সাটুরিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বধ্যভূমি ও গণকবর (মানিকগঞ্জ)
সাটুরিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বধ্যভূমি ও গণকবর (মানিকগঞ্জ) মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলায় অবস্থিত। ১৪ই আগস্ট বাতেন বাহিনীর হাতে সাটুরিয়া থানার পতন হলে ১৫ই আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে পাকবাহিনী গাজীখালী নদী দিয়ে লঞ্চযোগে এসে সাটুরিয়ায় প্রবেশ করে এবং স্থানীয় বিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে। এরপর এ ক্যাম্প থেকে তারা ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন, চৌহাট ইউনিয়ন, আমতা ইউনিয়ন ও টাঙ্গাইলের নাগরপুরের পাকুটিয়া ইউনিয়নের কিয়দংশসহ সমগ্র সাটুরিয়ায় হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন পৈশাচিক কর্মকাণ্ড চালায়। এতে সহযোগিতা করে স্থানীয় দালাল, আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনীর লোকেরা। উল্লিখিত এলাকাগুলো থেকে নিরীহ ও অসহায় মানুষদের ধরে এনে ক্যাম্পের একটি কক্ষে চোখ বেঁধে বন্দি করে রাখত এবং অপর একটি কক্ষে তাদের ওপর নির্যাতন চালাত।
এ উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাশটা ছিল ফাঁকা জায়গা। শুধু টিনের দুটি দোচালা ঘর ছিল – একটি আব্দুল আজিজ মিয়ার এবং অপরটি মনোয়ার হোসেনের। ঐ ফাঁকা জায়গায় একটি পানিশূন্য খালের মধ্যে পাকসেনারা এক বিশাল গর্ত তৈরি করে। ক্যাম্পে বন্দিদের সেখানে এনে গুলি বা জবাই করে হত্যা করা হতো। নারীদের ধর্ষণ শেষে হত্যা করা হতো। কখনো তীব্র নির্যাতনে প্রাণ হারানোদের ঐ গর্তে ফেলা হতো। এভাবে বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য লাশ এখানে মাটিচাপা দেয়া হয়। রাতের বেলা শেয়াল-কুকুরের ডাকাডাকিতে এক বীভৎস পরিবেশের সৃষ্টি হতো। গণকবরের ঐ স্থানটিতে কোনো স্মারকচিহ্ন স্থাপিত হয়নি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে স্থানটি ক্রমাগত সংকীর্ণ হয়ে আসছে। [সমরেন্দু সাহা লাহোর]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড