হানজত আলীর মসজিদ গণহত্যা (ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ)
হানজত আলীর মসজিদ গণহত্যা (ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ) সংঘটিত হয় ২৭শে মার্চ দুপুরে। এদিন পাকিস্তানি বাহিনী নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা উপজেলার পশ্চিম মাসদাইরে মণ্ডলবাড়ির হানজত আলীর মসজিদের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে গণহত্যা চালায়। এতে ৬ জন মানুষ নিহত হয়।
স্থানীয় অবাঙালিদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি সেনারা মাসদাইরে প্রবেশ করে। মাসদাইরে ঢুকতেই রাস্তার পাশে প্রথম বাড়িটি পাকিস্তান কমার্শিয়াল ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. শরিয়তুল্লাহর। অত্র এলাকায় প্রবেশ করার সময় কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা প্রতিরোধের মুখে গুলিবিদ্ধ হলে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে শরিয়তুল্লাহর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ২৫শে মার্চ রাতে ঢাকায় পাকিস্তানি সেনাদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় মো. শরিয়তুল্লাহ বুঝতে পারেন যে, পাকিস্তানি সেনারা নারায়ণগঞ্জেও আক্রমণ চালাবে এবং সেক্ষেত্রে তারা এ পথই বেছে নেবে। তাই পাকিস্তানি সেনারা ২৭শে মার্চ নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করলে শরিয়তউল্লাহ নিরাপদ ভেবে সপরিবারে মণ্ডলবাড়িতে আশ্রয় নেন। পাকসেনারা মাসদাইর এলাকায় হানা দিলে তিনি স্ত্রী-সন্তানদের মণ্ডলবাড়ি থেকে নিয়ে বাড়ির পেছনে হানজত আলীর মসজিদে (হানজইদ্যার মসজিদ) আশ্রয় নেন। এ মসজিদে এলাকার আরো কয়েকটি পরিবারও আশ্রয় নিয়েছিল। মসজিদে শরিয়তুল্লাহসহ ৬ জন পুরুষ অবস্থান করছিলেন। তাদের সবাইকে পাকিস্তানি সেনারা টেনে-হিঁচড়ে সেখান থেকে বের করে মসজিদের ঢালুতে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে। হানজত আলীর মসজিদ গণহত্যায় নিহতরা হলেন- মো. শরিয়তুল্লাহ, জিন্নাহ আলী, ফটিক চান, ফকির মিয়া, মো. জিন্না ও সাচ্চু মিয়া। [রীতা ভৌমিক]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড