You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক হাবিবুর রহমান - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক হাবিবুর রহমান

হাবিবুর রহমান, বীর প্রতীক (১৯৫৩-১৯৭১) স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে যোগদানকারী শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৫৩ সালে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার শেরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মেহের আলী ও মাতার নাম রাহেলা বেগম।
হাবিবুর রহমান ছাত্রাবস্থাতেই বৈষম্য ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্বিচার গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হলে তিনি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার বাড়াগাংদিয়া হাইস্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন এবং প্রতিরোধযুদ্ধে অংশগ্রহণ শেষে অধিকতর প্রশিক্ষণের জন্য তিনি ভারতে যান। পুরো এপ্রিল মাস জুড়ে ভারতের বিহারের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তিনি অস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে ৮নং সেক্টরের অধীন শিকারপুর সাব-সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ক্যাপ্টেন তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সাব-সেক্টর কমান্ডার এবং আজিজুল গ্রুপ কমান্ডার ছিলেন। হবিবুর রহমান অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়ে একাধিক অপারেশনে সাফল্য অর্জন করেন। তিনি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর, মিরপুর ও গাঙনী থানার বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন।
অকুতোভয় হাবিবুর রহমানের একমাত্র লক্ষ্য ছিল দেশকে শত্রুমুক্ত করা। সেই প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে সর্বদা তিনি শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধে অগ্রভাগে থাকতেন। তিনি ২৬শে নভেম্বর দৌলতপুর থানার শেরপুরে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধে আকস্মিকভাবে শত্রুবাহিনীর গুলির আঘাতে তিনি শাহাদত বরণ করেন।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর সেনানী হাবিবুর রহমান তাঁর মহান আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘বীর প্রতীক’ (মরণোত্তর) খেতাবে ভূষিত হন। তিনি ছিলেন অকৃতদার। [মো. ওসমান গনী]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড