বীর প্রতীক সিরাজুল ইসলাম
সিরাজুল ইসলাম, বীর প্রতীক (১৯৪৬-১৯৭১) ল্যান্স নায়েক ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৬ সালে ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার সাগান্না গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুর রহমান বেপারী এবং মাতার নাম আফিয়া খাতুন। ৩ বোন ও ১ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। সিরাজুল ইসলাম সাগান্না প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করেন এবং উত্তর নারায়ণপুর হাইস্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। তিনি ১৯৬৯ সালের ৯ই আগস্ট পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ফার্স্ট ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট যশোর সেনানিবাসের অস্ত্রাগারের তালা ভেঙ্গে অস্ত্র নিয়ে যশোর সেনানিবাসের ভেতরে আক্রমণকারী পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সারাদিন যুদ্ধ করেন। এক পর্যায়ে পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে টিকতে না পেরে পিছু হটে বেনাপোল সীমান্তে বেতাই ক্যাম্পে তাঁর সহযোদ্ধাদের সঙ্গে মিলিত হন। তিনি ১লা এপ্রিল ঝিনাইদহ থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে বিষয়খালীর প্রতিরোধযুদ্ধসহ বেনাপোল ও আশপাশের বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। জুন মাসে তিনি ক্যাপ্টেন হাফিজ উদ্দিনের নেতৃত্বে ভারতের তেলঢালায় গিয়ে ‘জেড’ ফোর্সের সঙ্গে যুক্ত হন। ৩০শে জুলাই ধানুয়া-কামালপুর যুদ্ধে পাকবাহিনীর গোলার আঘাতে তিনি শহীদ হন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান ও আত্মত্যাগের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক শহীদ ল্যান্স নায়েক সিরাজুল ইসলামকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তাঁর নামে সাগান্না গ্রামে একটি ক্লাব স্থাপিত হয়েছে। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড