হেমুগ্রাম যুদ্ধ (জৈন্তাপুর, সিলেট)
হেমুগ্রাম যুদ্ধ (জৈন্তাপুর, সিলেট) সংঘটিত হয় নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে। এতে কয়েকজন হানাদার নিহত হয় এবং বাকিরা পালিয়ে যায়। তাদের বেশকিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আসে। অপরপক্ষে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ১০ জন আহত হন।
সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম হেমুগ্রাম। গ্রামটি সিলেটের তেলসমৃদ্ধ হরিপুর এলাকায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় হেমুগ্রাম ৫নং সেক্টরের ডাউকি সাব-সেক্টরের অধীনে ছিল। পাকিস্তানি বাহিনী এখানে একটি শক্তিশালী ক্যাম্প স্থাপন করেছিল। এখানে কয়েকবার মুক্তিযোদ্ধারা অপারেশন পরিচালনা করে সফলতা লাভ করতে পারেননি। তাই নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে ভারতীয় কর্নেল ভি এন রাওয়ের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী অপারেশনের পরিকল্পনা করা হয়। ৫নং সেক্টর কমান্ডার লে. কর্নেল মীর শওকত আলীর পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন দরবস্ত থেকে মুক্তিবাহিনী যাত্রা শুরু করে। জয়ন্ত কুমার সেন নামে একজন তাঁদের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করেন। সড়ক ছেড়ে গ্রামে প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধারা অতি গোপনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালান। সঙ্গে- সঙ্গে হানাদার বাহিনীও পাল্টা আক্রমণ চালায়। উভয় পক্ষ আর্টিলারি, বোমা ইত্যাদি ব্যবহার করে। প্রায় ২ ঘণ্টা যুদ্ধের পর পাকিস্তানি সৈন্যরা পালিয়ে যায়। পেছনে রেখে যায় বেশকিছু মৃতদেহ। এর মধ্যে ৬ জন পাকিস্তানি সৈন্য, ৫ জন সিএফ এবং ৬ জন রাজাকারের লাশ পাওয়া যায়। হানাদারদের বেশকিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। এ-যুদ্ধে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ১০ জন আহত হন। [তপন পালিত]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড