You dont have javascript enabled! Please enable it!

হাজাছড়ি যুদ্ধ (নানিয়ারচর, রাঙ্গামাটি)

হাজাছড়ি যুদ্ধ (নানিয়ারচর, রাঙ্গামাটি) সংঘটিত হয় ১৫ই ডিসেম্বর। এতে ১১ জন সাধারণ মানুষ প্রাণ হারায়। পাকসেনারা পশ্চাদপসরণ করলে এদিনই নানিয়ারচর উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।
ঘটনার দিন সকালে ভারতের দেমাগ্রী থেকে হেলিকপ্টারে করে ৯ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ দুশতাধিক ভারতীয় সেনাকে নানিয়ারচরের হাজাছড়ি গ্রামের চোংড়াছড়ি পাহাড়ের পাশের মাঠে নামিয়ে দেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের দলে কর্নেল (অব.) মনীষ দেওয়ান, শামসুদ্দিন পেয়ারা প্রমুখ ছিলেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল ঐ এলাকায় অবস্থিত পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণ করা। তিনটি হেলিকপ্টারে করে কয়েক দফায় তাঁদের এখানে আনা হয়। বারবার ভারতের হেলিকপ্টার আসতে দেখে পাকিস্তানি সৈন্যরা সতর্ক হয়ে যায়। তারা তখন কুতুকছড়ি বাজারের পাশের একটি পাহাড়ে অবস্থান করছিল। পাকিস্তানি বাহিনী ভারতীয় হেলিকপ্টার লক্ষ করে গোলা ছোড়া শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা আক্রমণ করেন। একটি গোলা হাজাছড়ি গ্রামের দুধহিয়ে চাকমার বাড়িতে এসে পড়লে সেখানে ১১ জন নারী, পুরুষ ও শিশুর করুণ মৃত্যু ঘটে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন নানিয়ারচর উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ভূঁইয়ো আদাম গ্রামের বাসিন্দা চন্দ্র বিহারি চাকমা ও ঘিলাছড়ির বাসিন্দা অমর জীবন চাকমা। ঘটনার পর তারাসহ স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে টিলার নিচে মাটি খুঁড়ে নিহত ১১ জনের লাশ মাটিচাপা দেয়ে। ঐদিন ঘটনাক্রমে বেঁচে যান দুধহিয়ের ছেলে পরান ধন চাকমা। সদ্যোবিবাহিত পরান ধন চাকমা স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুড় বাড়ি কাউখালীতে অবস্থান করছিলেন। খবর পেয়ে তিনি ছুটে আসেন এবং পরদিন ১৬ই ডিসেম্বর মাটি খুঁড়ে বাবা, মা ও তিন ভাইবোনের লাশ তুলে ধর্মীয় রীতিতে দাহ করেন। [ইয়াছিন রানা সোহেল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!