স্থানীয় মুক্তিবাহিনী ‘হবি বাহিনী’ (চিতলমারী, বাগেরহাট)
হবি বাহিনী (চিতলমারী, বাগেরহাট) একটি স্থানীয় মুক্তিবাহিনী। মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান হবি (পিতা শেখ রইস উদ্দিন, বেশরগাতী, বাগেরহাট)-এর নামে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী এলাকায় এ বাহিনী গড়ে ওঠে। হবি বাহিনী এলাকার মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ বাহিনীর প্রথম ক্যাম্প বেশরগাতী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পরে বাগেরহাটের খালিশপুর গ্রামের নৃপেণ হালদারের বাড়িতে স্থানান্তরিত হয়। ২৪শে এপ্রিল বাগেরহাট শহর পাকবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার পর এ এলাকার অনেক মুক্তিযোদ্ধা পাকবাহিনী ও স্থানীয় দালালদের হাতে ধরা পড়েন। হাবিবুর রহমান হবি বাগেরহাটের নাগেরবাড়ি ক্যাম্প থেকে রাইফেলসহ ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে নিজ গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে ক্যাম্প স্থাপন করেন। নাগেরবাড়ি ক্যাম্প থেকে এভাবে আরো অনেকে এসে বেশরগাতী গ্রামে হবি বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেন। হবি বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সরদার বজলুর রহমান (মেছোখালী), কালা জব্বার (শিয়ালকাঠি), আলমগীর হোসেন (জুজখোলা, নাজিরপুর থানা), শেখ জানে আলী (বয়ারসিং), মাস্টার দোলোয়ার হোসেন প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। এক সময় এ বাহিনীর ক্যাম্প বারাশিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হয়।
হবি বাহিনীর সদস্যরা প্রায়ই ৭-৮টি টাবুরে নৌকায় অবস্থান করতেন। চিতলমারীতে অবস্থানকালে তাঁদের কাছে নৌকা বহর ক্যাম্প হিসেবে গণ্য হতো। চিতলমারীতে রাজাকারআলবদর ও আলশামস-এর উত্থান ঠেকাতে এ বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। হবি বাহিনীর অপারেশনে নালুয়ার কুখ্যাত রাজাকার দেলোয়ার হোসেন দিলু নিহত হয়। [মনীন্দ্র নাথ বোস]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড