You dont have javascript enabled! Please enable it! স্থানীয় মুক্তিবাহিনী 'স্বাধীন বাংলা মুক্তিবাহিনী' (বিশ্বনাথ, সিলেট) - সংগ্রামের নোটবুক

স্থানীয় মুক্তিবাহিনী ‘স্বাধীন বাংলা মুক্তিবাহিনী’ (বিশ্বনাথ, সিলেট)

স্বাধীন বাংলা মুক্তিবাহিনী (বিশ্বনাথ, সিলেট) একটি স্থানীয় মুক্তিবাহিনী। এর প্রধান ছিলেন কুটি মিয়া। সিলেট জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি উপজেলা বিশ্বনাথ। এর উত্তরে কোম্পানীগঞ্জ, দক্ষিণে বালাগঞ্জ এবং উত্তর-পূর্বে সিলেট সদর। বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চরচণ্ডী গ্রামের কুটি মিয়ার নেতৃত্বে মার্চ মাসের শেষের দিকে গঠিত হয় ‘স্বাধীন বাংলা মুক্তিবাহিনী’ নামে একটি স্থানীয় বাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে দৌলতপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের যুবকদের সংগঠিত করতে দৌলতপুর ইউনিয়ন সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। চরচণ্ডী গ্রামের কুটি মিয়াকে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির অন্য সদস্যরা ছিলেন- দৌলতপুর গ্রামের সিতাব আলী, তেজন খাঁন, মনির উদ্দিন চৌধুরী, আব্দুস শহীদ চৌধুরী, সত্তিশ গ্রামের আফরোজ আলী ও আটপাড়া গ্রামের কাচা মিয়া। দৌলতপুর গ্রামের বালাগত হোসেনকে আহ্বায়ক করে শান্তি পরিষদ এবং হামিদুর রহমান খানকে আহ্বায়ক করে একটি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও গঠন করা হয়।
এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে স্থানীয় রাজাকারদের নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিশ্বনাথ থানা সদর, লামাকাজি, গোবিন্দগঞ্জ ও কামাল বাজার এলাকায় প্রবেশ করে গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন চালায়। রশিদপুর, নাজির বাজার, খাজাঞ্চী ব্রিজ ও পরগনা বাজারে বাঙ্কার খনন করে ক্যাম্প স্থাপন করে। পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য দৌলতপুর ইউনিয়নে ১৩ সদস্যবিশিষ্ট ‘স্বাধীন বাংলা মুক্তিবাহিনী’ বাহিনী গঠন করা হয়। এ বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক চরচণ্ডী গ্রামের কুটি মিয়া। তাঁর বাহিনীর অন্যান্য গেরিলা সদস্যরা ছিলেন- দৌলতপুর গ্রামের হামিদুর রহমান খান, সিতাব আলী, বালাগাত হোসেন, তেজন খান, আদ্রিছ খান, নুরুল হক খাঁন, আজিজুর রহমান, আব্দুস শহীদ চৌধুরী, মনির উদ্দিন চৌধুরী, চরচণ্ডী গ্রামের লাইলু মিয়া, হাসনাজি গ্রামের মুনির আহমদ ও সত্তিশ গ্রামের আফরোজ আলী। এ বাহিনীর সদস্যরা মার্চ মাস থেকে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চরচণ্ডী গ্রামের গুরুচরণ সরকারের বাড়িসহ আশপাশের বিভিন্ন বন ও জঙ্গলে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন। পরবর্তীকালে তারা করিমগঞ্জ হয়ে ভারতের কাচাড় জেলার উমরা নগরে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে দেশে ফিরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বীরত্বের পরিচয় দেন। [তপন পালিত]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড