You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.14 | হরিনাহাটি যুদ্ধ (কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ) - সংগ্রামের নোটবুক

হরিনাহাটি যুদ্ধ (কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ)

হরিনাহাটি যুদ্ধ (কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ) সংঘটিত হয় ১৪ই জুন। এতে পাকবাহিনী পরাজিত হয়। তাদের ৩ জন সৈন্য আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ৩টি অস্ত্র ও প্রচুর গোলাবারুদ হস্তগত করেন।
কোটালীপাড়া থানা অপারেশনের পর দখলকৃত অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে হেমায়েত বাহিনী-র মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করেন। হেমায়েত তাঁর বিশাল বাহিনী নিয়ে রাজাপুর গ্রামে একটি ঘাঁটি স্থাপন করেন। রাজাপুরে অবস্থানকালেই পয়সারহাট, রাজাপুর, সাতলা, বাগধা, গৈলা, বাকাল, জোবারপাড় প্রভৃতি স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক যুবক হেমায়েত বাহিনীতে যোগ দেয়ায় বাহিনীর শক্তি অনেক গুণ বেড়ে যায়। পাকবাহিনীর স্থানীয় দোসরদের কাছে এ বাহিনী আতঙ্কের কারণ হয়ে ওঠে। এ বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকার অন্যতম দোসর মুসলিম লীগ নেতা শরাফত হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে ১১ই জুন হরিনাহাটির সাবেক জমিদার সচ্চিদানন্দ ভট্টাচার্যের বাড়ির মন্দির প্রাঙ্গণে শান্তি কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পরদিন ১২ই জুন হেমায়েত তাঁর বাহিনীকে রাজাপুর ঘাঁটি থেকে হরিনাহাটি জমিদার বাড়িতে স্থানান্তরিত করেন। এ খবর এখানকার দোসরদের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ থানা পরিষদ সংলগ্ন পাকবাহিনীর মিনি ক্যান্টনমেন্ট পৌঁছে যায়। ১৪ই জুন ভোরে পাকবাহিনীর একটি বিশাল দল ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লঞ্চযোগে পয়সারহাট পৌঁছায়। সেখান থেকে তারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে একদল হেঁটে এবং অন্যদল নৌকাযোগে গুলি করতে-করতে হরিনাহাটির দিকে এগুতে থাকে। খবর পেয়ে হেমায়েত বাহিনীর যোদ্ধারা পাকবাহিনীর ওপর পাল্টা আক্রমণ চালান। ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। তিন ঘণ্টা ধরে যুদ্ধ চলে। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে টিকতে না পেরে পাকবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। এ-যুদ্ধে পাকবাহিনীর ৩ জন সৈন্য আহত হয় এবং তারা প্রচুর গোলাবারুদ খোয়ায়। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ৩টি অস্ত্র নিজেদের দখলে নিতে সক্ষম হন। হরিনাহাটি যুদ্ধে পাকবাহিনীর পরাজয় এলাকার মানুষের মধ্যে উৎসাহের সৃষ্টি করে এবং হেমায়েত বাহিনীর মনোবল বৃদ্ধি পায়। [রবীন্দ্রনাথ অধিকারী]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড