You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.08.14 | হরিপুর পুল যুদ্ধ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর) - সংগ্রামের নোটবুক

হরিপুর পুল যুদ্ধ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর)

হরিপুর পুল যুদ্ধ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর) সংঘটিত হয় দুবার – ১৪ই আগস্ট ও ১৩ই ডিসেম্বর। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থানার অদূরে অবস্থিত ছিল হরিপুর পুল। এখানে ও এর সন্নিকটে এ দুবার যুদ্ধ সংঘটিত হয়। প্রথম যুদ্ধে ২ জন পাকসেনা নিহত, একজন আহত ও ১১ জন বন্দি হয় এবং ২ জন পালিয়ে যায়। অপরপক্ষে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও একজন আহত হন। দ্বিতীয় যুদ্ধে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা ও ৯ জন গ্রামবাসী শহীদ হন। পাকসেনাদেরও কয়েকজন হতাহত হয়।
১৪ই আগস্ট হরিপুর পুল দখলের জন্য পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ-যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দেন ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন। সেদিন রাত ৯টায় মুক্তিযোদ্ধারা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পুলের কাছে অবস্থান নিলে শত্রুপক্ষ পুলের ওপর থেকে এলএমজি ও রাইফেল থেকে তাঁদের ওপর গুলি চালায়। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা-আক্রমণ করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুল মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে ২ জন শত্রুসৈন্য নিহত হয়। অন্য ২ জন নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। একজন শত্রুসৈন্য আহত এবং ১১ জন বন্দি হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে একজন শহীদ ও একজন আহত হন। হরিপুল পুল যুদ্ধের সফলতার ফলে এ অঞ্চলে পাকসেনা ও রাজাকার দের মনোবল অনেকটা ভেঙ্গে পড়ে। তাদের যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়।
১৩ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় হরিপুর পুলের কাছে পাকসেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে আরেকটি যুদ্ধ হয়। মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, বীরশ্রেষ্ঠ- এ-যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। যুদ্ধে ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর ও ইপিআর-এর নায়েক মোহাম্মদ নবীর উদ্দীন শহীদ হন। এখানে ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর অসীম বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে শহীদ হন। পরে তিনি ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাব প্রাপ্ত হন। এ-যুদ্ধে ৯ জন গ্রামবাসী নিহত হন। পাকসেনাদেরও কয়েকজন হতাহত হয়। ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর শহীদ হওয়ার পর ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দীন চৌধুরী, লে. রফিকুল ইসলাম ও লে. আব্দুল কাইউম খান স্ব-স্ব বাহিনী নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে প্রবেশ করেন। [মাযহারুল ইসলাম তরু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড