হনুমানতলা গণহত্যা (হোসেনপুর, কিশোরগঞ্জ)
হনুমানতলা গণহত্যা (হোসেনপুর, কিশোরগঞ্জ) সংঘটিত হয় ১৭ই আগস্ট। এতে বহু নিরীহ মানুষ শহীদ হন। ১৬ই আগস্ট বিকেলে হোসেনপুর থানার পেছনে সাহা বাড়িতে মাছ ধরার কথা বলে দুজন লোক আসে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল রাজাকারদের অবস্থান জানা। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পাঠিয়েছিলেন গোয়েন্দা হিসেবে। তাদের একজনের নাম আব্দুল খালেক। তিনি ছিলেন গফরগাঁও কলেজের ছাত্র। অপরজন হেলাল উদ্দিন। তিনি ছিলেন গুরুদয়াল কলেজের ছাত্র। তাদের অবস্থান টের পেয়ে আলী হোসেনের নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনী তাদের ধরে ফেলে। পরবর্তীতে তাদের তারের ঘাটে নিয়ে হত্যা করা হয়।
একই দিন রাতে পাকবাহিনী হোসেনপুর আসে এবং রাত ৩টার দিকে রাজাকারদের নিয়ে হোসেনপুর বাজারের পশ্চিমপট্টি ঘেরাও করে ধরপাকড় শুরু করে। আত্মরক্ষার্থে অনেকে প্রমত্ত ব্রহ্মপুত্রে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ বাঁচায়। কিন্তু ১৪৬ জন পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পড়ে। সকাল ৮টার দিকে তাদের ব্রহ্মপুত্র নদে নামিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে জলে ভাসিয়ে দেয়া হয় এবং শিশুদের নদে ফেলে দেয়া হয়।
হনুমানতলা গণহত্যায় শহীদদের মধ্যে ৩৭ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- সত্যেন্দ্র চন্দ্র মোদক, রবীন্দ্র চন্দ্র মোদক, খোকন দত্ত, মধুসূদন সরকার, সন্তোষ কুমার রায়, ধীরেন্দ্র চন্দ্র সাহা, মণীন্দ্র চন্দ্র সাহা, বাবলু কুমার সাহা, সুকুমার তেলী, যোগেন্দ্র চন্দ্র মোদক, শিবলাল কাহার, সূর্য লাল কাহার, গঙ্গা রাম কালোয়ার, কেশব কালোয়ার ওরফে ভোলা, গঙ্গারাম চৌহান, সতীশ চন্দ্র সাহা, অবিনাশ চন্দ্র সাহা, মণীন্দ্র চন্দ্র মোদক, দীনেশ চন্দ্র সরকার, সীতা রাম চৌহান, রাম সাহা কালোয়ার, বদরী গোয়ালা, বেছু গোয়ালা, শ্রীনাথ ঘোষ, বিশ্বনাথ কালোয়ার ওরফে বিশু, মন্টু সাহা, মতিলাল সাহা, সতীশ চন্দ্ৰ সরকার, কালী বাবু, যতীন্দ্র সাহা, প্রভাত চন্দ্র সাহা, বেনু লাল সাহা, মনি লাল সাহা, ধনরঞ্জন সাহা, ভূপেন্দ্র চন্দ্র সাহা, যতু সাহা এবং সতীশ চন্দ্র সরকার। [শাহ্ মো. আফতাব উদ্দিন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড