You dont have javascript enabled! Please enable it!

সারিয়াকান্দি যুদ্ধ (বগুড়া)

সারিয়াকান্দি যুদ্ধ (বগুড়া) সংঘটিত হয় ২৪শে নভেম্বর। এতে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং বাকিরা পিছু হটেন।
বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুলের নেতৃত্বে তাহসীম, আমিনুল ও আনসার আলী যুদ্ধের বিভিন্ন কৌশল ও রোডম্যাপ তৈরি করেন। ২১শে নভেম্বর রাত ১২টায় তাঁরা সারিয়াকান্দি রামচন্দ্রপুর প্রাইমারি স্কুলে উপস্থিত হন। তখন সেখানে ১২৫ জনের মতো মুক্তিযোদ্ধার উপস্থিতিতে পাকবাহিনীকে প্রতিহত করার পরিকল্পনা করা হয়। বগুড়া শহর থেকে যেন পাকিস্তানি বাহিনী সারিয়াকান্দিতে আসতে না পারে সেজন্য রামনগরের পেছনে বগুড়া-সারিয়াকান্দি সড়কে মাইন পুঁতে রাখা হয়। সিরাজগঞ্জ থেকে যেন পাকিস্তানি সৈন্যরা আসতে না পারে সেজন্য মথুরাপাড়ায় ওয়াপদা বাঁধের ওপর মাইন পুঁতে রাখা হয়। উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে এভাবে মাইন পুঁতে রাখার পর মুক্তিযোদ্ধারা পশ্চিম দিকের বাঙালি নদীর পশ্চিম তীরে পজিশন নেন। চতুর্দিকে মুক্তিযোদ্ধাদের ২৫ জনের একটি করে দল অবস্থান নেয়। কাটআপ করার জন্য পরিকল্পনামাফিক সকল মুক্তিযোদ্ধা ২২শে নভেম্বর রাত ৩টার দিকে যাঁর-যাঁর স্থানে অবস্থান নেন। অন্যদিকে পাকিস্তানি সেনারা নিজেদের ঘাঁটিতে অবস্থান করছিল। ঘন কুয়াশা পড়ার কারণে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ স্থগিত করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। ২৩শে নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পুনরায় একত্রিত হন এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিহত করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। ২৪শে নভেম্বর সূর্য ওঠার পর উত্তর দিকের মুক্তিযোদ্ধাদের রাইফেলগুলো একত্রে গর্জে ওঠে। পাকিস্তানি বাহিনী সঙ্গে-সঙ্গে উত্তর দিকে গুলি ছুড়তে থাকে। শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধ। মুক্তিযোদ্ধারা সারিয়াকান্দির উত্তর ও পশ্চিম দিক থেকে নানা কৌশলে এগিয়ে যেতে থাকেন। উত্তর দিকে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ চালাতে থাকেন। রফিকুল নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধরত অবস্থায় পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলিতে শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সহযোদ্ধা রফিকের লাশ নিয়ে নিরাপদ দূরত্বে চলে যান। এতে উত্তর ও দক্ষিণ দিকে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দেয়। এ সুযোগে পাকিস্তানি সেনারা এগিয়ে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ চালায়। শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হন। [আহম্মেদ শরীফ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!