হলদিয়া-পাতাবাড়ি পুরিক্ষ্যা রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (উখিয়া, কক্সবাজার)
হলদিয়া-পাতাবাড়ি পুরিক্ষ্যা রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (উখিয়া, কক্সবাজার) ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সংঘটিত হয়। এতে পুরিক্ষ্যা বাহিনী পালিয়ে যায় এবং ৪টি ৩০৩ রাইফেল মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়।
আবদুস ছোবহানের নেতৃত্বে উখিয়া থানাকে মুক্তাঞ্চল ঘোষণার পর তাঁর নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন চলতে থাকে। এ- সময় পরাজিত পাকিস্তানি হানাদারদের দোসর পাকিস্তানের সাহায্যপুষ্ট বার্মার বিদ্রোহী পুরিক্ষ্যা বাহিনী বাংলাদেশে প্রবেশ করে এ এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম সংঘটিত করত। পুরিক্ষ্যা বাহিনী উখিয়ার হলদিয়া-পাতাবাড়ি-চাকঢালা এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করে বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই, রাহাজানি এবং ডাকাতি করে গ্রামবাসীদের সবকিছু লুট করে নিয়ে যেত। একই সঙ্গে হানাদারের দোসর রাজাকাররাও নির্যাতন ও লুটপাট করত। এমন খবর জানিয়ে বার্মায় অবস্থান নেয়া ক্যাপ্টেন হারুন আহমদ চৌধুরী অধিনায়ক আবদুস ছোবহানের কাছে একটি পত্র পাঠান। পত্র পেয়ে আবদুস ছোবহান ৩টি গাড়ি নিয়ে পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ক্যাম্প থেকে চাকঢালা অভিমুখে যাত্রা করেন। গাড়ি মরিচ্যা বাজার হয়ে পূর্বদিকে হলদিয়া পালং রোড হয়ে পাতাবাড়িতে পৌছায়। সেখান থেকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ছালেহ আহমদ চৌধুরী এবং আরো কয়েকজন গ্রামবাসীর সহায়তায় পাতাবাড়ির পূর্ব দিকে অবস্থিত পাহাড়ি অঞ্চল চাকঢালায় পুরিক্ষ্যাদের আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে ছোবহান বাহিনী ফায়ার করতে-করতে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। পুরিক্ষ্যা বাহিনী প্রথমে পাল্টা আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিলেও পরে মুক্তিযোদ্ধাদের সশস্ত্র আক্রমণের সংবাদ পেয়ে গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায়। এ-সময় পাতাবাড়ি পুরিক্ষ্যা ক্যাম্পে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৪টি ৩০৩ রাইফেল মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। এ অভিযানে কেউ হতাহত হয়নি। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড