সোনাবাড়িয়া ক্যাম্প যুদ্ধ (কলারোয়া, সাতক্ষীরা)
সোনাবাড়িয়া ক্যাম্প যুদ্ধ (কলারোয়া, সাতক্ষীরা) সংঘটিত হয় সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। এতে কয়েকজন পাকসেনা হতাহত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা পশ্চাদপসরণের সময় কয়েকজন রাজাকারকে ধরে নিয়ে যান।
সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানার সোনাবাড়িয়ায় পাকবাহিনীর একটি ক্যাম্প ছিল। ক্যাপ্টেন আযম চৌধুরী এ ক্যাম্প আক্রমণ করে পাকসেনাদের উৎখাত করার পরিকল্পনা করেন। এ লক্ষ্যে নায়েক সুবেদার ইলিয়াস পাটোয়ারী এবং খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে আর্মি, ইপিআর ও আনসারের সমন্বয়ে একটি মুক্তিযোদ্ধা দল গঠন করা হয়। তাঁদের ভারতের সীমান্তবর্তী ভাদিয়ালী গ্রাম দিয়ে অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। অপর দিকে হাকিমপুর সাব-সেক্টর থেকে গেরিলা কমান্ডার মোসলেম উদ্দীন ও কমান্ডার আব্দুল গফফারের নেতৃত্বে আরেকটি গেরিলা দল গঠন করা হয়। তাঁদের চান্দা ও বড়ালী গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রেরণ করা হয়। এ দলটি ঝাঁপাঘাটের পশ্চিম পাশে হেরিং বোল্ড রাস্তার ওপর একটি এন্টিট্যাংক মাইন পুঁতে রাখে। তারপর তাঁরা কোমরপুরে গ্রামে অবস্থান নেন। তাঁরা কমান্ডারের সংকেতের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কমান্ডারের সংকেত পাওয়ামাত্রই গেরিলা দলটি এবং ভাদিয়ালীর মধ্য দিয়ে আসা আর্মি, ইপিআর ও আনসারের দলটি একযোগে সোনাবাড়িয়া ক্যাম্প আক্রমণ করে। দুপক্ষের মধ্যে তুমুল গুলিবর্ষণ চলতে থাকে। সকাল ১০টার দিকে পাকসেনাদের একজন ক্যাপ্টেনসহ কয়েকজন সৈন্যের একটি গাড়ি দমদম ঘাঁটি থেকে সোনাবাড়িয়া ক্যাম্পের পাকসেনাদের সাহায্যের জন্য যাত্রা করে। পথিমধ্যে ঝাঁপাঘাটে পূর্বে গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের পুঁতে রাখা এন্টিট্যাংক মাইন বিস্ফোরিত হয়ে তাদের গাড়িটি বিধ্বস্ত হয়। এতে কয়েকজন পাকসেনা হতাহত হয়। এদিকে পাকবাহিনীর ভারী অস্ত্রের মুখে মুক্তিবাহিনী আর পেরে উঠছিল না। তাঁরা পিছু হটতে শুরু করেন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রবল যুদ্ধ চলার পর মুক্তিবাহিনী হাকিমপুর ক্যাম্পে ফিরে যায়। যাওয়ার সময় তাঁরা কয়েকজন রাজাকারকে ধরে নিয়ে যান। [মাসুদুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড