You dont have javascript enabled! Please enable it!

হাজীখাল যুদ্ধ (রাজৈর, মাদারীপুর)

হাজীখাল যুদ্ধ (রাজৈর, মাদারীপুর) সংঘটিত হয় ১৭ই আগস্ট। এতে দুজন পাকিস্তানি সেনা ও একজন রাজাকার গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের সহ বাকিরা পশ্চাদপসরণ করে।
ঘটনার দিন পাকিস্তানি সেনা ও রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের রাজাকার কমান্ডার মনি হাওলাদারের নেতৃত্বে ৫০-৬০ রাজাকারসহ একটি হানাদার দল সকাল ১০টার দিকে নৌকায় করে শংকরদি ও বদরপাশা গ্রামের মধ্যবর্তী হাজীখাল দিয়ে বদরপাশা ইউনিয়নের চর মস্তাপুর গ্রামে ঢোকে। গ্রামে ঢুকে তারা লুটপাট এবং জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে। হানাদার দল মুকুন্দ কাপালির বাড়ি, ঠাকুর বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা তা প্রতিহত করতে এগিয়ে আসেন।
ইশিবপুর গ্রামের চারুচন্দ্র বোসের বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধা মো. শেখ আক্কাছ আলীর কাছে উপর্যুক্ত লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের খবর পৌঁছলে তিনি তৎক্ষণাৎ ৮-১০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে প্রতিরোধের জন্য এগিয়ে আসেন। বদরপাশা গ্রামের উত্তর পাশে নয়া নগর গ্রাম ও টেকেরহাটের মধ্যবর্তী সংযোগস্থলের কাছে বাবলা বন নামক স্থানে কাঁচা রাস্তার দুধারে বাংকার খুঁড়ে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নেন। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অভিযান ছিল। কারণ এখান থেকে বের হওয়ার একটি মাত্র রাস্তা ছিল। এছাড়া চারদিকে ছিল বর্ষার থইথই পানি। পশ্চাদপসরণের কোনো উপায় ছিল না। লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞ শেষে দুপুরের দিকে রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের রেঞ্জের মধ্যে আসামাত্র আক্কাছ আলী গুলি শুরু করেন। শত্রুরাও পাল্টা আক্রমণ করে। দুপক্ষের মধ্যে প্রায় দেড় ঘণ্টা তীব্র যুদ্ধ চলে। এ-যুদ্ধে দুজন পাকিস্তানি সেনা ও একজন রাজাকার গুলিবিদ্ধ হয়। হানাদার বাহিনী বাধ্য হয়ে পিছু হটে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে মুক্তিযোদ্ধারা বাংকার ছেড়ে ক্যাম্পে ফিরে আসেন। যুদ্ধে কমান্ডার মো. শেখ আক্কাছ আলীর সঙ্গে মো. ছলেমান মোল্লা, আব্দুল লতিফ মোল্লা, আব্দুর রহমান মোল্লা, মো. শাহেদ আলী, আব্দুল মান্নান মিয়া, আবু তালেব বেপারী, ফজল বেগ, সাহেবালী বেপারী, মতিয়ার মাতুব্বর, আবছার আলী, আবদুল কাদের, কার্তিক মিত্র প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন। [শেখ নাছিমা রহমান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!