সিএন্ডবি ১নং পুল বধ্যভূমি (বরিশাল সদর)
সিএন্ডবি ১নং পুল বধ্যভূমি (বরিশাল সদর) বরিশাল শহরের সিএন্ডবি মহাসড়কে অবস্থিত। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ বধ্যভূমিতে এডভোকেট জিতেন্দ্রলাল দত্তসহ অনেকে শহীদ হন।
সাগরদি খালের ওপর সিএন্ডবি ১নং পুল বধ্যভূমির অবস্থান। পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের অন্যতম স্থান ছিল। এ বধ্যভূমি। তারা স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ধরে এনে এ বধ্যভূমিতে হত্যা করত। বরিশাল বারের প্রখ্যাত আইনজীবী জিতেন্দ্রলাল দত্ত, তাঁর দুই পুত্র সুবীরলাল দত্ত ও মিহিরলাল দত্তসহ ১৫ জনকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করার জন্য হানাদার বাহিনী ১লা জুন গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলা থেকে স্থানীয় রাজাকারদের ইঙ্গিতে ধরে নিয়ে আসে। নলছিটি থেকে ঝালকাঠী হানাদার ক্যাম্পে আনার পথে তারা সুবীরলাল দত্তকে সুগন্ধা নদীর তীরে হত্যা করে লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেয়। জিতেন্দ্রলাল দত্ত ও তাঁর অপর পুত্র মিহিরলাল দত্তকে বরিশাল ত্রিশ গোডাউনে হানাদারদের টর্চার সেলে এনে তাঁদের ওপর অমানুষিক অত্যাচার চালায়। একটানা ৭ দিন অত্যাচার করার পরও তাঁদের কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য বের করতে পারেনি। এরপর হানাদাররা জিতেন্দ্রলাল দত্তকে ছেড়ে দেয় এবং মিহিরলাল দত্তকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায়। সেখান থেকে মিহিরলাল দত্ত মুক্তি পেয়ে বরিশালে আসেন। হঠাৎ করে ১৫ই অক্টোবর রাতে বরিশাল শহরের আগরপুর রোডের বাসা থেকে পাকস্তানি সৈন্যরা জিতেন্দ্রলাল দত্ত এবং মিহিরলাল দত্তকে গ্রেফতার করে শহরের ১নং সিএন্ডবি পুল বধ্যভূমিতে নিয়ে যায়। সেখানে জিতেন্দ্রলাল দত্তকে রাজাকাররা গুলি করে লাশ খালে ভাসিয়ে দেয়। মিহিরলাল দত্তকে গুলি করলে তিনি খালে ঝাঁপ দিয়ে বেঁচে যান। এ বধ্যভূমি সংরক্ষণের এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। [মনিরুজ্জামান শাহীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড