সাভিয়ানগর গণহত্যা (অষ্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ)
সাভিয়ানগর গণহত্যা (অষ্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ) সংঘটিত হয় ৫ই সেপ্টেম্বর। পাকসেনা ও স্থানীয় আলবদর বাহিনী এ হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে। এতে নেতৃত্ব দেয় আলবদর কমান্ডার কে এম আমিনুল ওরফে রজব আলী। এখানে ২০ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
ঘটনার দিন স্থানীয় রাজাকার ও আলবদর কমান্ডারের নেতৃত্বে পাকহানাদার বাহিনী অতর্কিতে সাভিয়ানগর গ্রামে হানা দেয়। বদর কমান্ডার রজব আলীর ইশারায় এবং তার পূর্ব আক্রোশের কারণে পাকসেনারা সাভিয়ানগর খান বাড়ি এবং চৌধুরী বাড়ির পুরুষদের ধরে এনে নিমর্মভাবে হত্যা করে। চৌধুরী বাড়িতে ৬ জন আনসার ভিডিপি-র সদস্য ও ২ জন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। খাঁ বাড়ির মানুষ আওয়ামী লীগ-র সমর্থক ছিলেন। এ কারণে এ গণহত্যা সংঘটিত হয়। সেই দিন ঘাতকদের গুলিতে গ্রামের ২০ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান। যারা ঘাতকদের ভয়ে পালিয়ে যেতে পেরেছিল তারা প্রাণে বেঁচে যায়। রজব আলীই এ ঘটনার মূল হোতা ছিল। বাজার-সংলগ্ন মন্নাফ ফকিরের মাজারে যিনি ‘পাগলা’ বলে খ্যাত ছিলেন, সেই ধনু ফকিরও রেহাই পাননি এ নিমর্ম গণহত্যা থেকে। পিতার সামনে পুত্রকে এবং পুত্রের সামনে পিতা ও তাদের স্বজনদের এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বলি হতে হয়। সাভিয়ানগর বাজারে শহীদদের গণকবর সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাক্ষ্য বহন করছে।
সাভিয়ানগর গণহত্যায় নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় জানা গেছে, তারা হলেন— সফর খান (পিতা বিরাস খান), ইলিয়াস খান (পিতা দরবেশ খান), মনির খান (পিতা বিরাম খান), আইয়ুব খান (পিতা আ. মজিদ খান), চুন্নু খান (পিতা লিয়াকত খান), আজিজ রহমান খান (পিতা লিয়াকত খান), ফজলু খান (পিতা লিয়াকত খান), নাজির খান (পিতা আহমদ খান), হাবিব খান (পিতা সুন্দর খান), আইস আলী খান (পিতা ইয়াসিন খান), ঈশা খান (পিতা ইলিয়াস খান), আব্দুল হক খান (পিতা মজলিশ খান), ইস্কান্দর খান (পিতা মজলিশ খান), বাচ্চু চৌধুরী (পিতা সন্তু চৌধুরী), হাবিব চৌধুরী (পিতা মনাফ চৌধুরী), তারা ভূঞা (পিতা কেনু ভূঞা), আরজু ভূঞা (পিতা কেনু ভূঞা) ও ধনু ফকির। [ফারজানা আহমেদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড