হলদারপুর গণহত্যা (বানিয়াচঙ্গ, হবিগঞ্জ)
হলদারপুর গণহত্যা (বানিয়াচঙ্গ, হবিগঞ্জ) সংঘটিত হয় ২৫শে এপ্রিল। এতে ১৩ জন সাধারণ মানুষ নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়।
ঘটনার দিন হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচঙ্গ উপজেলার হলদারপুর গ্রামে পাকিস্তানি হানাদর বাহিনীর দুটি জঙ্গি বিমান অতর্কিতে হামলা চালায়। বিমানের প্রথম গোলা আঘাত হানে হাজী আব্দুছ ছমেদ নামে জনৈক লন্ডন প্রবাসীর বাড়ির গোয়াল ঘরে। সেখানে রক্ষিত ৫টি গাভী গোলার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। দ্বিতীয়বার আঘাত হানে ছমেদ মিয়ার বসত ঘরে। সেখানে অবস্থানরত ছমেদ মিয়ার শাশুড়ি আমেনা বেগম এবং অতিথি কমলা বিবি, আঙ্গুরা ও তার মা প্রাণ হারান। এভাবে কয়েকবার বিমান দুটি ঐ এলাকায় আঘাত হানে। বারবার বিমান হামলায় সেদিন পার্শ্ববর্তী কালাইনজুড়া ও উমরপুর গ্রামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ নির্বিচার বিমান হামলায় গ্রামের ছমেদ মিয়া, ওমর আলী ও শহীদ উল্লার বাড়ির ৫টি ঘর ভস্মীভূত হয়। এখানে মোট ১৩ জন গণহত্যার শিকার হন এবং কয়েকজন সাধারণ মানুষ আহত হন।
গণহত্যার শিকার গ্রামবাসীরা হলেন- হলদারপুর গ্রামের মকবুলন্নেছা (স্বামী ফজর উদ্দিন), আমিনা খাতুন (পিতা ফজর উদ্দিন), সোনার মা (স্বামী আইয়ুব আলী), আঙ্গুরা খাতুন (পিতা আইয়ুব আলী), রূপচান বিবি (পিতা তমিজ উল্লাহ), ফজল মিয়া (পিতা ছিফত উল্লা), আঙ্গুরা খাতুন (পিতা আব্দুল মালেক), তৈয়ব চান বিবি (স্বামী হিলাল উদ্দিন), লাল বিবি (স্বামী সোনা মিয়া); কালাইনজোড়া গ্রামের বাসন্তী বৈদ্য (স্বামী নগরবাসী বৈদ্য), গৌরীরানী বৈদ্য (পিতা নগরবাসী বৈদ্য); নবীগঞ্জ থানার ঢোলরতন গ্রামের আমিনা বিবি (স্বামী লতিফ সারং) এবং কমলা বিবি। এ গণহত্যায় ফরিজা খাতুন (পিতা আব্দুল হেকিম), মমতাজ বেগম (পিতা আব্দুছ ছমেদ), মনোহর মিয়া (পিতা ফজর উদ্দিন), শারবান বিবি (স্বামী আলম, লন্ডন প্রবাসী), সফিক মিয়া (পিতা হাজী মনফর মিয়া) প্রমুখ আহত হন। [মুহম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড