You dont have javascript enabled! Please enable it! সোহাগপুর বিধবাপল্লী (নালিতাবাড়ী, শেরপুর) - সংগ্রামের নোটবুক

সোহাগপুর বিধবাপল্লী (নালিতাবাড়ী, শেরপুর)

সোহাগপুর বিধবাপল্লী (নালিতাবাড়ী, শেরপুর) শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায় অবস্থিত। এ উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামটিই বিধবাপল্লী হিসেবে পরিচিত। নালিতাবাড়ী শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে এ গ্রামের অবস্থান। সোহাগপুর গণহত্যায় এ গ্রামের একটি পাড়ার সকল পুরুষ নিহত হলে পুরো সোহাগপুর বিধবাপল্লীর পরিচিতি পায়। শেরপুরের এ বিধবাপল্লী মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের পরিচালিত নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের এক করুণ নিদর্শন। ২৫শে জুলাই এ গ্রামে হামলা চালিয়ে পাকবাহিনী ১৮৭ জন পুরুষকে হত্যা করে। সেদিন পাকবাহিনী সোহাগপুরে কেবল হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করেনি, স্বামীহারা নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতনও চালায়। ১৩ জন নারী ধর্ষিত ও শতাধিক নারী বৈধব্য বরণ করেন। সম্ভ্রম ও স্বামী হারানো বিধবা ও বীরাঙ্গনাদের আত্মত্যাগের সাক্ষ্য বহন করছে বিধবাপল্লী। সে-সময় পাকবাহিনীকে সহায়তা করে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে স্থানীয় স্বাধীনতাবিরোধীরা। শতাধিক বিধবার মধ্যে অনেকে আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে মারা গেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বেঁচে থাকা বিধবাদের সম্মান- স্বীকৃতি প্রদান ও সহায়তার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর এখানকার ১৩ জন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন। একাধিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিধবাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। সোহাগপুরে হত্যাযজ্ঞ পরিচালনার অপরাধে ২১শে এপ্রিল ২০১৫ কুখ্যাত আলবদর- ও যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। তবে সোহাগপুর বিধবাপল্লীর স্মৃতি এখনো যথার্থভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। বেঁচে থাকা বিধবাদের সম্পূর্ণ পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও হয়নি। [এম এ হাকাম হীরা ও কোহিনূর রুমা]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড