভাবে পশু কোরবান দেয়, সেভাবে তাদেরকে মাটিতে ফেলে জবাই করে পেট ফেঁড়ে পাহাড়ের পাদদেশে গর্ত করে মাটিতে পুতে ফেলে। নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে কারাে লাশ সেখান থেকে আনতে দেওয়া হয়নি। সে দিনের গণহত্যার আমরা যে কয়জনের পরিচয় সগ্রহ করতে পেরেছি তাদের সম্পর্কে তথ্য দিলাম, বিভিন্ন তথ্য থেকে আমরা জানতে পেরেছি সে দিন প্রায় ৩ হাজার বাঙালিকে তারা হত্যা করেছে। এই পরিকল্পিত হত্যাকান্ড সম্পর্কে এ পর্যন্ত কোন অনুসন্ধান বা বিচার হয়নি। শহীদের তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের অধিকাংশই ছিল রেলওয়ের চাকুরে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকদোসরদের বিচরণ সবচেয়ে বেশি ছিল রেলওয়েতে। কারণ অবাঙালিরা এ বিভাগে বেশি কাজ করত। অবাঙালিরা খুঁজে খুঁজে পাকবাহিনীকে বাঙালিদের তথ্য সরবরাহ করত। আর সময় সুযােগ মতাে পাকবাহিনী তাদের ধরে নিয়ে হত্যা করত। পাকিস্তান পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের সদর দপ্তর ছিল চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম শহরে রেলওয়ের কর্মচারী ও কর্মকর্তারাই বেশ শহীদ হয়েছেন অবাঙালিদের দ্বারা। অবশ্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বক্ষণ থেকেই রেলওয়ের কর্মচারীবৃন্দ পালন করেছেন ঐতিহাসিক দায়িত্ব। তাদের ক’জন পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধে গৌরবজনক ভূমিকা পালন করেছিলেন। কে সি নন্দী তখন রেলের অডিট বিভাগে কাজ করতেন। শক্ত সমর্থ যুবক। পাকসামরিক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ১লা মার্চের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বন্ধ ঘােষণাকে মেনে নিতে পারেননি। রেলের কর্মচারীদের নিয়ে তারা প্রতিবাদে পথে নামেন। অসহযােগ আন্দোলনের পুরােসময় রেলওয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চল সার্বিকভাবে অসহযােগিতা করেছিলেন।
কাপড়, লুঙ্গিসহ বিভিন্ন ধরনের সাধারণ পােষাক সরবরাহ করেছেন। ৩০শে মার্চ সকাল। থেকে পুরাে লালখান বাজারসহ আশেপাশের এলাকা পাকবাহিনীর দখলে চলে যায়। ২৮শে মার্চ থেকে পাকবাহিনী ও দামপাড়া পুলিশ লাইনের বাঙালি পুলিশদের সাথে লাগাতার যুদ্ধ শুরু হয়। প্রচুর বাঙালি পুলিশ এ প্রতিরােধে শহীদ হন। অবশেষে বাঙালির পুলিশ এলাকাবাসীর সহযােগিতায় পালিয়ে যায় ।(দামপাড়া পুলিশ লাইন দখলের পর পাকবাহিনীর নজর পড়ে লালখান বাজার এলাকার দিকে। তারা সংবাদ সংগ্রহ করে জানতে পেরেছে লালখান বাজার এলাকার জনসাধারণ বাঙালি পুলিশদের সহযােগিতা দিয়েছে। পাকবাহিনী লালখান বাজার এলাকার মানুষের দিকে শুকুনী দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। তারা ২৯শে মার্চ থেকেই চালিয়েছে ইত্যাকান্ড। ৩০শে মার্চ সকালে লালখান বাজার এলাকায় প্রচারিত হয় হাই লেভেল রােডের মুখে ওয়াটার ওয়ার্কস (ওয়াসা)-এর সামনে কলে পানি দিচ্ছে। এ সংবাদ পাওয়ার পর অনেকেই পানি আনতে রওয়ানা হন। কারণ পানি সমস্যা তখন তীব্র। এক ফোঁটা পানি তখন কোথাও নেই। পানির সংবাদ শুনে অনেকের সাথে কলসি নিয়ে পানি আনতে গেল আলী ইমামের বাসার কাজের ছেলে রাজু। প্রায় আধা ঘন্টা হয়ে গেল ছেলেটি ফিরে এল না।অবশেষে কাজী আলী ইমাম নিজেই বেরিয়ে গেলেন ছেলেটির খোঁজে। তখন সকাল ৭টা। তার সাথে গেলেন ভায়রা ভাই ডাঃ এ এম গােলাম মােস্তফা। কাজী আলী ইমাম ও ডাঃ গােলাম মােস্তফাকে পাকবাহিনী অনেকের সাথে গুলি করে হত্যা করে। লাশগুলাে তখন পড়েছিল রাস্তার মাথায়।
উন্মাদের মতাে ছুটে গিয়ে মনি ইমাম, রওশন মােস্তফা মিলে মৃতদেহ কোনরকমে ঘরের আঙ্গিনায় তুলে আনেন। তারপর বৃদ্ধা মায়ের পরণের সাদা ধুতি দিয়ে লাশ দুটিকে ঢেকে দেন। এক সময় দা, ছুরি, খুন্তি, চামচ দিয়ে ঘরের সামনে দেড় হাতের মতাে গর্ত করে দু’জনকে চিরদিনের মতাে শুইয়ে দেন। আলী ইমাম ও ডাঃ গােলাম মােস্তফা ছিলেন স্বাধীনতার অগ্রবর্তী সূর্য সৈনি। সমাজ সেবামূলক কাজ করেই তাঁরা তৃপ্তি পেতেন। পরবর্তীতে মনি ইমামের সন্তানেরা মুক্তিযুদ্ধে চলে যান। রওশন মােস্তফা তার এক বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছিলেন। ৪০ দিন পর শহীদদের রুহের জন্য বেলা বিস্কুট দিয়ে ফাতেহা দিয়েছিলেন। এ দুই শহীদের সাথে আরাে মারা যান নাসির, দোকান কর্মচারী, রুস্তম আলী, ডাঃ আলী নুর, প্রফেসর দোহা, সৗদেক হাসান বাবুজি, আবুল ফজল, সরওয়ার, ওয়াহাব, মেম্বার হোসেন ও তার দুই ছেলে ইসহাকসহ আরাে অনেক। সাঁদেক হাসান বাবুজি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৩য় বর্ষের ছাত্র। সে ছিল খুব ভাল দাবা খেলােয়াড়। তার সাথে শহীদ হন তার পিতা ও চাচা। অর্থাৎ লালখান বাজার অঞ্চলে সর্বমােট ২০১৭ জন মানুষ পাকবাহিনীর হাতে শহীদ হন। বাবুজির নাম কেউ বলেছেন সাদেক হাসান আবার কেউ বলেছেন সৈয়দ শাহাদাত হােসেন বড় বাবুজি।
লালখান বাজার হত্যাকান্ড থেকে অলৌকিক ভাবে বেঁচে যান এ কে এম আনােয়ার হােসেন। তখন তিনি লালখান বাজার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পাকবাহিনী অনেকের সাথে তাকে ধরে নিয়ে যায় তাদের ক্যাম্পে। তারপর সবাইকে হত্যা করে। জনাব আনােয়ার নিজেকে মৃতের মতাে করে অসংখ্য লাশের মধ্যে পড়ে থাকেন। রাত গভীর হলে তিনি কৌশলে চলে আসেন পুলিশের মসজিদে। সেখানে আলমিরার পেছনে লুকিয়ে থাকেন। পরে প্রবেশ করেন একটি বড় ড্রেনে। সেই ড্রেনের পথ ধরে তিনি আসেন নিরাপদ স্থানে। তার মুখ থেকে মৃত্যুর রূপের কথা শুনলে দেহ-মন চঞ্চল হয়ে ওঠে। তার সাথে আরাে একজন আলৌকিকভাবে বেঁচে যান। তিনি সৈয়দ মােবারক হােসেন। তাকে রক্ষা করে ফাতেমী সাহেব নামক একজন বিহারী। লালখান বাজার হত্যাকান্ডের ইতিহাস লিখতে হলে প্রয়ােজন গবেষণার। তথ্য পেয়েছি শেষ সময়ে। তবে তথ্যের জন্য আরাে আন্তরিক সহযােগিতা পেলে ব্যাপকভাবে লেখা সম্ভব হত। তাই বাধ্য হয়ে খুব সংক্ষেপে এ লেখাটি লিখেছি।
(সূত্র : রণাঙ্গনে সূর্য সৈনিক, সাখাওয়াত হােসেন মজনু ।)
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধের দু’শো রণাঙ্গন – মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি সম্পাদিত