You dont have javascript enabled! Please enable it! হাটকৃষ্ণপুর হত্যাকাণ্ড (সদরপুর, ফরিদপুর) - সংগ্রামের নোটবুক

হাটকৃষ্ণপুর হত্যাকাণ্ড (সদরপুর, ফরিদপুর)

হাটকৃষ্ণপুর হত্যাকাণ্ড (সদরপুর, ফরিদপুর) সংঘটিত হয় স্থানীয় ও বিহারি রাজাকারদের সহায়তায় হানাদার পাকবাহিনী দ্বারা। এ হত্যাকাণ্ডে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৬ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়। এদিন বাজারের দোকানপাট ও মানুষের ঘরবাড়ি লুট করা হয়। একই দিন হানাদাররা আটরশিতে হত্যাকাণ্ড ও লুটপাট চালায় এবং হিন্দুদের ফেলে যাওয়া সম্পত্তি দখল করে নেয়।
ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার হাটকৃষ্ণপুর বাজারে হানা দিয়ে পাকিস্তানি হানাদাররা ৬ নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। তখন সদরপুরে পাকবাহিনীর কোনো ক্যাম্প ছিল না। এ উপজেলাধীন আটরশিতে রাজাকারদের ক্যাম্প ছিল। এ ক্যাম্পের পৃষ্ঠপোষক ছিল কনভেনশন মুসলিম লীগের নেতা ও প্রাক্তন এমএলএ আদেলউদ্দিন হাওলাদার ও শাহাবুদ্দিন খান। ক্যাম্পে বিহারি রাজাকাররাও ছিল। সে-সময় সদরপুরের হিন্দুদের তালিকা করা হয়েছিল। সে- তালিকা অনুযায়ী ফরিদপুর থেকে আসা বিহারি রাজাকারসহ আটরশি ক্যাম্পের রাজাকার বাহিনী এপ্রিল-মে মাসে শাহাবুদ্দিন খানের নেতৃত্বে বাণিজ্যকেন্দ্র হাটকৃষ্ণপুর বাজার এবং বিভিন্ন ঘরবাড়ি থেকে কাপড়, মনোহারী দ্রব্য, আসবাবপত্র, বাসনপত্র, সোনা ও নগদ টাকাসহ নানা জিনিস লুটপাট করে। এদিন তারা যে ৬ জনকে গুলি করে হত্যা করে, তাদের মধ্যে ৫ জন ব্যবসায়ী এবং একজন ছাত্র।
হাটকৃষ্ণপুর হত্যাকাণ্ডে নিহতরা হলেন- হরিপদ সাহা (পিতা ব্রজমোহন সাহা), গোপদি সাহা (পিতা প্রাণকৃষ্ণ সাহা), ননীগোপাল সাহা (পিতা হলধর সাহা), মণিলাল শীল (পিতা ঢাউরি শীল), সুবর্ণ মিত্র ও মিহির মিত্র (পিতা সুবর্ণ মিত্র; ছাত্র)। ঘটনার পর এ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাই দেশে ত্যাগ করে। আটরশি ক্যাম্পের রাজাকাররা আটরশির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিষ্ণুকুমার বনিসহ কয়েকজনকে হত্যা করে। সদরপুর, আটরশি, বাইশরশি, হাটকৃষ্ণপুর ইত্যাতি গ্রামে ফেলে যাওয়া হিন্দুদের সম্পত্তি তখন আত্মসাৎ করা হয়। [আবু সাঈদ খান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড