হোসেনপুর সিও অফিস রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (কিশোরগঞ্জ)
হোসেনপুর সিও অফিস রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (কিশোরগঞ্জ) পরিচালিত হয় ২৯শে নভেম্বর। এতে শতাধিক রাজাকার নিহত হয়।
পাকুন্দিয়ার চরাঞ্চল ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অভয়াশ্রম। এখান থেকে কেউই রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেয়নি। তাই রাজাকাররা ক্ষিপ্ত হয়ে এখানে অভিযান চালিয়ে চরের লোকজনকে হত্যা করে খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্রে ভাসিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে। এ সংবাদ পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা হোসেনপুর সিও অফিস রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেন। এতে নেতৃত্ব দেন মফিজ কমান্ডার (জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন), আবু তাহের কমান্ডার (জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন) ও হযরত আলী কমান্ডার (জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন)। এঁদের নেতৃত্বে রতন (এগার সিন্ধুর, পাকুন্দিয়া), মুরশিদ উদ্দিন (চরকাওনা), শামছ উদ্দিন ভূঞা (চরপুমদি), রফিকুল ইসলাম (নিরাহারগাতী), শামছ উদ্দিন (চরফরাদি), তাজুল (চরফরাদি), মঞ্জুরুল হক (চর জামাইল), মফিজ উদ্দিন (চর জামাইল), তাঁর দুই পুত্র জালাল উদ্দিন ও সিরাজ উদ্দিন, আমির খসরু (চর জামাইল), লাল মিয়া (চর জামাইল), জামাল উদ্দিন (চর জামাইল), আ. রহিম (ধুলজুরি), এমদাদুল হক (ধনকুড়া), আব্দুল মোতালিব (দ্বীপেশ্বর), মফিজ উদ্দিন (চর বিশ্বনাথপুর), নূর মিয়া (হোসেনপুর বাজার), নরেশ (হোসেনপুর বাজার), আজিম উদ্দিন (দানাপাটুলী ইউনিয়ন, পুলিশ সদস্য)-সহ ৫১ জন মুক্তিযোদ্ধা অপারেশনে অংশ নেন।
এগার সিন্ধুরের রতন খুবই দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি চরম সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে এলএমজি তাক করে রাজাকার ক্যাম্পের একেবারে সম্মুখে গিয়ে ‘হ্যান্ডস আপ’ বলেন। কিন্তু রাজাকাররা আত্মসমর্পণ না করে গুলি ছোড়ে। রতনসহ অন্য মুক্তিযোদ্ধারাও গুলি ছোড়েন। এতে ঘটনাস্থলে ৮-৯ জন রাজাকার নিহত হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণে টিকতে না পেরে ১১৭ জন রাজাকার আত্মসমর্পণ করে। তন্মধ্যে ১১ জন ছিল পুলিশ। আত্মসমর্পণকারী রাজাকারদের সারিবদ্ধ অবস্থায় চরকাওনায় নিয়ে হত্যা করে ব্রহ্মপুত্রের জলে ভাসিয়ে দেয়া হয়। এ অপারেশনে মফিজ উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। [শাহ্ মো. আফতাব উদ্দিন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড