You dont have javascript enabled! Please enable it! সিন্দিয়াঘাট শহীদ স্মৃতি ক্লাব ও স্মৃতিস্তম্ভ (মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ) - সংগ্রামের নোটবুক

সিন্দিয়াঘাট শহীদ স্মৃতি ক্লাব ও স্মৃতিস্তম্ভ (মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ)

সিন্দিয়াঘাট শহীদ স্মৃতি ক্লাব ও স্মৃতিস্তম্ভ (মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ) গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলায় অবস্থিত। গোহালা ইউনিয়নের গংগারামপুর গ্রামের যে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা দিগনগর যুদ্ধে শহীদ হন, তাঁদের স্মৃতি রক্ষার্থে এ ক্লাব প্রতিষ্ঠিত ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়। গংগারামপুর গ্রামের পূর্বপাশ দিয়ে কুমার নদী এবং দক্ষিণ গ্রামের মধ্য দিয়ে আড়িয়ালখাঁ ও মধুমতি নদির সংযোগ নদী বয়ে গেছে। এই দুই নদীর পূর্ব ও দক্ষিণ মোহনার নাম সিন্দিয়াঘাট। এক সময় এখানে নদীবন্দর ছিল। এখানে একটি নৌফাঁড়ি রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ফাঁড়িতে পাকিস্তানের অনুগত পুলিশ ও রাজাকারদের সরব উপস্থিতি ছিল। তবে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের পদচারণা রুখতে পারেনি। মুক্তিযোদ্ধারা নৌফাঁড়ি এবং নদীর পূর্বতীরে খাদ্যগুদামে হানা দেন।
মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলি মাতুব্বর, নূরুল ইসলাম মল্লিক (গংগারামপুর), শামচুল হক মল্লিক (গংগারামপুর), নুর মোহাম্মদ মল্লিক (গংগারামপুর), সামচুল মুন্সী ও গোলজার হোসেন (হরিরচর) একত্রে ভারতে গিয়ে চাকুলিয়া ট্রেনিং সেন্টারে প্রক্ষিণ নেন এবং কমান্ডার শাহজাহান খান (কাশালিয়া)-এর নেতৃত্বে দেশে এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে কমান্ডার শাহজাহান খানের টু-আই-সি নাসির তালুকদারের নেতৃত্বে এক ব্যর্থ অভিযানে ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা ধরা পড়ে শহীদ হন। তাঁদের মধ্যে ৩ জনই ছিলেন গংগারামপুর গ্রামের। তাঁরা হলেন- নূরুল ইসলাম মল্লিক, শামচুল হক মল্লিক ও নুর মোহাম্মদ মল্লিক। যুদ্ধের পর এলাকাবাসী তাঁদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য শহীদ স্মৃতি ক্লাব প্রতিষ্ঠা ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বামনডাংগার রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধা ও হিন্দুদের যে-সকল ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল, ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে মুক্তিযোদ্ধা ও জনতা মিলে সেসব নিয়ে এসে গংগারামপুর গ্রামের সিন্দিয়াঘাটে সরকারি জায়গায় ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে। ক্লাবের পূর্ব পাশে নির্মিত হয় স্মৃতিস্তম্ভ। [মো. ফিরোজ খান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড