হিন্নাইপাড়া গণহত্যা (কালিহাতী, টাঙ্গাইল)
হিন্নাইপাড়া গণহত্যা (কালিহাতী, টাঙ্গাইল) সংঘটিত হয় ১১ই ডিসেম্বর। হিন্নাইপাড়া গ্রামটি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা ইউনিয়নের অন্তর্গত। কালিহাতী থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং টাঙ্গাইল জেলা সদর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার উত্তরে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পুংলি ব্রিজের পূর্বপাশে গ্রামটির অবস্থান। গ্রামটির পাশে সহদেবপুর ইউনিয়নের চামুরিয়া ও মান্দুরিয়া নামক স্থানে ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের প্রথম দিকে ভারতের ছত্রীসেনারা অবতরণ করেন। ১১ই ডিসেম্বর পাকবাহিনী ঢাকা প্রত্যাবর্তনের পথে মুক্তিযোদ্ধাদের ধাওয়া খেয়ে হিন্নাইপাড়া গ্রামে ঢুকে পড়ে এবং কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। সে-সময় তারা এ গ্রামের ১৩ জন লোককে গুলি করে হত্যা করে। এ গণহত্যায় শহীদরা হলেন- হাওয়া বেগম (স্বামী আবদুল কাদের), মাজেদা খাতুন (পিতা আবদুল কাদের), ডালিমন বেগম (স্বামী নাদের আলী), কদবানু (পিতা নাদের আলী), লাল খাতুন (স্বামী জবেদ আলী), সাফা বেগম (স্বামী দারোগ আলী), দুখুনি বেগম (স্বামী মামুদ আলী), সাজেদা খাতুন (পিতা মামুদ আলী), হামেলা বেগম (পিতা মকরম আলী), খতে বেগম (পিতা রিয়াজ উদ্দিন), রহিজ উদ্দিন (পিতা কলিম উদ্দিন), পিয়ার আলী মণ্ডল (পিতা মজর আলী মণ্ডল) এবং বাবর আলী (পিতা আজগর আলী)। দুখুনি বেগম তার চাচা দারোগ আলীর বাড়িতে এসে গণহত্যার শিকার হন। একই সঙ্গে তার কন্যা সাজেদা খাতুনও হত্যার শিকার হন। বাবর আলীকে ফসলের ক্ষেতে গুলি করে হত্যা করে এবং রহিজ উদ্দিন ও পিয়ার আলী মণ্ডলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পুংলি ব্রিজের কাছে গুলি করে হত্যা করে। সেদিন পাকবাহিনীর গুলিতে আহত হন রহিমন বেগম (স্বামী সেকান্দর আলী), আবদুল গণি (পিতা উজির মণ্ডল) এবং ঠাণ্ডু মণ্ডল (পিতা আবদুল কাদের)। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড