হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ড অপারেশন (মাধবপুর, হবিগঞ্জ)
হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ড অপারেশন (মাধবপুর, হবিগঞ্জ) পরিচালিত হয় এপ্রিলের প্রথমার্ধে। এর ফলে প্রচুর অপরিশোধিত তেল উদ্ধার করে তা বিক্রির অর্থ মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহার করা হয়।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বৃহত্তম গ্যাস ক্ষেত্র হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ডের অবস্থান মাধবপুর থানার বাঘাসুরা ইউনিয়নে। এই গ্যাস ক্ষেত্রের গ্যাসের সাহায্যেই পাক আমলে উপমহাদেশের বৃহত্তম গ্যাস পাওয়ার স্টেশন শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের প্রায় এক কিলোমিটার দক্ষিণে হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ডের অবস্থান। এই গ্যাস ক্ষেত্রে অপরিশোধিত তেলের একটি বিশাল ট্যাঙ্ক বিদ্যমান। ভূগর্ভ থেকে গ্যাস উত্তোলনের সময় কিছু পরিমাণ অপরিশোধিত তেলও উত্তোলিত হয়ে থাকে। এই তেল জমা হয় সেই ট্যাঙ্কে।
মুক্তিযুদ্ধের তহবিল সংগ্রহের জন্য এপ্রিলের প্রথমার্ধে হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ডে একটি অভিযান পরিচালিত হয়। উক্ত অভিযানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ট্যাঙ্কের অপরিশোধিত তেল তেলবাহী ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছু তেল স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। উক্ত তেল বিক্রির বিপুল পরিমাণ টাকা মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে জমা করা হয়। তখন উক্ত গ্যাস ক্ষেত্রের দায়িত্বে ছিলেন মি. লী। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি খ্রিস্টান। মুক্তিযুদ্ধের তহবিল সংগ্রহের কথা বলায় তিনি কোনোরূপ বাধা সৃষ্টি না করে বরং সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। বিক্রির পর কিছু তেল পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি ছড়ায় ঢেলে দেয়া হলে স্থানীয় জনসাধারণ তা সংগ্রহ করে নেয়। [মুহম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড