You dont have javascript enabled! Please enable it!

হোগলপাতিয়া যুদ্ধ (কালকিনি, মাদারীপুর)

হোগলপাতিয়া যুদ্ধ (কালকিনি, মাদারীপুর) সংঘটিত হয় ৫ই ডিসেম্বর। রাজাকার ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সংঘটিত এ-যুদ্ধে ২ জন সাধারণ মানুষ শহীদ ও একজন গুরুতর আহত হন।
ঘটনার দিন ভোরে রাজাকার কমান্ডার মজিবর সরদারের নেতৃত্বে ইদ্রিস হাওলাদার, সেকেন্দার ক্বারি, হাবিবুর রহমান হাফেজ, আবদুল হক বেপারী, নুর উদ্দিন হাওলাদার, সিরাজুল হক মোল্লা সন্তাল গ্রামের ফকির বাড়িতে হামলা করে। বাড়িতে কিছু মুক্তিযোদ্ধার অবস্থানের খবর পেয়ে তারা -আক্রমণ করে। রাজাকাররা প্রথমে গুলি না করে দরজার নিচ দিয়ে ঘরের মধ্যে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। ঘরে কোনো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, তবে গ্রেনেড বিস্ফোরণে হাবিব ফকির নামে একজন নিহত হন। তার পরিবারের অন্য একজন সদস্য গ্রেনেডের স্প্রিন্টারে গুরুতর আহত হন। আহতাবস্থায় রাজাকাররা তাকে ধরে নদীর পাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এ বাড়ি থেকে জবেদ ফকির নামে একজনকে আটক ও শারীরিক নির্যাতন করে। গ্রেনেড বিস্ফোরণের প্রচণ্ড আওয়াজ এবং হঠাৎ গুলির শব্দে ভীত-সন্তস্ত্র গ্রামবাসী প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ স্থানের দিকে পালিয়ে যায়।
তখন মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল মুরবির চরে মহিউদ্দিন সরদারের বাড়িতে ছিল। খবর পেয়ে তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। রাজাকাররা তখন মাদারীপুরে ফিরে যাবার জন্য খাসেরহাটের দিকে রওনা দিয়েছে। এনায়েতপুর ক্যাম্পে আব্দুর রহিম কমান্ডারের কাছে খবর পাঠিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে এম্বুশ করেন। বিকেল ৩টার দিকে রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছাকাছি আসে। তাদের কেউ-কেউ নদীর পাড় দিয়ে হেঁটে আসছিল, অন্যরা ছিল নৌকায়। কিন্তু বিপত্তি ঘটে একজন মুক্তিযোদ্ধার কারণে। অসতর্কতায় তাঁর রাইফেল থেকে মিস ফায়ার হয়। এতে রাজাকাররা সতর্ক হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের দিকে গুলিবর্ষণ শুরু করে। তাদের ফায়ারিংয়ের চাপে মুক্তিযোদ্ধারা পজিশন ছেড়ে উঠে যেতে বাধ্য হন। হোগলপাতিয়া গ্রামের এস্কেন্দার তালুকদারের মাথার খুলি রাজাকারদের গুলিতে উড়ে যায়। নিজ বাড়িতে নামাজরত অবস্থায় অহেদ মোল্লার পায়ে গুলি লাগে। রাজাকাররা মাদ্রা হয়ে মাদারীপুর চলে যায়। যাবার পথে সোনা মিয়া আকনকে গুরুতর আহত করে। রাইফেলের বাঁটের আঘাতে তার চারটি দাঁত ভেঙ্গে যায়। [বেনজীর আহম্মদ টিপু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!