You dont have javascript enabled! Please enable it!

সুভল্যা ব্রিজ অপারেশন (মির্জাপুর, টাঙ্গাইল)

সুভল্যা ব্রিজ অপারেশন (মির্জাপুর, টাঙ্গাইল) পরিচালিত হয় ১৯শে নভেম্বর। টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরের জামুর্কী-পাকুল্লা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দক্ষিণে ঢাকা- টাঙ্গাইল মহাসড়কে সুভল্যা ব্রিজের অবস্থান। ১৯৭১ সালের ১৭ই নভেম্বর কাদের সিদ্দিকী, বীর উত্তম কয়েকজন কোম্পানি কমান্ডারের সমন্বয়ে একটি মিটিং করে টাঙ্গাইল থেকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত ১৮টি ব্রিজ ধ্বংসের সিদ্ধান্ত নেন। কোন কোম্পানি কোন ব্রিজ ধ্বংস করবে সে দায়িত্বও তিনি বুঝিয়ে দেন। সুভল্যা ব্রিজ ধ্বংসের দায়িত্ব পান কোম্পানি কমান্ডার এন এ খান আজাদ ও কাজী আশরাফ হুমায়ুন বাঙ্গাল। কোম্পানি কমান্ডার হাবিবুর রহমান, বীর বিক্রম দায়িত্ব পান জামুর্কী ও পাকুল্লা ব্রিজ ধ্বংসের। তিনি জামুর্কী ব্রিজ অপারেশনের রেকি করার কাজ শেষ করেন। কিন্তু এন এ খান আজাদ ও কাজী আশরাফ হুমায়ুন বাঙ্গাল সুভল্যা ব্রিজ ধ্বংস করতে ব্যর্থ হন। তাই কমান্ডার হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে সুভল্যা ব্রিজ ধ্বংসের নির্দেশ আসে। তবে এ অপারেশনে সঙ্গে থাকবেন কমান্ডার এন এ খান আজাদ। ১৯শে নভেম্বর আনুমানিক রাত ৮টায় ৭০-৮০ জন মুক্তিযোদ্ধা ব্রিজ ধ্বংসের প্রস্তুতি নেন। ব্রিজের দুপাশে বাংকার। সেখানে পাহারায় ছিল প্রায় ৫০-৬০ জন পাকসেনা ও রাজাকার। কমান্ডার হাবিবুর রহমান অপারেশনের জন্য ৫ সদস্যের একটি সুইসাইড স্কোয়াড গঠন করেন। ব্রিজের পশ্চিম দিকে অবস্থানে থাকেন ঘাটাইলের সাধুরগলগণ্ডা গ্রামের সৈয়দ মজিবর রহমান ও মঞ্জুরুল ইসলাম, ব্রাহ্মণশাসনের হানিফ উদ্দিন, বাগুন্তার এমদাদুল হক খান হুমায়ুন, কর্ণার দেলোয়ার হোসেন ও আবদুল হাকিম, আনেহলার দেলোয়ার হোসেন, কাতরার আবু সাঈদ, বীর ঘাটাইলের হোসেন আলী, ভানিকাতরার সাইদুর রহমান ও মাহবুবুর রহমান, গৌরাঙ্গীর শাহাদত হোসেন, গালার আবদুর রউফ, কালিহাতীর মতিয়ার রহমান, কুচুটির আবুল হোসেন ও মঞ্জুরুল হক, কালিহাতী কুরুয়ার আবদুস সালাম, সয়ার জামাল হোসেন, টাঙ্গাইলের পার দিঘুলিয়ার লুৎফর রহমান প্রমুখ। সুইসাইড স্কোয়াডে ছিলেন কমান্ডার নিজে, ভূঞাপুরের বাগবাড়ীর মাসুদুল হক মাসুদ ও মহীউদ্দিনসহ ৫ জন। ব্রিজে উভয় পক্ষের মধ্যে ভোর রাত পর্যন্ত যুদ্ধ হওয়ার পর পাকসেনা ও রাজাকাররা পালিয়ে যায়। পলায়নরত অবস্থায় ২২ জন রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধারা ধরে ফেলেন। সুইসাইড স্কোয়াডের ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ব্রিজের ওপরে গিয়ে ওঠেন। সঙ্গে-সঙ্গে অন্য মুক্তিযোদ্ধারাও ব্রিজের দিকে এগিয়ে যান। ভোরের আলোতে ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের মুক্তিযোদ্ধারা মাইন ও এক্সপ্লোসিভ দিয়ে ব্রিজটি ধ্বংস করে দেন। [শফিউদ্দিন তালুকদার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!