You dont have javascript enabled! Please enable it!

মুক্তিযুদ্ধে সাটুরিয়া উপজেলা (মানিকগঞ্জ)

সাটুরিয়া উপজেলা (মানিকগঞ্জ) ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই রাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা চলে যায় পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে। তারা নানাভাবে বাঙালিদের ওপর শোষণ-অত্যাচার-নিপীড়ন চালাতে থাকে। ১৯৭০ সালে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান দেশে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হন। নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধুর নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিবর্তে ষড়যন্ত্র শুরু করেন। এরূপ পরিস্থিতিতে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে জনতার মহাসমুদ্রে এক ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু প্রত্যেক ঘরে-ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা এবং যার যা-কিছু আছে তা-ই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করার নির্দেশ দিয়ে ঘোষণা করেন “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণা ও নির্দেশনার পরপর সাটুরিয়া উপজেলার জনগণ সম্ভাব্য মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ ও পাকসেনাদের মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে।
মো. দেলোয়ার হোসেন হারিজ (বেংরোয়া), আবুল কাশেম খান (হাজিপুর), যুবনেতা মো. আরশেদ আলী চৌধুরী (হাজিপুর), আফতাব উদ্দিন মাস্টার (ফুকুরহাটি), শামসুদ্দিন আহমেদ শাহনাল (ফুকুরহাটি), ডা. আব্দুল হাকিম (হরগজ) প্রমুখ নেতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জনগণকে উজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ২৬শে মার্চ মধ্যাহ্নে বালিয়াটিতে প্রথম তৈরি হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। এটি তৈরি করেন কুড়িকাহুনিয়ার দর্জি জীবন মোহন মিত্র (মিন্টু মিত্র)।
বালিয়াটি ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হরিদাস সাহার (পরবর্তীতে শহীদ) ছোট ছেলে সমীর প্রসাদ সাহা লক্ষী (পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান) পতাকা তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ২৭শে মার্চ বালিয়াটি পশ্চিম বাড়ির জমিদার জীতেন্দ্র লাল রায়চৌধুরীর নেতৃত্বে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে এক বিরাট মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে জীতেন্দ্র লালের বাড়ির ছাদে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। ২৮শে মার্চ ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোতাহার আলী খান মজলিসের সভাপতিত্বে সাটুরিয়ার উপকণ্ঠে পশ্চিম কাউন্নারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন মো. দেলোয়ার হোসেন হারিজ, প্রফেসর মো. আব্দুল লতিফ (দড়গ্রাম), আবুল কাশেম খান (হাজীপুর), আ খ ম নুরুল হক (হরগজ), আব্দুস ছামাদ, আফতাব উদ্দিন (ফুকুরহাটি), মো. মজিবর রহমান মন্টু (কান্দাপাড়া) প্রমুখ। সভায় প্রত্যেক ইউনিয়নে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ দানের ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরের দিন ২৯শে মার্চ থেকে জীতেন্দ্র লাল রায়চৌধুরী, ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুল আবছার খান বিএসসি, মো. আরশেদ আলী চৌধুরী, শরদিন্দু সাহা মন্টু, মো. ছুরত আলী ও মো. সিরাজুল হকের নেতৃত্বে ছাত্র- যুবকরা বাঁশের লাঠি নিয়ে বালিয়াটি উত্তর মাঠে প্রশিক্ষণ শুরু করে। পরবর্তীতে মোহাম্মদ আলী, দেবব্রত রায়চৌধুরী, সমীর প্রসাদ সাহা, প্রসাদ চক্রবর্তী, নকুল বসাক প্রমুখ ছাত্রনেতা প্রশিক্ষণ কাজে এগিয়ে আসেন। প্রশিক্ষণের সুবিধার্থে দড়গ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এলাহী বক্সের নেতৃত্বে রৌহার চাঁন মিয়া, দড়গ্রামের রমজান মাদবর, শাফুল্লীর মজিদ মোল্লা, হরগজের ডা. মকবুল হোসেন ও আব্দুল আজিজ মোল্লার নিকট থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত কয়েকটি বন্দুক সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে টাঙ্গাইলের খন্দকার আবদুল বাতেনের নেতৃত্বে বাতেন বাহিনী – গঠিত হলে মো. দেলোয়ার হোসেন হারিজ, মো. আরশেদ আলী চৌধুরী ও আ খ ম নুরুল হক তাতে যোগ দেন। দেলোয়ার হোসেন বাতেন বাহিনীর রিক্রুটিং কমান্ডার ও অপারেশন ডাইরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন। উপর্যুক্ত ব্যক্তিবর্গ সাটুরিয়া উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। আর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল খালেক, মো. দেলোয়ার হোসেন হারিজ, মো. আজিজুল হক (বিএলএফ), এলাহী বক্স, আব্দুস সালাম খান (কাদেরিয়া বাহিনী), আবদুর রহমান (হালিম বাহিনীর সেকশন কমান্ডার), বলাই চন্দ্র মণ্ডল (বিএলএফ-এর ডেপুটি কমান্ডার) এবং আজাহার আলী (সেকশন কমান্ডার)।
পাকবাহিনী ১৫ই আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে গাজীখালি নদী দিয়ে লঞ্চযোগে সাটুরিয়ায় প্রবেশ করে এবং সাটুরিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে। এখান থেকেই ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন, চৌহাট ইউনিয়ন, আমতা ইউনিয়ন ও টাঙ্গাইলের নাগরপুরের পাকুটিয়া ইউনিয়নের কিয়দংশসহ সমগ্র সাটুরিয়া থানায় অভিযান পরিচালনা করে। সাটুরিয়ায় স্বাধীনতাবিরোধীদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী (সাটুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও শান্তি কমিটির সদস্য), নাজিমুদ্দিন মুন্সী (চর সাটুরিয়া, শান্তি কমিটির সদস্য), চাঁন মিয়া (পশ্চিম কাউন্নারা, রাজাকার~), আব্দুল আজিজ মোল্লা (হরগজ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও শান্তি কমিটির সদস্য), আব্দুল হালিম মৃধা (হরগজ, শান্তি কমিটির সদস্য), নৈমুদ্দিন মেম্বার (হরগজ, শান্তি কমিটির সদস্য), আনোয়ার হোসেন (কান্দাপাড়া, রাজাকার), আব্দুল আজিজ খান (দড়গ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও শান্তি কমিটির সদস্য), আজিজ মিসির খান (তেঘরি নওগাঁ, শান্তি কমিটির সদস্য), মো. তাজউদ্দিন (তেঘরি নওগাঁ, শান্তি কমিটির সদস্য), ইব্রাহীম (নওগাঁ, রাজাকার), আব্দুল হক (গোপালনগর, বালিয়াটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও শান্তি কমিটির সদস্য), নায়েব আলী মাদবর (হাজিপুর, শান্তি কমিটির সদস্য), আব্দুস সোবহান (বাহা, রাজাকার), মো. মিনহাজ উদ্দিন (ধানকোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও শান্তি কমিটির সদস্য), গফুর আলী সফুর (নয়াডিঙ্গি, রাজাকার), কলিমুদ্দিন (বরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও শান্তি কমিটির সদস্য), মো. মজিবর রহমান (ছনকা, রাজাকার), মো. সাহাবুদ্দিন (তিল্লী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও শান্তি কমিটির সদস্য), আব্দুল হাকিম (চাচিতারা, দিঘলীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও শান্তি কমিটির সদস্য) প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।
