সিরাজদৌল্লা ক্লাব-সংলগ্ন মাঠ গণহত্যা (বন্দর, নারায়ণগঞ্জ)
সিরাজদৌল্লা ক্লাব-সংলগ্ন মাঠ গণহত্যা (বন্দর, নারায়ণগঞ্জ) সংঘটিত হয় ৪ঠা এপ্রিল। এদিন ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে পাকসেনারা স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ বন্দরের এ মাঠে বন্দর, একরামপুর ও নবীগঞ্জ গ্রাম থেকে নিরীহ ৫৪ জন লোককে ধরে এনে জড়ো করে। তাদের মধ্যে ছিল বন্দর গ্রামের তাবরীজ মাস্টার, সতীশ মাঝি, মরণ চন্দ্র মালয়, কুমুন্দ্র দাস, মুকুন্দ দাস, আবু বকর সিদ্দিক, মো. আলী মিয়া, নিতাই গাঙ্গুলী, হরিহরণ, গোলাম মাহমুদ, মোস্তফা, ভগবান দাস, কানাই লাল, নারায়ণ চন্দ্র দাস, গোপাল চন্দ্র দাস, সুরেশ, ইন্দ্র চন্দ্র দাস, দীপেন্দ্ৰ দাস বর্মণ, রমেশ চৌধুরী, হারাধন, পরেশ দাস, মোমতাজউদ্দীন মাস্টার, ছমিরউদ্দীন সর্দার, নায়েব আলী, সরষু চন্দ্র দাস, স্বপন চন্দ্র কানু, লছমন বানু প্রমুখ; একরামপুর গ্রামের কাজল, বাদশা, রওশনসহ ৭-৮ জন এবং নবীগঞ্জ গ্রামের লতিফ সর্দারের জামাইসহ ৭-৮জন। পাকসেনারা তাদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। অসহায় মানুষগুলো বাঁচার জন্য ছোটাছুটি শুরু করলে পাকসেনারা তিনদিক ঘিরে ফেলে হত্যাযজ্ঞ চালায়। হত্যার পর পাকসেনারা রাজাকারদের সহায়তায় শহীদদের লাশগুলো একস্থানে জড়ো করে। পার্শ্ববর্তী হাবিব মিয়ার বাড়ি থেকে বাঁশের বেড়া ভেঙ্গে এনে তা দিয়ে লাশগুলো ঢেকে দেয় এবং তার ওপর গানপাউডার ছিটিয়ে দেয়। এরপর দু-তিনজন পাকসেনা ঐ বেড়ার ওপর গুলি ছুড়লে সঙ্গে-সঙ্গে আগুন ধরে যায় এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লাশগুলো পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। [রীতা ভৌমিক]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড