হাজরাবাড়ি অপারেশন (মেলান্দহ, জামালপুর)
হাজরাবাড়ি অপারেশন (মেলান্দহ, জামালপুর) পরিচালিত হয় আগস্ট মাসের দিকে। পাকবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার ও আলবদর বাহিনী হাজরাবাড়ি বাজারে এ অপারেশন চালায়। তারা ব্যবসায়ী আ. রফিক (পিতা তমেজ উদ্দিন পণ্ডিত), বদিউজ্জামান (কড়ইচূড়া), গেদা (হাজরাবাড়ি), মকবুল হোসেন (হাজরাবাড়ি), মাহবুবুর রহমান ওরফে খোকা চেয়ারম্যান (কড়ইচূড়া), আ. ছামাদ মাস্টার (কড়ইচূড়া), রইচ উদ্দিন (কড়ইচূড়া), ফয়েজ উদ্দিন (কড়ইচূড়া), মজিবুর রহমান (কড়ইচূড়া) ও আলাউদ্দিন (চর আদিয়ার পাড়া, বাসুরিয়া)- এর দোকান জ্বালিয়ে দেয়। হাজরাবাড়ি বাজারে মজিবুর রহমানের বড় কাপড়ের দোকান ছিল। ঢালুয়াবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল ঐ দোকানের কর্মচারী ছিল। দরিদ্র ঘরের সন্তান বিধায় সে ঐ কাপড়ের দোকানে কাজ করে লেখাপড়ার খরচ চালাত। পাকবাহিনী তাকে গুলি করে হত্যা করে। মাদারগঞ্জের দীঘলকান্দী গ্রামের ডা. নজরুল ইসলামের হাজরাবাড়িতে ঔষধের দোকান ছিল। পাকবাহিনী তাঁকে সেখান থেকে ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে। তারা হাজরাবাড়িতে এক গৃহবধূর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। হাজরাবাড়িতে পাকবাহিনীর এ অপারেশনের সহযোগী ছিল তাদের এ দেশীয় দোসর সামছ উদ্দিন বদর (ফুলকোচা, মুন্সীবাড়ি), ওয়াজেদ, ওয়াসিম, মুতাহার, ছবর হাজী (ফুলকোচা), মোশারফ হোসেন (পশ্চিম ঝাউগড়া), মনোয়ার হোসেন, আ. মোতালিব (পশ্চিম ঝাউগড়া) ও সুরুজ্জামান। হাজরাবাড়ি বাজার জ্বালিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় পাকসেনারা ঢালুয়াবাড়ি হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং কয়েকজন তরুণীকে ধর্ষণ করে। [এস এম জুলফিকার আলী লেবু]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড