You dont have javascript enabled! Please enable it!

সোমবাজার খাল যুদ্ধ (কালীগঞ্জ, গাজীপুর)

সোমবাজার খাল যুদ্ধ (কালীগঞ্জ, গাজীপুর) সংঘটিত হয় ১৮ই নভেম্বর। এ-যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার শহীদ হন। সোমবাজার কালীগঞ্জ সদর থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণ- পশ্চিম দিকে অবস্থিত। ভাদার্ত্তী গ্রামে ওয়াপদায় পাকিস্তানি বাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করে। এ ক্যাম্পের ৫ জন সৈন্য ২ জন রাজাকারসহ উত্তর সোম দারোগা বাড়িতে মুরগি ক্রয় করতে আসে। মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন এবং মুক্তার হোসেন তাদের দেখে বাড়ির মধ্যে অবস্থান নেন। আনোয়ার পাকিস্তানি সৈন্যদের ওপর গুলিবর্ষণ করেন। কিন্তু তারা কোনোরকমে প্রাণে বেঁচে যায় এবং ক্যাম্পে গিয়ে এ ঘটনার বর্ণনা দিলে ১৮ই নভেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর বিশাল একটি দল উত্তর সোমে অভিযান চালায়। তারা খালের পূর্বপাশে প্রায় এক মাইল জায়গা জুড়ে অবস্থান নিয়ে গুলি করতে থাকে। হানাদাররা ভারী অস্ত্র, কামান ও ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে। তারা কামানোর গোলা ও শেল নিক্ষেপ করতে থাকে এবং হেলিকপ্টার থেকে বোমা নিক্ষেপ করে। রাথুরার সিরাজ ল্যাট্রিনের মধ্যে আশ্রয় নেয়। বিমান থেকে ঐ স্থানে বোমা নিক্ষেপ করা হলে ছাদ ধসে সিরাজ আহত হন। খালে পানি ভর্তি থাকায় হানাদার বাহিনী দক্ষিণ সোমে আসতে পারেনি। খালের ওপাড় থেকে মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। খালের অপর পাড়ে একটি চিনির মিল ছিল। মিলের উঁচু দেয়ালে কামানের গোলা ও শেল বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে গ্রামটি হানাদার বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞের হাত থেকে রক্ষা পায়। হানাদার বাহিনী এখানে ৭ দিন অবস্থান করে যুদ্ধ চালিয়ে যায়। এ-যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার শহীদ হন। তাঁর শহীদ হওয়ার পর ফেরদৌস মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। এ-যুদ্ধে গোলজার, মজিবর, হুমায়ুন, ইউসুফ, আমনউদ্দিন, নূরুল ইসলাম, আলতাফ, মাহতাব উদ্দিন, বরীন কস্তা, ওসমান কমান্ডার, দেলোয়ার হোসেন, শাহজাহান, আহমদ হোসেন, সাহজুদ্দিন, সালাম, শফি প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন। [মু. নাজমুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!