সোনারামপুর হত্যাকাণ্ড (আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
সোনারামপুর হত্যাকাণ্ড (আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংঘটিত হয় ১৪ই এপ্রিল। এতে ৫ জন যুবক শহীদ হয়। ঘটনার দিন সকাল ৬টার দিকে ৬টি স্যাবার এফ-৮৬ জঙ্গি বিমান অকস্মাৎ আশুগঞ্জ, লালপুর, ভৈরব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান লক্ষ করে প্রচণ্ডভাবে গোলাবর্ষণ করতে থাকে। এক নাগারে ৬ ঘণ্টা যাবৎ এ আক্রমণ চলে। বিমান আক্রমণের প্রচণ্ডতায় মুক্তিযোদ্ধারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। তখন সোহাগপুরের ধানক্ষেতে কয়েকটি পাক হেলিকপ্টার থেকে ছত্রীসেনা নামতে শুরু করে। একদল ছত্রীসেনা সোহাগপুরের হাজি দিলওয়ার আলী মুন্সি (আওয়ামী লীগ সভাপতি সাফিউদ্দিন আহমেদের পিতা), হাজি আ. রশিদ ও হাজি মফিজ উদ্দিনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা এক ভয়ঙ্কর ধ্বংসলীলায় মত্ত হয়ে ওঠে। ভীত-সন্ত্রস্ত জনগণ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য প্রাণভয়ে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। এ-সময় সোহাগপুর থেকে পাকবাহিনী পিডিবি-র পাশ দিয়ে আশুগঞ্জ বাজারের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। আসার পথে তারা সোনারামপুর গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ৮ জন যুবককে ধরে এনে সোনারামপুর শের আলী মিয়ার বাড়ির নিকট পিডিবি-র রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে। এটি আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন গণহত্যা নামেও সমধিক পরিচিত। এতে ঘটনাস্থলে ৪ জন নিহত হয় এবং অপর ৪ জন ঘটনাক্রমে প্রাণে বেঁচে যায়। সোনারামপুর হত্যাকাণ্ডে নিহত যুবকরা হলো- আম্বর আলী (৩০), হোসেন আলী ও মুসলিম মিয়া (পিতা মালু মিয়া, সোনারামপুর), আবুল কাসেম (পিতা মোতালেব মিয়া) এবং বাচ্চু মিয়া (পিতা সোনা মিয়া মুন্সি, আড়াইসিধা)। প্রাণে বেঁচে যাওয়া ৪ জনের মধ্যে ২ জন হলো- হাছান আলী ও রাশেদ আলী (পিতা মালু মিয়া, সোনারামপুর)। [আমির হোসেন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড