পঃ বঙ্গে হানাহানি বাঙলাদেশের সংগ্রামের ক্ষতি করছে। অবিলম্বে তা বন্ধ করার জন্য রাজেশ্বর রাও-এর আবেদন
(স্টাফ রিপাের্টার)
কলকাতা, ১৫ জুন- বাঙলাদেশের সংগ্রাম যে গণতন্ত্র, ধর্ম-নিরপেক্ষতা ও এই উপ-মাহদেশের জনগণের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববন্ধনের ভিত্তি সৃষ্টি করেছে, তাকে বিজয়ী করা আমাদের জাতীয় কর্তব্য। বাঙলাদেশের মানুষের সংগ্রাম যদি পরাজিত হয়, তাহলে যে সাম্প্রদায়িকতার অশুভ শক্তি সুযােগের অপেক্ষায় ওৎ পেতে রয়েছে, তারাই মাথা তুলে দাঁড়াবে এবং আমাদের দেশের বামপন্থী গণতান্ত্রিক শক্তি পর্যদস্ত হয়ে যাবে।
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শ্রী রাজেশ্বর রাও আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে উপরােক্ত মর্মে হুঁশিয়ার জানান। পশ্চিমবঙ্গে পারস্পরিক হানাহানি ও খুনােখুনি বাঙলাদেশের সংগ্রামের যে কী প্রচণ্ড ক্ষতি করছে তা উপলব্ধি করে অবিলম্বে এই হানাহানির অবসান ঘটানাের জন্য তিনি এই রাজ্যের সমস্ত বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক পার্টির কাছে আহ্বান জানান।
শ্রীরাও অবিলম্বে বাঙলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দেবার জন্য ভারত সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, এর ফলে ঐ দেশের মুক্তি-সংগ্রামী ও জনগণের মনােবল বাড়বে এবং অন্যান্য দেশ কর্তৃক বাঙলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দানের পথ প্রশস্ত হবে।
বাংলাদেশ-এর পরিস্থিতি থেকে উদ্ভূত শরণার্থী সমস্যাকে ভারতের জাতীয় সমস্যা বলে ঘােষণা করে তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, ওড়িশা সরকার শরণার্থীদের তাদের রাজ্যে নিতে অস্বীকার করেছে। এই ধরণের অস্বীকৃতি জানাবার অধিকার কোনও রাজ্যের নেই এবং ভারত সরকারের উচিত প্রতিটি রাজ্যকে এই সমস্যার দায়ভাগ বহনে বাধ্য করা। সাংবাদিক সম্মেলনে এক বিবৃতি প্রসঙ্গে তিনি উপরােক্ত মন্তব্য করেন।
সূত্র: কালান্তর, ১৬.৬.১৯৭১