এরা পাকবাহিনীর সহায়তায় হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন পৈশাচিক কর্মকাণ্ড চালায়। সাটুরিয়া, বালিয়াটি, খলিলাবাদ, মির্জাপুর, ভাটারা, গাঙ্গুটিয়া (ধামরাই), কমলপুর, পাড়াগ্রাম, হাজিপুর, চর সাটুরিয়া, আমতা, কাউন্নারা ও পূর্ব দিঘলিয়া গ্রামের ৩২ জন নারী- পুরুষকে গুলি ও জবাই করে হত্যা করে। নিহতদের অধিকাংশই ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। তাদের অন্যতম ডা. নরেন্দ্র কুমার ঘোষকে সাটুরিয়া হাসপাতালে গুলি করে হত্যা করা হয়। অন্য শহীদরা হলেন- হরিদাস সাহা (বালিয়াটি), অতুল কৃষ্ণ সাহা (বালিয়াটি), রাধা চরণ ঘোষ (বালিয়াটি), নিতাই চন্দ্র সাহা (বালিয়াটি), কিশোরী লাল বাকালী (খলিলাবাদ, বালিয়াটি), যশোদা লাল বাকালী (খলিলাবাদ, বালিয়াটি), রঙ্গলাল সাহা (মির্জাপুর, টাঙ্গাইল), দ্বিজেন্দ্র কুমার সাহা (মির্জাপুর, টাঙ্গাইল), রথীন্দ্র কুমার সাহা (মির্জাপুর, টাঙ্গাইল), দুলাল চন্দ্র সাহা (মির্জাপুর, টাঙ্গাইল), সুনীল বসাক (ভাটারা, বালিয়াটি), আওলাদ হোসেন (বালিয়াটি), সুধীর রায় (গাঙ্গুটিয়া, ধামরাই), কালু রায় (গাঙ্গুটিয়া, ধামরাই), বিজয় রায় (গাঙ্গুটিয়া, ধামরাই), মৃণাল রায় (গাঙ্গুটিয়া, ধামরাই), মুক্তার আলী (কমলপুর, সাটুরিয়া),কালু মিয়া (পাড়াগ্রাম, সাটুরিয়া), হযরত আলী (হাজিপুর, বনমালিপুর), আভা রাণী ভট্টাচার্য (স্বামী নারায়ণ ভট্টাচার্য, চর সাটুরিয়া; ধর্ষণের পর হত্যা), রণজিৎ কর্মকার (পিতা শম্ভু কর্মকার আমতা, ধামরাই; চোখ উপড়ে তারপর হত্যা), হালিম ফকির (কাউন্নারা, সাটুরিয়া), লক্ষ্মী রাণী সাহা (পিতা মধুসূদন সাহা, বালিয়াটি; ধর্ষণের পর হত্যা), মো. সামসুদ্দিন (হাজিপুর, বনমালিপুর), প্রবল রায়চৌধুরী (বালিয়াটি), মঞ্জু রায়চৌধুরী (বালিয়াটি), জুলেখা বেগম (স্বামী আ. রহমান, পূর্ব দিঘলীয়া; ধর্ষণের পর হত্যা), বলাই কর্মকার (আমতা, ধামরাই), যতীন্দ্র কর্মকার (আমতা, ধামরাই), তারাপদ কর্মকার (আমতা, ধামরাই) এবং মণীন্দ্র সাহা (আমতা, ধামরাই)।
উপজেলার গাঙ্গুটিয়া জমিদার বাড়ি, ধানকোড়া জমিদার বাড়ি, বালিয়াটির গদাই গৌরাঙ্গ মঠসহ সাটুরিয়ার পূর্ব দিঘলীয়া ও পশ্চিম দিঘলীয়ার বেশকিছু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ করা হয় এবং অনেক নারীকে ধর্ষণ করা হয়। সাটুরিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ছিল পাকবাহিনীর নির্যাতনকেন্দ্র ও বন্দিশিবির। এখানে সাটুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামসহ ধামরাইয়ের আমতা ও গাঙ্গুটিয়া গ্রাম থেকে নিরীহ জনসাধারণকে ধরে এনে নির্যাতন করা হতো।
সাটুরিয়া উপজেলায় একটি বধ্যভূমি ও গণকবর আছে
সাটুরিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বধ্যভূমি ও গণকবর। এখানে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনদের ধরে এনে গুলি অথবা জবাই করে হত্যার পর মাটিচাপা দেয়া হতো।
সাটুরিয়া উপজেলায় হালিম বাহিনী নামে একটি স্থানীয় মুক্তিবাহিনী ছিল। এর সংগঠক ছিলেন ঢাকা পশ্চিম অঞ্চলের কমান্ডার ক্যাপ্টেন আব্দুল হালিম চৌধুরী। এছাড়া বাতেন বাহিনী, কাদেরিয়া বাহিনী ও বিএলএফ-ও সক্রিয় ছিল।
সাটুরিয়া উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিক যুদ্ধ হয়। তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো
সাটুরিয়া থানাযুদ্ধ। এ-যুদ্ধ সংঘটিত হয় দুদফায় – ১৪ই আগস্ট এবং ২১শে নভেম্বর। খন্দকার আবদুল বাতেনের নেতৃত্বে প্রথম দিনের যুদ্ধে সাটুরিয়া থানায় অবস্থানরত অবাঙালি পুলিশদের পরাজিত করে মুক্তিযোদ্ধারা থানা দখল করেন। এতে মোহাম্মদ আলী (কুমিল্লা) নামে একজন পুলিশ কন্সস্টেবল নিহত হয় এবং বেশকিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। পরবর্তীতে পাকবাহিনী সাটুরিয়া থানা পুনর্দখল করে এবং বাতেন বাহিনী ২১শে নভেম্বর দ্বিতীয়বার সাটুরিয়া থানা আক্রমণ করে। এ-যুদ্ধে পাকসেনারা পরাজিত হয়ে ঢাকা পালিয়ে যায় এবং সাটুরিয়া উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়। যুদ্ধে টাঙ্গাইলের জিয়ারত আলী নামে এক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
এছাড়া ১৯শে অক্টোবর তিল্লী গ্রামে একটি যুদ্ধ হয়। ১৩ই ডিসেম্বর জাজিরায় একটি যুদ্ধ হয়। টাঙ্গাইল থেকে পলায়নরত পাকবাহিনীর খণ্ড-খণ্ড দল ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। তারই একটি দলের সঙ্গে বাতেন বাহিনীর যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে ভাঙ্গাবাড়ির কিশোর নিজাম উদ্দিন শহীদ হন। একই দিন মানিকগঞ্জ থেকে পলায়নরত ঢাকাগামী পাকসেনাদের সঙ্গে গোলড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের একটি যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে পাকসেনারা পরাজিত হয়ে পালিয়ে যায়।
১৪ই ডিসেম্বর বনমালিপুরে একটি যুদ্ধ হয়। টাঙ্গাইল থেকে পলায়নরত পাকবাহিনীর একটি দল বনমালিপুর গ্রামে প্রবেশ করে হযরত আলী ও সামসুদ্দিনকে গুলি করে হত্যা করে। এ- সময় হালিম বাহিনীর কমান্ডার মঞ্জুর আহমেদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের যুদ্ধে পরাস্ত করে বন্দি করেন। এ- যুদ্ধে মঞ্জুর আহমেদের সহযোদ্ধা ছিলেন বদিউল ইসলাম টিপু, আওলাদ হোসেন, শাজাহান, মো. জালাল উদ্দিন, মো. ছাঈদ প্রমুখ। ২১শে নভেম্বর সাটুরিয়া উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়। সাটুরিয়া উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- আবুল কাশেম খান (পিতা আব্দুস সামাদ খান, হাজীপুর), নিতাই চন্দ্র সাহা (পিতা যুগল চন্দ্র সাহা, গরজানা), জসিম উদ্দিন (পিতা মনির উদ্দিন, হরগজ), জয়নাল আবেদীন (পিতা হাসেন বেপারী, হরগজ), আযাহার মোল্লা (পিতা সওদাগর মোল্লা, হরগজ নয়াপাড়া), জোনাব আলী (পিতা সোবহান মুন্সী, রাইল্যা), আজিজুর রহমান (পিতা সমসের আলী, হাজীপুর), নিজাম উদ্দিন (পিতা রিয়াজ উদ্দিন, ভাঙ্গাবাড়ী), অতুল কৃষ্ণ সাহা (পিতা গোপাল কৃষ্ণ সাহা, বালিয়াটি) এবং আব্দুস সামাদ (পিতা এলাহী শেখ, দিঘলীয়া)।
সাটুরিয়া উপজেলার শহীদদের স্মরণে ১৯৭২ সালের ১লা জানুয়ারি হরগজ শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার প্রশাসনিক চত্বরে (বালিয়াটিতে) মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে একটি স্মৃতিফলক নির্মিত হয়েছে। এছাড়া ২১শে নভেম্বর সাটুরিয়া থানা যুদ্ধে টাঙ্গাইলের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জিয়ারতের নামে সাটুরিয়ার নতুন নাম রাখা হয়েছে জিয়ারত নগর। [সমরেন্দু সাহা লাহোর]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!