মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধ ‘স্মৃতি অম্লান’ (রাজশাহী সদর)
স্মৃতি অম্লান (রাজশাহী সদর) মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে নির্মিত একটি স্মৃতিসৌধ। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে মহানগরীর ভদ্রার মোড়ে ১৯৯১ সালে এটি নির্মিত হয়। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের সাইফুল ইসলাম ঠান্ডুর পিতা আজিজুর রহমান সরকার ১৯৯১ সালের ২৬শে মার্চ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তৎকালীন চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার আব্দুর রব স্মৃতিসৌধটির মূল পরিকল্পনা করেন। এটি নির্মাণ করেছেন স্থপতি রাজিউদ্দিন আহম্মেদ। স্মৃতিসৌধটির উচ্চতা ৭১ ফুট। এর বেদীর ব্যাস ৪৫ ফুট। বেদীর উচ্চতা ৩ ফুট ৬ ইঞ্চি। স্মৃতিসৌধে পাশাপাশি ৩টি স্তম্ভ আছে। প্রতিটি স্তম্ভের হেলানো পার্শ্বে রয়েছে ২৪টি করে ধাপ। এই ২৪টি ধাপে ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত ২৪ বৎসরের আন্দোলন- সংগ্রামের অগ্রগতি নির্দেশ করা হয়েছে। ধাপগুলোর উচ্চতা নিচ থেকে ওপরের দিকে ক্রমান্বয়ে জ্যামিতিক হারে বেড়ে গেছে। এতে স্বাধীনতার আন্দোলন ক্রমান্বয়ে শক্তিশালী হয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরিণত হওয়া নির্দেশ করছে। প্রতিটি স্তম্ভে ১০টি করে মোট ৩০টি ছিদ্র আছে, যা ৩০ লাখ শহিদের ক্ষতচিহ্ন নির্দেশ করেছে। বেদীমূলে অসংখ্য প্রস্তর খণ্ড স্থাপিত হয়েছে, যা কয়েক লক্ষ নির্যাতিত মা-বোনের আত্মত্যাগের কথা নির্দেশ করেছে। স্মৃতিসৌধের শীর্ষদেশে স্থাপিত হয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্র সংবলিত লাল রঙের গোলক, যা স্বাধীনতা সূর্যের প্রতীক। স্মৃতি অম্লান-এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। [মো. মাহবুবর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড