সিংরাবুনিয়া গণহত্যা (পাথরঘাটা, বরগুনা)
সিংরাবুনিয়া গণহত্যা (পাথরঘাটা, বরগুনা) সংঘটিত হয় ১০ই অক্টোবর। এতে ৭ জন নিরীহ গ্রামবাসী হত্যার শিকার হন।
পাকিস্তানি বাহিনী ১৪ই মে বরগুনা জেলায় প্রবেশ করে। বরগুনার মুসলীম লীগ নেতা আজিজ মাস্টার ও পাথরঘাটার স্বাধীনতাবিরোধী আহের উদ্দিন হাওলাদার ১লা মে পটুয়াখালী গিয়ে পরের দিন হানাদার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে আসে। ১৫ই মে পাকবাহিনী পাথরঘাটায় প্রবেশ করে এবং স্থানীয় দোসরদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন বাড়িতে আক্রমণ চালায়। এ-সময় তারা লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, রাস্তাঘাট-ব্রিজ ধংস ও নিরীহ মানুষ হত্যায় মেতে ওঠে। পাকিস্তানি বাহিনী ১০ই অক্টোবর সিংরাবুনিয়ায় গণহত্যা চালায়। সিংরাবুনিয়া নাচনাপাড়া ইউনিয়নের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। হানাদার বাহিনীর একটি দল স্থানীয় দোসরদের সহায়তায় বলেশ্বর নদী দিয়ে গানবোটে আকস্মিক এ গ্রামে এসে পৌঁছায়। গ্রামের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে অন্যত্র যাওয়ার জন্য ছুটাছুটি করে। এ-সময় পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দোসরদের দেয়া তথ্যমতে বেপারী বাড়ি আক্রমণ করে। তারা ৭ জন গ্রামবাসীকে আটক করে পার্শ্ববর্তী খালের পাড়ে নিয়ে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে লাশ খালের মধ্যে ফেলে দেয়। এ গণহত্যায় দুই সহোদরসহ নিহত গ্রামবাসীরা হলেন- চন্দ্রকান্ত হাজরা (পিতা বাবুরাম হাজরা), অশ্বিনী কুমার বালা (পিতা ঈশ্বর চন্দ্র বালা), লক্ষ্মীকান্ত ঘরামি (পিতা গুরুচরণ ঘরামি), মনোরঞ্জন বেপারী (পিতা লক্ষ্মীকান্ত বেপারী), নিত্যানন্দ বেপারী (পিতা রাইচরণ বেপারী), ক্ষিরোদ চন্দ্র বেপারী (পিতা রাইচরণ বেপারী) ও অনন্ত কুমার হালদার (পিতা কিশোর কুমার হালদার)। সিংরাবুনিয়া গণহত্যায় নিহতদের একটি গণকবরে সমাহিত হরা হয়। তাদের স্মরণে ‘সপ্ত শহীদের স্মৃতিস্তম্ভ’ নামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। [মো. মাসুদুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড