You dont have javascript enabled! Please enable it!

সিরাজগঞ্জ শহর গণহত্যা (সিরাজগঞ্জ সদর)

সিরাজগঞ্জ শহর গণহত্যা (সিরাজগঞ্জ সদর) সংঘটিত হয় ২৫ ও ২৬শে এপ্রিল। সিরাজগঞ্জ মহকুমা শহরে অনুপ্রবেশ করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ দুদিন স্বাধীনতাবিরোধীদের সহায়তায় দরগাহপট্টি ও মারোয়ারি পট্টিতে ৩৮ জন মানুষকে হত্যা করে।
সিরাজগঞ্জ মহুকুমা তখন পাবনা জেলার অন্তর্গত ছিল। ২৫শে এপ্রিল হানাদার বাহিনী সিরাজগঞ্জ শহরে ঢোকে এবং রাত ১টার দিকে দরগাহপট্টি এলাকায় আক্রমণ চালায়। সে- রাতে তারা একই পরিবারের ৮ জনকে গুলি করে হত্যা করে। যাদের হত্যা করা হয়, তারা হলেন- আব্দুল বারিক (পিতা আহম্মতুল্লাহ), আব্দুল রহিম (পিতা আহম্মতুল্লাহ), আকবরী বেগম (স্বামী আব্দুর রহিম), রাবেয়া বেগম (স্বামী আব্দুর রহিম), নাসিম উদ্দিন (পিতা আব্দুর রহিম), আনোয়ারী বেগম (স্বামী কলিম উদ্দিন), আনোয়ারা খাতুন (স্বামী ছানু মিঞা) ও হালু মিঞা (পিতা ছানু মিঞা)।
হানাদার বাহিনী সিরাজগঞ্জ প্রবেশের পর বেশিরভাগ মানুষ ভয়ে পালিয়ে যায়। ২৬শে এপ্রিল রাজাকাররা খুঁজে-খুঁজে ৩০ জন নিরীহ মানুষকে ধরে সিরাজগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ আসাদ-উদ-দৌলা সিরাজীর বাসায় নিয়ে যায়। তাদের পরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগ-এর কর্মী ও শ্রমিকনেতা আবুল হোসেন। পাকসেনারা তাঁকে বেঁধে সারা শহর প্রদক্ষিণ করায় ও মারোয়ারি পট্টির মোতাহার হোসেনের বাসার সামনে এনে মাটিতে গর্ত করে বুক পর্যন্ত পুঁতে গুলি করে হত্যা করে। অন্যদের মারোয়ারি পট্টির রাস্তায় দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। এখানে গণহত্যার শিকারদের মধ্যে ৫ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন— আবুল হোসেন (দিয়ার ধানগড়া; শ্রমিকনেতা), জিন্নাত আলী (দত্তবাড়ি; সিরাজগঞ্জ কলেজ ক্যান্টিনের মালিক), রতম মিঞা (দিয়ার ধানগড়া; রিকশাচালক), বনি আমিন (আমলাপাড়া; কলেজ ছাত্র) ও জ্যোতি মিঞা (হোসেনপুর; ব্যবসায়ী)। [মাহফুজা হিলালী]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!