সারপার যুদ্ধ (বিয়ানীবাজার, সিলেট)
সারপার যুদ্ধ (বিয়ানীবাজার, সিলেট) সংঘটিত হয় আগস্ট মাসে। এতে উভয় পক্ষে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। সিলেটের বিয়ানীবাজারে পাকিস্তানিদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বিতীয় বৃহৎ যুদ্ধটি সংঘটিত হয় ভারতীয় সীমান্তবর্তী সারপারের দখল নিয়ে। মুক্তিবাহিনীর ৪ নম্বর সেক্টরের সাব- সেক্টর বারপুঞ্জি ক্যাম্পের মুক্তিযোদ্ধারা সীমান্তবর্তী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পূর্বমুড়িয়া এলাকার সারপারে ক্যাম্প স্থাপন করেছিলেন। এ মুক্তাঞ্চল থেকে তাঁরা দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন অপারেশন পরিচালনা করেন। পাকবাহিনী মরিয়া হয়ে ওঠে এ স্থানের দখল নিতে। পাকিস্তানি বাহিনী আগস্ট মাসের দিকে তিন দিক থেকে সাঁড়াশি অভিযান চালায়। দুপক্ষে ব্যাপক যুদ্ধ হয়। একটানা ১৪ দিন যুদ্ধ চলে। এক পর্যায়ে এলাকাটি মুক্তিযোদ্ধাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। সারপার যুদ্ধে দুপক্ষেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পাকিস্তানি বাহিনী ঐ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর ব্যাপক হত্যা-নির্যাতন-ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। সারপার গ্রামে পাকবাহিনী ইরশাদ আলী ও ফয়েজ উদ্দিনকে হত্যা করে।
মুড়িয়া ইউনিয়নের সারপারে শান্তি কমিটির আহ্বায়ক ছিল জামায়াতে ইসলামীর নেতা মাওলানা ডা. ফজলুল করিম। স্বাধীনতার পর সে পাকিস্তানে পালিয়ে যায় এবং প্রায় ১৫ বছর পর দেশে ফিরে আসে। এলাকায় তার পরিচিতি হয় ‘কুত্তা মৌলভী’ হিসেবে। সারপার এলাকা পাকিস্তানি বাহিনী দখল করার পর শান্তি কমিটির পরামর্শে সেখানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড