You dont have javascript enabled! Please enable it!

সিলেট এম সি কলেজ যুদ্ধ (সিলেট সদর)

সিলেট এম সি কলেজ যুদ্ধ (সিলেট সদর) সংঘটিত হয় ৪ঠা ও ৫ই এপ্রিল। এ-যুদ্ধে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৪ঠা এপ্রিল বেলা ২টার দিকে মুক্তিবাহিনীর একটি দল এম সি কলেজ ক্যাম্পাস ও আশপাশের টিলায় অবস্থান নেয়। তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অবস্থান ছিল আই ডি হাসপাতাল এলাকায়। কিছুক্ষণ পর দুপক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় শুরু হয়। সমগ্র এম সি কলেজ এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সন্ধ্যার দিকে পাকিস্তানি বাহিনী বিমান বন্দরের দিকে সরে গেলে গুলি বিনিময় বন্ধ হয়। পরদিন ৫ই এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে পাকবাহিনী কলেজ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিমান আক্রমণ করে। কলেজ প্রাঙ্গণে বোমা নিক্ষেপ করতে থাকে। কলেজের পার্শ্ববর্তী টিলায় মেশিনগানের গুলিবর্ষণ করে। দুপুরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এম সি কলেজ ছাত্রাবাসে ঢুকে পড়ে। ফ্রেম ফেয়ার-এর সাহায্যে তারা ছাত্রাবাসের মিলনায়তনে হামলা চালিয়ে তা ভস্মীভূত করে দেয়। মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন। এ-যুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার ফয়েজ আহমদ, সিপাহি বাচ্চু মিয়া, নায়েক নুরুন্নবী, ফজর আলী, সিপাহি মহিউদ্দিন ও নায়েক আফসর আলী শহীদ হন। স্বাধীনতার পর শহীদদের স্মরণে এম সি কলেজ ক্যাম্পাসে স্মৃতিস্তম্ভ ও শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠা করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের প্রাক্কালে এম সি কলেজে থাকা পাকবাহিনীর ঘাঁটিতে মিত্রবাহিনী – বিমান আক্রমণের পরিকল্পনা করছিল। কিন্তু ভারতীয় বিমান বাহিনীর অভিযানে রওনা হওয়ার মাত্র অল্পক্ষণ আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের খবর আসে। ফলে এম সি কলেজ বোমা বর্ষণ থেকে রক্ষা পায়। যুদ্ধে বিজয়ের আগে পাকবাহিনীর সহযোগীদের অনেকে শহর ছেড়ে পালাতে শুরু করে। পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর এম সি কলেজ ক্যাম্পাসে পাকিস্তানের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আজমল আলী চৌধুরীর লাশ পড়ে থাকে। আত্মসমর্পণের পূর্বে পাকিস্তানিরা সিলেটে ৫০ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পরিকল্পিনা করেছিল। কিন্তু সময় ও সুযোগের অভাবে তারা তা কার্যকর করতে পারেনি। [মো. মুহিবুর রহমান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!