You dont have javascript enabled! Please enable it!

হারতা বাজার গণহত্যা (উজিরপুর, বরিশাল)

হারতা বাজার গণহত্যা (উজিরপুর, বরিশাল) সংঘটিত হয় ৫ই সেপ্টেম্বর। এতে ১৫ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন। উজিরপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিমি দূরে সন্ধা নদীর তীরে হারতা ইউনিয়ন অবস্থিত। ইউনিয়নটির জনসংখ্যার শতকরা ৯০ ভাগ হিন্দু। হারতা বাজারটি অনেক আগে থেকেই একটি সমৃদ্ধিশালী স্থান হিসেবে পরিচিত। হাটের দিনে দূর-দূরান্ত থেকে সহস্রাধিক মানুষের সমাগম ঘটে। হারতা ইউনিয়নের রাজাকাররা খুবই সক্রিয় এবং শক্তিশালী ছিল। স্থানীয় রাজাকার হালিম মৌলভী, সাদেমন হাওলাদার, কেরামত, হেমায়েত উদ্দিন প্রমুখের আমন্ত্রণ এবং দেখানো পথে পাকিস্তানি বাহিনী হারতা বাজার গণহত্যা সংঘটিত করে। ৫ই সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় তিনদিক থেকে হানাদাররা হারতা বাজারে আক্রমণ করে গণহত্যা, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ চালায়। তারা একটি গানবোট ও একটি লঞ্চে করে মিরেরহাটের ঢুকিরকান্দা ও অপর একটি গানবোটে করে স্বরূপকাঠীর উত্তর পাশের নান্দুহার খাল দিয়ে এসে শেরে বাংলা বাজার এবং আরেকটি গানেবোটে করে নথারকান্দি দিয়ে হারতা বাজারের দক্ষিণ পাশে এসে অবস্থান নেয়। তারা বাজারের কাছে শেল নিক্ষেপ করে, নদীর পাশের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে এবং বাজারে প্রবেশ করে দোকানদার ও বাইরে থেকে বাজার করতে আসা ১৭ জনকে আটক করে। তাদেরকে অনিল ডাক্তারের ঘরের সামনে হাঁটু সমান পানির মধ্যে দাঁড় করিয়ে একত্রে বেঁধে গুলি করে। গুলিতে ১৫ জন শহীদ হন এবং ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে বেঁচে যান। গণহত্যার পর এলাকার কেউ ভয়ে লাশ নিতে আসেনি। ফলে লাশগুলো সন্ধ্যা নদীতে ভেসে যায়। এ গণহত্যায় শহীদ ৯ জনের পরিচয় জানা যায়। তারা হলেন— রাজেন হাওলাদার (৩২) (কালবিলা), উমেশ রায় (৫০) (পিতা প্রসন্ন রায়, হারতা), ভদ্র কান্ত ওঝা (৩৫) (হারতা), বিষ্ণু বাড়ৈ (৪০) (পিতা বিনয় কৃষ্ণ বাড়ৈ, হারতা), সিদ্ধি ভাবক (৪৩) (পিতা বনমালী ভাবক, হারতা), নেপাল ভাবক (৪০) (পিতা বনমালী ভাবক, হারতা), রামচরণ মল্লিক (৫০) (পিতা হরিপদ মল্লিক, হারতা), নারায়ণ শীল (৫০) (কালবিলা) ও সুরেন করাতি (৪০) (সঞ্জিত করাতি, কালবিলা)। [মনিরুজ্জামান শাহীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!