You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযুদ্ধে সাদুল্লাপুর উপজেলা (গাইবান্ধা) - সংগ্রামের নোটবুক

মুক্তিযুদ্ধে সাদুল্লাপুর উপজেলা (গাইবান্ধা)

সাদুল্লাপুর উপজেলা (গাইবান্ধা) গাইবান্ধা মহকুমা শহরের সবচেয়ে নিকটবর্তী। এ কারণে শহরের রাজনৈতিক ঘটনাবলি ও আন্দোলন-সংগ্রামের খবরাখবর দ্রুত সাদুল্লাপুরে চলে আসত এবং রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা সেসবের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়তেন। অনেকে আবার মহকুমা শহরে থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতেন এবং গাইবান্ধা কলেজে ছাত্র রাজনীতি করতেন। ১৯৫২ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি নলডাঙ্গায় আহমদ আলীর সভাপতিত্বে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পক্ষে বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। নলডাঙ্গার আব্দুল খালেক সরকার ভাষা- আন্দোলন-এ সক্রিয় ভূমিকা রাখায় কারাভোগ করেন এবং নির্যাতনের ফলে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে এ থানায় যুক্তফ্রন্ট প্রার্থী বিজয়ী হন। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ৬-দফা ও ১১-দফা আন্দোলনে গাইবান্ধা কলেজে অধ্যয়নরত এ থানার অনেক শিক্ষার্থী সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান-এর সময় সাদুল্লাপুর থানা সদর ও নলডাঙ্গায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে সুন্দরগঞ্জ ও সাদুল্লাপুর থানা নিয়ে গঠিত জাতীয় পরিষদ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবু সোলায়মান মণ্ডল এবং প্রাদেশিক পরিষদ আসনে আবু তালেব মিয়া নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের ১লা মার্চ পূর্বঘোষিত জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করা হলে পূর্ব বাংলায় গণবিস্ফোরণ ঘটে। সাদুল্লাপুর থানার বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন-এর সকল কর্মসূচি স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালিত হয়। ছাত্র-যুবকরা মুক্তিসংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এসময় আবু তালেব মিয়া এমপিএ-কে আহ্বায়ক করে থানা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। পরিষদের সদস্যরা ছিলেন মজিবর রহমান মাস্টার, আব্দুস ছালাম মাস্টার, সৈয়দ আকরাম আলী, আব্দুল হাকিম, আসাদুজ্জামান খান (ফাঁকা মিয়া), আব্দুল মাজেদ খন্দকার, আব্দুর রশিদ কন্ট্রাক্টর, আব্দুল কাইয়ুম, আব্দুল জলিল আজমী, সেবু মিয়া, আব্দুল মতিন মিয়া প্রমুখ। গাইবান্ধা কলেজে অধ্যয়নরত সাদুল্লাপুরের ছাত্রলীগ-এর নেতা-কর্মীরা স্থানীয়দের নিয়ে প্রতিদিন মিছিল-সমাবেশ করেন।
সাদুল্লাপুর থানার কামারপাড়া স্কুল মাঠে মার্চ মাস থেকেই স্থানীয় উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রায় ৫০০ যুবককে এখানে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন আনসার কমান্ডার খগের আলী, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের নইম পিএনজি, নাজির উদ্দিন পিএনজি এবং আনসার কমান্ডার নুর আলম। সাদুল্লাপুর হাইস্কুল মাঠে লাঠিসোঁটা হাতে প্রশিক্ষণ দেন আনসার কমান্ডার আব্দুল জলিল আজমী ও শামসুল হুদা প্রামাণিক হিরু। এসব স্থানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা পরবর্তীকালে ভারতের বিভিন্ন ক্যাম্পে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশমাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে অবতীর্ণ হন।
সাদুল্লাপুরে মুক্তিযুদ্ধের সেকশন কমান্ডার ছিলেন মেছের আলী এবং অপারেশন কমান্ডার ছিলেন সাইফুল আলম সাজা। মধ্যমার্চ থেকে স্থানীয় জনগণ বিভিন্নভাবে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে। ১৫ই এপ্রিল রাতে পাকহানাদাররা রংপুর থেকে এসে আংরার ব্রিজে পাহারারত বিদ্রোহী বাঙালি সৈনিকদের ওপর আক্রমণ করে। দীর্ঘসময় ধরে যুদ্ধের পর টিকতে না পেরে হানাদাররা পিছু হটে। মুক্তিবাহিনীর সুবেদার আফতাব শেষরাতে আংরার ব্রিজ ভেঙ্গে দিয়ে তাঁর বাহিনী নিয়ে মাদারগঞ্জ চলে আসেন। সেখানে হাবিলদার মনছুরের নেতৃত্বে একটি প্লাটুন আগে থেকেই অবস্থান করছিল। মাদারগঞ্জে পৌঁছে সুবেদার আফতাব খবর পান যে, পাকসেনাদের একটি বহর শঠিবাড়ি দিয়ে মাদারগঞ্জ হয়ে গাইবান্ধা প্রবেশের জন্য আসছে। এ খবর পেয়ে গাইবান্ধা শহরে প্রাথমিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকরা এবং বিভিন্ন বাহিনী থেকে আসা বাঙালি সেনারা মাদারগঞ্জে গিয়ে হানাদারদের প্রতিরোধ করতে আফতাব বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেন।
১৬ই এপ্রিল গভীর রাতে পাকিস্তানি হানাদাররা বিপুল সংখ্যক কামান ও মর্টারসজ্জিত সাঁজোয়া বহর নিয়ে আংরার ব্রিজে অবস্থান নেয়। ১৬ ও ১৭ই এপ্রিল দুপক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এসময় সাদুল্লাপুরের প্রায় দুহাজার জনতা দা, বল্লম ও লাঠি হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে। যুদ্ধে ২১ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। তাদের ১৭টি রাইফেল ও একটি এলএমজি মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। অবশেষে হানাদাররা পিছিয়ে গিয়ে পলাশবাড়ী হয়ে গাইবান্ধায় প্রবেশ করে। এ-যুদ্ধ আংড়ার ব্রিজ প্রতিরোধ যুদ্ধ নামে পরিচিত।
১৭ই এপ্রিল পাকবাহিনী গাইবান্ধা মহকুমা শহরে প্রবেশ করে গাইবান্ধা স্টেডিয়ামে প্রধান ক্যাম্প স্থাপন করে। ঐদিনই বিপুল শক্তি নিয়ে তারা সাদুল্লাপুর দখল করে এবং সিও অফিস (বর্তমান উপজেলা পরিষদ কার্যালয়)- এ প্রধান ক্যাম্প স্থাপন করে। নলডাঙ্গা ডাকবাংলোতেও তাদের ক্যাম্প ছিল।
পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি গঠনের পর সারাদেশে জেলা, মহকুমা ও থানা পর্যায়েও শান্তি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়। সে মোতাবেক সাদুল্লাপুরেও শান্তি কমিটি গঠিত হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদে এ থানায় জামায়াতে ইসলামী দলের প্রার্থী সাদুল্লাপুর হাইস্কুলের শিক্ষক মওলানা তোফাজ্জল হোসেনকে চেয়ারম্যান করে থানা শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে সবাই “পিচ কমিটি’ এবং এর সদস্যদের দালাল হিসেবেই জানত। পিচ কমিটির সদস্য ছিল খন্দকার তোসাদ্দেক হোসেন (অদু খন্দকার), মজিবর রহমান মিয়া, মনির উদ্দিন, গফুর মুন্সী, দবির উদ্দিন, পল্লী চিকিৎসক আজিজার রহমান (ধনমউন ডাক্তার) প্রমুখ।
সাদুল্লাপুরে সংগঠনগতভাবে জামায়াতে ইসলামী ও মুসলিম লীগ পাকহানাদারদের সক্রিয় সহযোগী ছিল। অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন, নারীনির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এদের যারা যুক্ত ছিল, তারা হচ্ছে- ফকর মুন্সি, নীল মিয়া, এছাহাক মুসি, খোদাবকস্ আকন্দ, আজিজার রহমান (ধনমউন ডাক্তার), অছিম উদ্দিন দফাদার, আছির উদ্দিন, তছলিম উদ্দিন মওলানা, জয়নাল ডাকাত, ভোলা খাঁ, দারোগা শহিদুজ্জামান, আব্দুল কুদ্দুস ফকির প্রমুখ।
সাদুল্লাপুর থানায় রাজাকারের সংখ্যা ছিল প্রায় একশত। স্বাধীনতার পরপর এদের মধ্যে ৩ জন গ্রেপ্তার হয়। তারা হলো— শ্রীকলার আ. কুদ্দুস, নলডাঙ্গার মকবুল হোসেন এবং গোবিন্দ লাল নাথ।
পাকবাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর দালালরাজাকারদের সহযোগিতায় নারীনির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটায়। তারা বড় দাউদপুরে পুণ্য সরকারের বাড়ি, ইউছুবপুরে পিতাম্বর ডাক্তারের বাড়ি এবং বদলাগড়ীর কয়েকটি হিন্দুবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া জামালপুরের রাজাকার আব্দুল খালেক উপেন ডাক্তারের ঘর এবং সুধারাম সাহার বাড়ি দখল করে। আর দামোদরপুর ইউনিয়নের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান হরিশ চৌধুরীকে থানায় ডেকে নিয়ে গুম করা হয়। এ থানায় অনেক সাধারণ মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়।
হানাদার বাহিনী সিও অফিস ক্যাম্প ও নলডাঙ্গা ডাকবাংলো ক্যাম্প নির্যাতনকেন্দ্র ও বন্দিশিবির হিসেবে ব্যবহার করে।
মহকুমা শহর নিকটবর্তী হওয়ায় এসব ক্যাম্পে যাদের নির্যাতন করা হতো, তাদের গুরুতর অবস্থায় মহকুমার মূল ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়া হতো। সে-কারণে এ থানায় বড় আকারের বধ্যভূমি ও গণকবর নেই। তবে এখানে যাদের হত্যা করা হতো, তাদের সাদুল্লাপুর হাইস্কুল মাঠসংলগ্ন সরোবর নামক স্থানের পাশে মাটিচাপা দেয়া হতো।
সাদুল্লাপুর থানা অপারেশন এ উপজেলার একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১৭ই অক্টোবর পূর্বসিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ অপারেশন চালানো হয়। অপারেশনের কমান্ডার ছিলেন সাইফুল আলম সাজা এবং গোপন তথ্য সংগ্রহকারীর দায়িত্বে ছিলেন ফজলুর রহমান রাজা। পরে আরো ৪০ জন সহযোগীসহ আমিনুল ইসলাম সুজা এঁদের সঙ্গে যোগ দেন। সাইফুল আলম সাজার প্লাটুনে ছিল তিনটি সেকশন, যার নেতৃত্বে ছিলেন সাইদুর রহমান সবুজ (গিদারী), মেছের আলী (সাদুল্লাপুর) এবং দুলা মিয়া (নলডাঙ্গা)। রাত ১২টার পর থানার দক্ষিণে প্রাচীরের পাশে সাজা গ্রুপ অবস্থান নেয়ার সময় থানার সেন্ট্রি টের পেয়ে চিৎকার দিলে সাজা ফায়ার করেন। ১৫ মিনিট দুপক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। পরে সাজা, রাজা ও সুজার গ্রুপ ফায়ার করতে-করতে থানায় ঢুকে সমস্ত অস্ত্র, গোলবারুদ ও মুল্যবান কাগজপত্র নিয়ে চলে যায়। এ ঝটিকা আক্রমণে থানার অবাঙালি পুলিশরা পালিয়ে যায় এবং থানার অস্ত্রাগার থেকে ১৬টি রাইফেল ও ১০টি সিভিল গান মুক্তিযোদ্ধারা হস্তগত করেন। থানা অপারেশনে কালো পোশাকধারী দুজন সৈনিক ও একজন পুলিশ নিহত হলেও মুক্তিযোদ্ধারা সকলে ছিলেন অক্ষত। অপারেশনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন রাজা, সেকেন্দার, তোতা, রহমান, নুরুজ্জামান, ছালামত, সিরাজুল, জহুরুল, সাকোয়াত, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন (নান্দিনা যুদ্ধে শহীদ) প্রমুখ। অপারেশন শেষে ফেরার পথে মুক্তিযোদ্ধারা মহিষবান্দি ঘাটের ব্রিজ থেকে ৪ জন রাজাকারকে অস্ত্রসহ অটক করে নিয়ে যান। সেসময় দুটি রাইফেল তাঁদের হস্তগত হয়। অপারেশনে অংশনেয়া সর্বমোট ৭৫ জন মুক্তিযোদ্ধা নিরাপদে মোল্লারচরে ফিরে যেতে সক্ষম হন। এ অপারেশনের পর কর্তৃপক্ষ সাইফুল আলম সাজাকে কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ দেন। এ কোম্পানিকে ৩টি প্লাটুনে ভাগ করে তিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে কমান্ডারের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ১নং প্লাটুনের দায়িত্ব পান সাইদুর রহমান সবুজ, ২নং প্লাটুনের দায়িত্ব পান বোয়ালীর আবদুল মজিদ এবং ৩নং প্লাটুনের দায়িত্ব পান দিনাজপুর থেকে আগত এক মুক্তিযোদ্ধা। শেষের জনের প্লাটুনের মুক্তিযোদ্ধাদের ৫০ জনের প্রায় সকলেই ছিলেন দিনাজপুরের বিরল থানার অধিবাসী।
৬ই ডিসেম্বর বিকেলে ভারতীয় জেনারেল লছমন সিং-এর নেতৃত্বাধীন ৩৪০ মাউন্ট ব্রিগেডের একটি ট্যাংক বহর বিনা বাধায় সাদুল্লাপুর হয়ে গাইবান্ধা শহরে প্রবেশ করে। তার আগেই পাকহানাদাররা সাদুল্লাপুর ছেড়ে পালিয়ে যায়। তাই ৬ই ডিসেম্বরকে সাদুল্লাপুর হানাদারমুক্ত দিবস হিসেবে ধরা হয়।
সাদুল্লাপুর উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা ছিল ১৬০। তাঁদের মধ্যে ৩ জন শহীদ হন। তাঁরা হলেন মজিবর রহমান (পিতা গোলজার রহমান, বুজরক পাটানোছা, বনগ্রাম), আবুবকর সিদ্দিক (পিতা বছির উদ্দিন মণ্ডল, ঘেগার বাজার, ফরিদপুর) এবং রেজাউল করিম (পিতা আ. জব্বার মাস্টার, রসুলপুর)।
এ উপজেলায় তিনজন নারী মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ‘বীরাঙ্গনা’ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন- ফুলমতি রাণী (সাদুল্লাপুর উত্তরপাড়া), ছাপাতন বেওয়া (জয়েনপুর, সাদুল্লাপুর), মোছা. গেন্দলী মাই (সাদুল্লাপুর; সম্প্রতি প্রয়াত)।
সাদুল্লাপুর উপজেলায় ১৯৯৬ সালে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয় চত্বরে ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ’ এবং ২০০৭ সালে ফরিদপুর ইউনিয়নে শহীদ আবুবকর সিদ্দিক স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। [মাহমুদুল হক মিলন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড