সোনাকান্দা যুদ্ধ (কেরানীগঞ্জ, ঢাকা)
সোনাকান্দা যুদ্ধ (কেরানীগঞ্জ, ঢাকা) ২৬শে নভেম্বর সংঘটিত হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন ওমর আলী (নবাবগঞ্জ) শহীদ হন এবং বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্য হতাহত হয়।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের পরপরই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধারা কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী কলাতিয়ার বোরহানউদ্দিন খান গগনের বাড়িতে ক্যাম্প স্থাপন করে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। এছাড়া রোহিতপুরের জামসেদ, আমিরুল ইসলাম এবং রাশেদ মাস্টারের বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল। রাজাকারদের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ খবর জানতে পারে। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার উদ্দেশ্যে হানাদার বাহিনী ২৬শে নভেম্বর মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলা থেকে ধলেশ্বরী নদী পাড়ি দিয়ে রোহিতপুর ইউনিয়নের সোনাকান্দায় মোমিন মটর্স কোম্পানির গ্যারেজে অবস্থান নেয়। এ সময় কমান্ডার মোস্তফা মহসীন মন্টুর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি গ্রুপ পার্শ্ববর্তী লাকীরচর, ডেপুটি কমান্ডার আবদুর রহিম এবং ইয়াহিয়া খান চৌধুরী পিন্টুর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি গ্রুপ রোহিতপুর, রহমালির চর এলাকায় অবস্থান করছিল। হানাদার বাহিনীর আগমনের খবর পেয়ে কমান্ডার মোস্তফা মহসীন মন্টু তাদের ক্যাম্প আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী বিকেল ৪টার দিকে কমান্ডার এলএমজি দিয়ে ফায়ার ওপেন করলে সকল মুক্তিযোদ্ধা একযোগে পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়েন। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন ওমর আলী শহীদ হন (নবাবগঞ্জের পাড়াগ্রাম কবরস্থানে সমাহিত) এবং বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্য হতাহত হয়। সন্ধ্যার দিকে হানাদাররা হেলিকপ্টারে করে তাদের লাশ ঢাকায় নিয়ে যায়। রাতে ঢাকা থেকে আরো পাকিস্তানি সৈন্য রোহিতপুর এলাকা আক্রমণ করলে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ আশ্রয়ে পশ্চাদপসরণ করেন। এ যুদ্ধে কমান্ডার মোস্তফা মহসীন মন্টু, ডেপুটি কমান্ডার আবদুর রহিম, ইয়াহিয়া খান চৌধুরী পিন্টু, হাজী আবদুল আলী, নাসির উদ্দীন, আমিরুল ইসলাম, খোরশেদ আলম, আবদুল আউয়াল, রেজাউল হক রেজু, আনোয়ার, চিনু প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেন। [আবদুল মালেক মিয়া ও ফারহানা আফরিন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড