You dont have javascript enabled! Please enable it!

সূচীপাড়া খেয়াঘাট যুদ্ধ (শাহরাস্তি, চাঁদপুর)

সূচীপাড়া খেয়াঘাট যুদ্ধ (শাহরাস্তি, চাঁদপুর) সংঘটিত হয় ডিসেম্বর মাসে পাকহানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের কিছুদিন পূর্বে। এতে একজন পাকিস্তানি মেজর ও ২ জন রাজাকার নিহত হয়। অন্য হানাদাররা পরাস্ত হয়ে পালিয়ে যায়। ফলে সূচীপাড়া শত্রুমুক্ত হয়।
সূচীপাড়া ডাকাতিয়া নদীর দক্ষিণ পাড়ে অবস্থিত। এখানে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প ছিল। পাকসেনা ও তাদের এদেশীয় রাজাকার বাহিনী সূচীপাড়া মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প দখল করার জন্য একটি ত্রিমুখী আক্রমণ পরিচালনা করে। পাকবাহিনী চিতোষী থেকে নৌকাযোগে নোয়াপাড়া, লালিয়ারা ও দৈয়ারার ভেতর দিয়ে পাথৈর পৌঁছায়। তাদের ২য় দলটি সাতপুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় হয়ে মির্জাপুর, মনিপুর হয়ে ডাকাতিয়া নদীপথে পাথৈর পৌঁছায়। ৩য় দলটি শাহরাস্তি রেলস্টেশন থেকে রাস্তা দিয়ে হেঁটে খিলাবাজার পৌছায়। ডাকাতিয়ার দক্ষিণ পাড় দিয়ে আসা পাকসেনা ও রাজাকার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পর্যুদস্ত হয়ে পিছু হটে। এতে ২ জন রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে নিহত হয়। অন্যদিকে, খিলাবাজারে অবস্থানকারী রাজাকারের দল মুক্তিযোদ্ধা আছমত আলী হাবিলদার, গোলাম সরোয়ার ও আবদুল মান্নান বিএসসি-র নেতৃত্বাধীন মুক্তিবাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে পালাতে বাধ্য হয়। আরব আলী হাবিলদার, গোলাম সরোয়ার, ফরিদ উল্যাহ চৌধুরী ও জহিরুল হক পাঠান টুসের দেড় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা এ-যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। অপরপক্ষে, রাজাকারসহ পাকবাহিনীর সংখ্যা ছিল ১৪০-১৫০ জন। সুবেদার সিরাজুল ইসলাম, হাবিলদার আইউব আলী খান, হাবিলদার আসমত আলীসহ আরো অনেক মুক্তিযোদ্ধা সূচীপাড়া খেয়াঘাট যুদ্ধে অংশ নেন। এখানকার যুদ্ধে পাকবাহিনীর ১ জন মেজর নিহত হওয়ার পর পাকবাহিনী নদী পার হয়ে পালিয়ে যায়। এ-যুদ্ধটি মূলত ত্রিমুখী যুদ্ধে রূপ নেয়। পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় জনসাধারণের সম্মিলিত আক্রমণাত্মক যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পাকবাহিনী ও রাজাকাররা পরাস্ত হয়। সূচীপাড়া খেয়াঘাট যুদ্ধটি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি স্মরণীয় যুদ্ধ ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের রণকৌশলের কারণে পাকবাহিনী সেখান থেকে পালিয়ে গেলে সূচীপাড়া এলাকাটি শত্রুমুক্ত হয়। [মো. মিজানুর রহমান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!