You dont have javascript enabled! Please enable it!

সুফিয়ার যুদ্ধ (মিরসরাই, চট্টগ্রাম)

সুফিয়ার যুদ্ধ (মিরসরাই, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় ১০ই জুলাই। এ-যুদ্ধে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও কয়েকজন আহত হন।
মুক্তিযোদ্ধারা ১০ই জুলাই গোপনে জানতে পারেন যে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সুফিয়ার গ্রাম আক্রমণ করবে। সংবাদ পেয়ে কমান্ডার অহিদুল হকের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা সুফিয়ার বাজারের অর্ধ মাইল পূর্বদিকে সুফি নুর মোহাম্মদের বাড়ির দক্ষিণে রাস্তার পাশে আবদুল আজিজ মিস্ত্রি ও বদিউজ্জামান মিস্ত্রির বাড়ির সামনে অবস্থান নেন। এ দলের অপর একটি গ্রুপ সুলতান ভূঁইয়ার বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়। পাকিস্তানি সৈন্যরা দূর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান টের পেয়ে যায়। তারা বদিউল আলম চৌধুরীর বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের ওপর ২ ইঞ্চি মর্টারের গোলাবর্ষণ শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা গুলিবর্ষণ না করে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে চুপ করে বসে থাকেন। অনেকক্ষণ চুপ থাকার পর পাকিস্তানি সৈন্যরা বিহারিদের সামনে রেখে ধীরে-ধীরে সামনের দিকে এগুতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধারা এর মধ্যে সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। বিহারি ও পাকিস্তানি সৈন্যরা আয়ত্তের মধ্যে আসামাত্র মুক্তিযোদ্ধারা গুলিবর্ষণ শুরু করেন। কিন্তু হানাদার বাহিনীর আধুনিক অস্ত্রের সামনে টিকতে না পেরে তাঁরা পশ্চাদপসরণ করেন। এ-যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা নুরুল মোস্তফা চৌধুরী, বদরুদ্দোজা, আবদুল জলিল, ওয়ারতইল্লাহ ও সামুজ্জোহা হানাদারদের গুলিতে শহীদ হন। হানাদাররা মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহমদ ভূঁইয়াকে ধরে নিয়ে যায় এবং নির্মম নির্যাতন শেষে হত্যা করে। এ-যুদ্ধে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। যুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সুফিয়ার আশেপাশে বহু বাড়িঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেয়।
সুফিয়ার যুদ্ধে কমান্ডার অহিদুল হকের সঙ্গে ছিলেন জয়নাল আবেদীন, নিজামউদ্দিন চৌধুরী, নিজামউদ্দিন ভূঁইয়া, মোজাম্মেল, কেনু মিয়া, মিহির চৌধুরী, নুরদ্দিন, শাহ আলম (ধুম), সাহাবুদ্দিন, নুর মোহাম্মদ, রবিউল হোসেন, তাজুল ইসলাম, শফি, নাসির, নুরুজ্জামান কামরানী, শাহাদত হোসেন চৌধুরী, জামশেদ আলম, হারুন, ফয়েজ আহমদ প্রমুখ। [জগন্নাথ বড়ুয়া]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!