You dont have javascript enabled! Please enable it!

হাসনাবাদ বাজার যুদ্ধ (ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর)

হাসনাবাদ বাজার যুদ্ধ (ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর) সংঘটিত হয় ২৮শে আগস্ট। এতে ৪৫ জন পাকসেনা নিহত ও বহু আহত হয়।
২৭শে আগস্ট সুবেদার আবদুল হক (মতলব) তাঁর প্লাটুন নিয়ে হাসনাবাদ ঠাকুর বাড়িতে অবস্থান নেন। দুপুর বেলা আবুল হোসেন সিপাহি (বিডিআর) এবং শাহজাহান (ফরিদগঞ্জ, উভারামপুর) ওপি (আউট পোস্ট) ডিউটিরত ছিলেন। আবুল হোসেন তাঁর সহযোগীকে পজিশনে রেখে একটি ছইওয়ালা নৌকাকে চার্জ করতে হাসনাবাদের সামনে চৌমুহনী কাঠের পুল পর্যন্ত এগিয়ে যান। নৌকার মাঝি ছিল রাজাকার। আবুল হোসেনকে আসতে দেখে সে নৌকায় অবস্থানরত পাকসেনাদের বলে দেয়। সঙ্গে-সঙ্গে পাকসেনারা আবুল হোসেনের শরীর ঝাঁঝরা করে দ্রুত চিতমীর দিকে পালিয়ে যায়। আবুল হোসেনের মৃত্যুর খবর চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। রাতে এডভোকেট আবু জাফর মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন তাঁর লাশ ফরিদগঞ্জ থানার লোহাগাড়া গ্রামে দাফনের ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশ সরকার পরে তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত করে।
আবুল হোসেনের মৃত্যুর বদলা নিতে ঐ রাতেই জহিরুল হক পাঠান ও বি এম কলিমউল্যাহ ভূঁইয়া অধীনস্থ সকল প্লাটুন কমান্ডারকে নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন এবং রাতেই কলিমউল্যাহ ভূঁইয়া ২-৩ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে – পাকবাহিনীর এক কুখ্যাত দালালকে ধরে নিয়ে আসেন। তাকে হত্যা করে মাথা নিচু করে পানচাইল রাস্তার ওপর ঝুলিয়ে রাখেন। পাকবাহিনী ও রাজাকার-রা এর প্রতিশোধ নেবে ভেবে পরদিন খুব ভোরেই ব্যাপক এরিয়া কভার করে মুক্তিযোদ্ধারা প্রস্তুত হয়ে থাকেন। ভূঁইয়া ও পাঠান হাসনাবাদ বাজারের মাঝখানে খালপাড়ে উঁচু জায়গায় অবস্থান নেন। পাকবাহিনী ঠিকই নৌকায় ও হেঁটে হাসনাবাদে আসে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের আওতার মধ্যে এলে মুক্তিযোদ্ধারা প্রচণ্ডভাবে আক্রমণ করেন। এ-যুদ্ধে ৪৫ জন পাকসেনা নিহত ও বহু আহত হয়। [দেলোয়ার হোসেন খান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!