যশাের সেনানিবাস ও অন্যান্য স্থানে ১ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের তৎপরতা
সাক্ষাৎকার ও ক্যাপ্টেন হাফিজউদ্দীন আহমদ, বীরবিক্রম ২৫শে মার্চ ঢাকাসহ প্রদেশের অন্যান্য জায়গায় কি ঘটছিল তা আমার সম্পূর্ণ অজানা ছিল। সেখানে কোন লােকজনের সঙ্গেও আমার সাক্ষাৎ হয়নি। কেননা ঐ এলাকাটি ছিল জঙ্গলের মধ্যে। এমন কি ২৭শে মার্চ মেজর (বর্তমানে ব্রিগেডিয়াম-ডেপুটি চীফ অব স্টাফ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী) জিয়াউর রহমান সাহেবের স্বাধীনতা ঘােষণা করার কথাও আমি জানতে পারিনি। আমার সৈন্যরা অনেকে জানতে পারলেও আমাকে কিছু জানায়নি। ২৯শে মার্চ ১২টার সময় অয়ারলেস-এর মাধ্যমে পাকিস্তানী ১০৭নং ব্রিগেডের ব্রিগেডিয়ার আব্দুর রহিম দূররানী আমাদেরকে যশােরে পৌছতে বলায় আমরা সঙ্গে সঙ্গে জগদীশপুর থেকে যশােরের অভিমুখে রওনা দিই। যশাের ক্যান্টনমেন্টে রাত ১২টায় পৌঁছি। যদিও আমাদের ব্যাটালিয়ানে মােট ৬৫০/৮০০ সৈন্য সাধারণত থাকে, কিন্তু অনেক সৈন্য ছুটিতে থাকায় আমাদের ব্যাটালিয়ানের সৈন্য সংখ্যা তখন ছিল ৪০০ জন। (ব্যাটালিয়ানের পশ্চিম পাকিস্তানে যাওয়ার কথা ছিল এবং সে জন্যই প্রায় অর্ধেক ছুটিতে ছিল)। ৩০শে মার্চ, ১৯৭১ তারিখে ব্রিগেডিয়ার দুররানী আমাদের ব্যাটালিয়ন অফিসে যান এবং কমান্ডিং অফিসার লেঃ কর্নেল জলিলকে বলেন যে, আমাদের ব্যাটালিয়নকে নিরস্ত্র করা হল এবং আমাদের অস্ত্রশস্ত্র জমা দিতে বলেন। তারপর ব্রিগেডিয়ার দূররানী আমাদের ব্যাটালিয়ন অস্ত্রাগারে অস্ত্রশস্ত্র জমা করে চাবিগুলাে নিজ হাতে নিয়ে নেন। মুহূর্তের মধ্যে এ খবর আমাদের ব্যাটালিয়নের সৈন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
ব্রিগেডিয়ার দূররানী চলে যাবার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সৈন্যরা তৎক্ষণাৎ ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি দিতে দিতে অস্ত্রাগারের তালা ভেঙ্গে অস্ত্রশস্ত্র যার যার হাতে নিয়ে নেয় এবং আমরা চতুর্দিকে আমাদের পজিশন নিই। আমাদের বিদ্রোহের খবর পাওয়ার সাথে সাথে পাকিস্তানী দুই ব্যাটালিয়ন (২৫-বেলুচ রেজিমেন্ট এবং ২২তম ফ্রন্টিয়ার ফোর্স) সৈন্য আমাদেরকে তিন দিক দিয়ে আক্রমণ করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমাদের জোয়ানরা অত্যন্ত দৃঢ়তা ও দক্ষতার সাথে তাদের আক্রমণকে প্রতিহত করে। এ সময় কমান্ডিং অফিসার লেঃ কর্নেল জলিল আমাদের নেতৃত্ব দিতে অস্বীকার করেন এবং অফিসে বসে থাকেন। তখন আমি আমার ব্যাটালিয়ানের নেতৃত্ব নিই এবং পাঞ্জাবীদের আক্রমণকে প্রতিহত করার প্রস্তুতি নিই এবং সেভাবে সৈন্যদের পূনর্গঠিত করি। সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট অনােয়ার হােসেনও আমার সঙ্গে বিদ্রোহে যােগদান করে।
এভাবে সকাল আটটা থেকে বিকেল দুটা পর্যন্ত পাঞ্জাবীরা আমাদের উপর বার বার আক্রমণ করে, কিন্তু প্রত্যেক বারই আমরা তাদেই আক্রমণকে প্রতিহত করি এবং তাদের আক্রমণ ব্যর্থ করতে সক্ষম হই। পাকিস্তানীরা পূর্ব থেকেই আমাদের উপর আক্রমণাত্মক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়েছিল, কেননা তারা মর্টার আক্রমণ করে এবং তা আমাদের ব্যাটালিয়নের উপরই করে। যেহেতু,পূর্ব পরিকল্পনা নিয়ে পাকিস্তানীরা আমাদের উপর আক্রমণ করে, সেহেতু তাদের সঙ্গে আমরা বেশিক্ষণ যুদ্ধ চালাতে পারব না মনে করে আমি আমার ব্যাটালিয়ন নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেরিয়ে পড়ায় সিদ্ধান্ত নিলাম। পাকিস্তানী সৈন্যরা আমাদেরকে উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ দিক দিয়ে আক্রমণ করেছিল। পশ্চিম দিক দিয়ে আক্রমণ না করলেও পশ্চিমের খােলা মাঠে মাঝে মাঝে অবিরাম বৃষ্টির মতাে গুলি করছিল। আমরা পশ্চাত দিক দিয়েই ক্যান্টমেন্ট থেকে বের হবার সিদ্ধান্ত নিলাম। পশ্চিম দিক দিয়ে কভারিং ফাইটের সাহায্যে বের হবার সময় ছােট ছােট দলে বিভক্ত হই এবং চৌগাছায় একত্রিত হই (চৌগাছা যশাের ক্যান্টনমেন্ট থেকে ১০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে)। ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হবার সময় আমি আমার কমান্ডিং অফিসার লেঃ কর্নেল জলিলকে আমাদের সঙ্গে বিদ্রোহ করার জন্য অনুরােধ করি। কিন্তু তিনি মমাটেই রাজী হননি। যশাের ক্যান্টনমেন্টে যুদ্ধের সময় সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট আনােয়ার হােসেন শহীদ হন। তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন। তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করেন।
সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট আনােয়ারই প্রথম অফিসার যিনি যুদ্ধে শহীদ হন। তাছাড়া এ যুদ্ধে আমার ৪০ জন সৈন্য শহীদ হন। পাকিস্তানী সৈন্যও প্রায় ৪০ জন নিহত হয়। চৌগাছায় একত্রিত হবার পর আমরা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলি। এসময় আমি একমাত্র অফিসার ছিলাম। দশজন জুনিয়র কমিশন্ড অফিসারসহ আমার সাথে প্রায় ২২৫ জন সৈন্য ছিল। ৩০শে মার্চ, ১৯৭১ : এইদিন রাতে আমি জনসাধারণের মারফতই প্রথম জানতে পারলাম যে, মেজর জিয়াউর রহমান সাহেব চট্টগ্রাম থেকে বিদ্রোহ ঘােষণা করেছেন এবং যুদ্ধের জন্য সমস্ত বাঙালি সৈন্যদের আহ্বান করেছেন। কয়েকজন সাংবাদিকও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের নিকট জানতে পারলাম সারা বাঙলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছে এবং ইস্টবেঙ্গলরেজিমেন্ট ও ইপিআর বাহিনীর সৈন্য ও অফিসাররা পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছে। এ খবর পাবার পর আমার এবং আমার সৈন্যদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ দেখা দেয় এবং মনােবল অত্যন্ত দৃঢ় হয়। ৩১শে মার্চ, ১৯৭১: এই দিন সকালে আমার ব্যাটালিয়নের সমস্ত সৈন্যদের একত্রিত করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং মুক্তি সংগ্রাম সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করলাম। তাদের উদ্দেশ্য করে সংক্ষিপ্ত ভাষণে জানালাম যে, বাঙলাদেশে স্বাধীনতার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়েছে। স্ব-ইচ্ছায় যে বা যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মবিসর্জন দিতে প্রস্তুত শুধু তারাই আমার ব্যাটালিয়নে থাকতে পারবে। এবং আরও বললাম, যদি কারাে যুদ্ধ করার ইচ্ছা না থাকে তবে সে কেটে পড়তে পারে। আমার বক্তব্য শুনে। প্রত্যেক জোয়ানের মনে নতুন করে উদ্দীপনা দেখা দেয়। তারা সবাই দেশের জন্য আত্মবিসর্জন দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় এবং শপথ গ্রহণ করে। চৌগাছায় আমার ও আমার ব্যাটালিয়নের যুদ্ধ করার মতাে কোন গােলাবারুদ ছিল। আমাদের সঙ্গে যে সমস্ত গােলাবারুদ ছিল তা যশাের ক্যান্টনমেন্টের যুদ্ধেই প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া সকলেরই একটা করে পােশাক ছিল। খাওয়া-দাওয়ারও অসুবিধা দেখা দেয়। মােটকথা, বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হই। কিন্তু ছাত্র ও জনসাধারণের সক্রিয় সাহায্যে আমাদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা হয়।
২রা এপ্রিল ও চৌগাছা থেকে সলুয়া নামক গ্রামে নায়েক সুবেদার এবি সিদ্দিকের কমাণ্ডে এক কোম্পানী সৈন্য পাঠাই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য। চৌগাছা তখন আমার হেডকোয়ার্টার। এখান থেকে যশাের ক্যান্টমেন্টের পশ্চিম ও উত্তর দিকের গ্রামগুলােতে পেট্রোলিং শুরু করি। হাবিলদার আবুল হাসেম (টি-জে) এবং হাবিলদার মােহাম্মদ ইব্রাহীমের নেতৃত্বে যশাের ক্যান্টনমেন্ট থেকে প্রায় ১ মাইল পশ্চিমে খিতিবদিয়া নামক গ্রামে এ্যামবুশ পার্টি পাঠাই। হাবিলদার আবুল হাসেম ও হাবিলদার ইব্রাহীম একটি পাকিস্তানী পেট্টল পার্টিকে এ্যামবুশ করে। এতে ৩ জন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয় এবং ৮জন গুরুতরভাবে আহত হয়। ইতিমধ্যে ৭ই এপ্রিল খবর পেলাম যে, মেজর ওসমান চৌধুরী (বর্তমান লেঃ কর্নেল) চুয়াডাঙ্গায় তার ইপিআর বাহিনী নিয়ে মুক্তিসংগ্রামে যােগদান করেছেন। ঐদিন আমি একটা জীপ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় মেজর ওসমান চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে যাই। তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার নিকট কিছু চাইনীজ এমুনিশন, এক্সপ্লোসিভ, কয়েকটি জীপ এবং কয়েকটি বিকয়েললেস রাইফেল নিয়ে চৌগাছায় ফিরে আসি। ১০ই এপ্রিল, ১৯৭১ ঃ নায়েক সুবেদার আহমেদউল্লাহর নেতৃত্বে কয়েকজন সৈন্যকে পাঠালাম ছােট হায়বতপুর গ্রামের ব্রীজ ধ্বংস করার জন্য। ব্রীজটি যশাের, ঝিনাইদহ বড় রাস্তায় যশাের ক্যান্টনমেন্ট থেকে ৫ মাইল দূরে অবস্থিত ছিল। ভাের তিনটের সময় নায়েক সুবেদার আহমেদউল্লাহ উক্ত ব্রীজ উড়িয়ে দেয়। ব্রীজটি ভাঙ্গার ফলে এবং ক্যান্টনমেন্টের চতুর্দিক আমার ব্যাটালিয়ন সৈন্যদের পেট্রলিং এর দরুন পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সৈন্যরা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে কিছু দিনের জন্য ভয়ে বের হতে পারেনি।
১১ই এপ্রিল, ১৯৭১ : সিপাই ড্রাইভার কালা মিয়াকে পাঠাই কোটচাদপুর থানার কয়েকটি জীপ ও ট্রাক সংগ্রহ করে আনতে। কালা মিয়া কোটচাদপুর যাবার পথে খবর পায় যে, পাকিস্তানসেনাবাহিনীর একটা কনভয় কালিগঞ্জের অগ্রসর হচ্ছে। উক্ত খবর পাবার পর কালা মিয়া আশেপাশের গ্রাম থেকে কয়েকজন (দশজন) মুজাহিদকে নিয়ে কালিগঞ্জের এক মাইল দূরে এ্যামবুশ করে। উক্ত এ্যামবুশে ৩টা সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয় এবং দশজন পাকিস্তানী সৈন্যও নিহত হয়। কালামিয়া একটা হ্যান্ড গ্রেনেড নিয়ে যখন একটা গাড়ির দিকে ছুঁড়তে যায় তখন তার বুকে পাঞ্জাবীদের বুলেট বিদ্ধ হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে শহীদ হয়। ১৪ই এপ্রিল, ১৯৭১। ইতিমধ্যে পাকিস্তানসেনাবহিনী সৈন্যরা বেনাপােলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, এ খবর পেয়ে ১৪ই এপ্রিল আমি আমার ব্যাটালিয়ন চৌগাছা থেকে তুলে নিয়ে বেনাপােলের ৩ মাইল পূর্বে কাগজপুকুর গ্রামে হেডকোয়ার্টার স্থাপন করি এবং যশাের-বেনাপােলাের রাস্তার দু’ধারে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিই। এই সময় ইপিআর বাহিনীর দুটো কোম্পানী যােগদান করে। আমার সৈন্যসংখ্যা প্রায় ৫৫০ জনে দাঁড়ায়। এসময় শত্রুর শক্ত ঘাঁটি ছিল নাভারনে। (নাভারন বেনাপােল থেকে ১২/১৩ মাইল পূর্ব দিকে।) আমি শত্রুর গতিবিধি লক্ষ্য করার জন্য নাভারন এলাকায় পেট্রলিং শুরু করি।
২১শে এপ্রিল, ১৯৭১ঃ ঐদিন ভাের আড়াইটার সময় আমি নিজে ২০ জন সৈন্য নিয়ে নাভারন মূল ঘাটিতে পাকিস্তানী সৈন্যদের উপর রেইড করি। আমার রেইডে ১০জন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয় এবং ১৫ জন আহত হয়। উক্ত রেইডে আমরা মর্টার ব্যবহার করি। আমার ৪জন সৈন্য আহত হয়। উক্ত রেইডে যথেষ্ট কষ্ট সহ্য করতে হয়। কেননা কাঁদামাটি এবং খালবিল পেরিয়ে আমাদের রেইড করতে হয়েছিল। ২৩শে এপ্রিল, ১৯৭১ (কাগজপুকুরের যুদ্ধ) : ২৩শে এপ্রিলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দু’ব্যাটালিয়ন সৈন্য কাগজপুকুর গ্রামে আমাদের মূল ঘাঁটির উপর আক্রমণ করে। তারা আর্টলারীর সাহায্যও নেয়। এখানে দীর্ঘ ছয় ঘন্টা তুমুল যুদ্ধ চলে। আমি আমার সৈন্যদেরকে নিয়ে পরে বেনাপােলে কাস্টম কলােনী ও চেকপােস্ট এলাকায় বিকল্প প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিতে বলি। কাগজপুকুরের এ যুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর প্রায় ৫০ জন সৈন্য নিহত হয় ও অনেক আহত হয়। আমার ১৫জন সৈন্য শহীদ হয়। ইপিআর বাহিনীর (বিডিআর) নায়েক সুবেদার মজিবুল হক এ যুদ্ধে শহীদ হন। অনেক বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করায় বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম’ উপাধি প্রদান করেন। এর পরবর্তী পনের দিন ধরে শত্রুপক্ষ বেনাপােল কলােনী ও চেকপােস্ট এলাকা দখল করার জন্য বহুবার আক্রমণ করে। কিন্তু প্রত্যেকবারই তাদের আক্রমণের পাল্টা জবাব দিই এবং প্রতিহত করি। উক্ত পনের দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন যুদ্ধে পাকিস্তানসেনাবাহিনীর প্রায় ১০০জন সৈন্য নিহত হয়। এই আক্রমণের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বেনাপােল তারা দখল করে সেখানে পাকিস্তানী পতাকা উত্তোলন করবে। কিন্তু তাঁদের সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এবং বাংলাদেশের পতাকাই উড়তে থাকে। উপরন্ত এ এলাকা তারা কখনও দখল করতে পারেনি। বেনাপােলের যুদ্ধে আমার ১০জন সৈন্য শহীদ হন। এ সংঘর্ষে হাবিলদার আব্দুল হাই, হাবিলদার আবুল হাশেম (টিজে), হাবিলদার মােহাম্মদ ইব্রাহীম, ল্যান্স নায়েক ইউসুফ আলী, ল্যান্স নায়েক মুজিবুর রহমান, সিপাই আব্দুল মান্নান অভূতপূর্ব দক্ষতা ও গ্রামে এ্যামবুশ করে হাবিলদার ফয়েজ আহমদ পাকিস্তানসেনাবাহিনীর ১৫জন সৈন্যকে নিহত করে। (সূত্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র, নবম খণ্ড)
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধের দু’শো রণাঙ্গন – মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি সম্পাদিত